৭.
আমি তো সদা সর্বদা ভেবেছিলাম, আমার ভালোবাসার তীর তোমার লক্ষ্যে অব্যর্থ! অথচ তুমি বুঝিয়ে দিলে, বেদনার নীলে রঙিন প্রেমে এ জীবন যাবে একদিন থেমে! একদিন অশ্রভেজা আঁখিতে নামবে দারুন খরা কিংবা মরুবৃষ্টি। একদিন বুকের খরস্রোতা নদী উপচে বইবে মহাপ্লাবন, তাতে নিঃস্ব হয়ে  ঊর্ধ্বাকাশে নিবদ্ধ হবে আমার শূন্য দৃষ্টি! মহাকালের ঝঞ্ঝায় ঝরে যাবে আমার সকল সৃষ্টি!

আমার সুনীল আকাঙ্ক্ষার তীর তোমার সুকঠিন প্রাচীর ভেদ করতে পারি নি বলে তুমি কি জয়োল্লাস করেছিলে কখনো? আমি যেদিন জেনেছি ভালোবাসার ছদ্মবেশে আমার সঙ্গে তুমি চালাচ্ছো ছায়াযুদ্ধ— সেদিন, ঠিক সেই মুহূর্তে আমি আত্মসমর্পণ করেছি তোমার পদতলে আমার পৌরষকে রেখে। আমার ভালোবসার স্বাদ তুমি কি কখনো দেখেছিলে ছেঁকে?

আমি আর কতবার বলব, হে প্রেমময়ী নারী, আমি নই কোনো প্রেম-শিকারী! আমি শুধুই এক অতি সাধারণ কপর্দকহীন প্রেমিক। যে ভালোবাসতে পারে নাই কখনো তোমারে যুক্তিতে বুদ্ধিতে! আমি সেই প্রেমিক, যে তোমাকে নিদারুন গ্রীষ্মে দুফোঁটা শীতল বৃষ্টি পারে নি দিতে! যে তোমার বুকে জাগাতে পারে নি সোনালি আগুনঝরা কৃষ্ণাচূড়াময় রক্তিম ফাগুন সুতীব্র শীতে!

তুমি বলেছিলে, আমার কবিতা সুনীল গাঙ্গুলির চেয়েও বেশি রোমান্টিক! এটা শুনে আমি তোমার বুকের তলদেশে খুঁজতে যাই নি, বয়ে যাচ্ছে কিনা অনাদিকাল থেকে কোনো 'হিমযুগ'! আমি আজন্ম জেনে আসছি, আমার কপালে সয় না অতিসুখ! আমাদের বড় ভাবীর রূপে বিমুগ্ধ অন্ধ হয়ে তুমি বলেছিলে, ওনাকে লাগে 'মডেল' 'মডেল'। তুমি কি জানো, মডেলের মত দেখতে নারীরাই সাধরণত হয় অতিমাত্রায় আঁতেল! তুমি কি জানো হে ছলনাময়ী নারী, তুমি পদতলে মাড়িয়ে বীরদর্পে চলে গেছো জেনেও আমি আজো তোমাকে ভাবি না হত্যাকারী!

তুমি মেঘনার ওপারের আলো নও আজ আর! শুধু ব্যর্থ নয়— মৃত হয়ে গেছে প্রিয় 'ভালোবাসা' তোমার আমার! তোমার বুকের পিপাসায় আমি ফিরব না, আমি ফিরব না আবার, আমি ফিরব না দ্বিতীয়বার,  আমি ফিরব না পুনর্বার, আমি ফিরব না কখনো কোনোদিনও আর!

(সমাপ্ত)