অনুভূতির তলে ফকফকা চাঁদ জ্বলে আছে
অন্ধকার মাতৃগর্ভ থেকে টেনে আনা মৃত শিশুর মত !
চাঁদকে ঘিরে শোকার্ত জমাট মেঘের কান্না
গলে গলে ঝরে পড়ছে
ভিজিয়ে দিচ্ছে অচেতন পাথরের চোখমুখ;
আর আমি নরম বালিশের উপর আরামসে চেপে আছি বুক
দুঃখ-শোকে অন্ধকারে আজকাল আমি মোটেই
প্রকম্পিত হই না
হিপোক্রেসিকে আপাতত জানলা দিয়ে ছুঁড়ে ফেলে
নির্বিবাদে স্বীকার নিচ্ছি--
সুন্দরের শরীরে কেউ কালিমা লেপুক কিংবা চন্দন মাখুক
আমার কিছুই আসে যায় না ।

বরং দেয়াল ভাল লাগে আমার
ভালো লাগে টিকটিকি হয়ে মশা-শিকার
ক্ষুধার ফাঁদে আটকা পড়া দোয়েলের ছট-ফট;
আর ভালো লাগে গাঞ্জা টেনে রোজ স্মৃতির পঙ্কিলে
ডুবে থাকতে, এথিক্সের চাবুক-পেটায়
রক্ত ঝরাতে ঝরাতে, ক্লান্ত হতে হতে
অবশেষে ঘুমের শাসন মেনে নেয়া বেশ রোমাঞ্চকর ।

ভয়ানক দুঃস্বপ্ন দেখে জেগে উঠলে আজো মা
ঘামে ছুপছুপ কপালে হাত বুলাতে বুলাতে বলেন,
কেন নষ্ট হয়ে গেলি ? কার দোষে
পড়ে রইলি ভ্রষ্ট আঁধারে !
কোল-বালিশের প্রতি বিশেষ আসক্তি আছে বলে
প্রেমিকার আলিঙ্গন পাই নি কতদিন হয়ে গেল;
জীবনটাকে 'জঞ্জাল' ভেবে নির্জন ছাদ থেকে
কতবার চুপে চুপে ছুঁড়ে ফেলে দিতে চেয়েছি
ছুরির ফলার মত পুলসিরাতের তলে !
তবু কেন জানি পারি না, বাঁচবার সাধ হয়
অশ্রুর লবণে আড়ষ্ট ঠোঁটের সামনে
কে জানি ঝুলিয়ে রাখে একগুচ্ছ টসটসা আঙুর ।

ফের চোখ বুজে আসে, ঘাসে ঘাসে
ঘাতকের ছদ্মবেশ ঝেড়ে ফেলে
একে একে প্রকাশিত হতে থাকে প্রজাপতিগুচ্ছ;
আমিও রৌদ্রের ঘরদোর ভেঙেচূরে
ডেকে আনি নির্লিপ্ত ছায়াপুঞ্জ;
অনুভূতির যাবতীয় খনিজ খুঁড়ে খুঁড়ে
অচেতন হয়ে রই এক নগরীতে
ঘুমখুরী পাতাল নগরী !