ঘড়িতে দুপুর ৩টা ১৩—
আমি কী এক তাড়নায় উঠে পড়ি অকস্মাৎ
তোমার প্রেমসিক্ত স্যাঁতসেঁতে একাকী বিছানা ছেড়ে
জানলায় তোমাকে পুনরায় প্রেম নিবেদন করি
ভোরবেলার আদরমাখা হাত নেড়ে;
চৈত্রের ক্লান্তি একটু শান্তির প্রত্যাশায়
ঝিমিয়ে ঝিমিয়ে ঘামে ভিজিয়ে দিচ্ছে
তোমার হাস্যময়ী মুখাবয়ব—
কী অপরূপ অনুভবে স্বর্ণময়ী রোদ্দুর গলে গলে
ঝরে পড়ছে তোমার ভালোবাসার উত্তপ্ত উঠোনে;
প্রণয়ের অবিরাম বাজনা বাজছে ক্ষণে ক্ষণে
আমার দণ্ডয়মান দুকর্ণে!
ঠোঁটে নিস্তব্ধতার নিবিড় বিড়বিড়ানি—
বধূ মধু দাও!
মরুময় হৃদয় আজ চায় শুধু তোমায়—
বধূ মধু দাও!
আমি আসছি পরিপাটি হয়ে তোমার নিকটে
মাত্রই অর্ধপোড়া সিগারেট ছুঁড়ে ফেলেছি
খুব ধীরে ছিঁড়ে নিয়ে একটা লেবুপাতা যত্মে
রেখে দিলাম বুকপকেটে!
আমি আসছি তোমার আলিঙ্গন পাব বলে
আমি আসছি তোমাকে ভেজাতে হীরকজলে—
আড়ষ্টতা ভাঙো, প্রবল প্রেমের দুরন্ত আবেগে
আজ তুমি জাগো— আমি হাসছি তোমার
উজ্জ্বল শ্যামল মুখের দিকে দৃষ্টি ফেলে;
আমি কল্পনায় কতবার— কত কত বার
তোমাকে সাঁজিয়েছে বধূসাঁজে;
মনে মনে প্রতিক্ষণে প্রার্থনায় বলেছি—
বধূ তুমি রাত্রির নিকষ নীলিমায় চাঁদের প্রতিমা
বধূ তুমি ভোরবেলার কলরবরত পাখিদের গান
বধূ তুমি রাত্রি শেষে ফুটফুটে আলোয়
ফুটে থাকা একটা একান্ত ব্যক্তিগত ফুল—
আমি প্রচণ্ড পিপাসায় ঠোঁট মেলে আছি
প্রাণবন্ত শান্ত হৃদয়নদে উঠেছে ঝড়, ভাঙছে দুকূল—
বধূ মধু দাও!
তোমার ঠোঁটের পাপড়িতে জ্বল জ্বল করছে
আমার শীতার্ত হৃদয়লব্ধ প্রণয়ের শিশির—
বধূ মধু দাও!
আমি চেপে ধরেছি তোমার স্পন্দিত অধর—
বধূ মধু দাও!
চুম্বনে চুম্বনে আমি রাঙিয়ে দিলাম
তোমার উড়ন্ত ডানা—
পাখি তুমি ফুল হয়ে যাও!
আমি পালক ছুঁয়ে
তোমাকে আদর করি
পাপড়ির অনুভবে—
বধূ, কবির তৃষ্ণার্ত প্রাণে মধু দাও!
আমি প্রজাপতির উষ্ণ শিহরনে
তোমাকে ছুঁয়ে দিয়েছিলাম ফুটন্তবেলায়;
অবশেষে আজ হয়েছি মৌপিয়াসী ভ্রমর—
বধূ গভীরে ডুবিয়ে দাও তৃষিত কবিকে, আমাকে;
বধূ সব আবরণ খসিয়ে দিলাম
ঘষে ঘষে তুলে ফেলেছি সমস্ত লজ্জা—
বধূ প্রাণের কাছে আসো
বধূ নগ্নতায় মগ্ন হয়ে ভালোবাসো;
মৌ বুকে নিয়ে হও মিষ্টি একটা বউ
প্রেম নিতে পারো যতখুশি চাও—
বধূ হৃদমরুতে তুমি সমুদ্র জাগাও
স্নিগ্ধ শান্ত কিংবা লবণাক্ত জল নয়—
বধূ মধু দাও!