নীলা: কেমন আছো কবি ?
কবি: এইতো আছি, বেঁচে আছি সেটাই বা মন্দ কিসে।
নীলা: এভাবে কেন বলছো ? তুমি তো কবি। কবিরা কি কখনো ভেঙে পরে ? আর জীবন মানে কী শুধুই বেঁচে থাকা ?
কবি: না, শুধু বেঁচে থাকার নাম জীবন নয়। জীবন মানে প্রেম,বিরহ,সুখ,দু:খ,আনন্দ,কষ্ট এবং পরিবার ও প্রিয়জন।
নীলা: তাহলে তুমি কেন আজও পরিবার থেকে পালিয়ে বেড়াও ?
সভ্য মানুষের জীবন ফেলে উদ্দেশ্যহীন ঘুরে বেড়াও ?
কবি: আমার এই নীড় ভাঙা পাখির মতো লক্ষ্যহীন উড়ে বেড়ানো, অথবা শরতের মেঘের মতো এখানে সেখানে ঠিকানা বিহীন ছুটে চলা, সে-তো তোমার-ই জন্য। এ দায় তোমাকেই নিতে হবে নীলা?
নীলা: কালবৈশাখী ঝড়ের রাতে দূর্বল গাছটিই সবার আগে ভেঙে পরে। আমি সেই দূর্বল গাছ।
আমাকে দোষ দেওয়া খুব সোজা। কিন্তু আমাকে বুঝতে পারাটা কঠিন, সত্যিই কঠিন।
কবি: যার বিরহে আমার এই হৃদয় বাগানে প্রেমের বৃষ্টি হয় না বহুদিন। ফুল বাগানে ফোটে না কোন ফুল, পাখিরা গায় না গান।
যদি তাকেই না বুঝি তবে কিসের এত মান অভিমান ?
নীলা: যদি সত্যিই আমাকে বোঝ তবে আবার হাত দুটি ধরো। ভাসিয়ে নিয়ে যাও তোমার প্রেমের মহা সমূদ্রে। যেখানে নেই কোন দু:খ,কষ্ট, নেই কোন হারাবার ভয়।
কবি: কিন্তু ভয় হয়, প্রচন্ড ভয় হয়।
নীলা: কিসের এত ভয় ?
কবি: পেয়ে হারাবার ভয়। যদি আমার এই হৃদয় মঞ্জিল চুরমার করে, আবারও অচিন পাখির মতো উড়ে যাও। আমায় শূন্য করে, আমায় নি:শ্ব করে ?
নীলা: উড়ে যাওয়ার বাসনা মনে আসার আগেই যেন আমার মৃত্যু হয়। আমি তোমার বুকেই মরতে চাই।
কবি:আমি তো তোমার-ই আশায় ভালোবাসায়, চাতক পাখির মতো চেয়ে ছিলাম একশো একটি প্রেমের বাগান সাজিয়ে। তুমি আসবে বলে ভালোবাসবে বলে। তুমি আবারও কাছে এসে ধন্য করো আমায়, পূর্ণ করো আমায়।
নীলা: হে কবি,
আমিও তোমার প্রেমও ডোরে
বেঁচে থাকতে চাই আজীবন ধরে।
কবি: তুমি আমার হৃদয় রাণী, রাখবো বুকে তুলে।
এসো আবার শুরু করি, সকল দু:খ ভুলে।
দুজন মিলে:
চলো হারিয়ে যাই আজ দু'জনায়,
আসবো না আর ঘরে ফিরে।
ঘুরবো বনে পাহাড়ের ঢালে,
থাকবো সাগর-নদী তীরে।