নাহ...... সুর্য হতে চাইনি কখনো
নিজের আলোয় সকলকে আলকিত করার মত
অতো আলো আমার নেই।
চেয়েছিলাম ভোরের আলো ফোটার আগে
ক্ষণিকের তরে জ্বলে ওঠা পুব আকাশের শুকতারাটি হতে
নিজের ক্ষীণ আলোয় নতুন কোন ভোরের
আগমনি বার্তা দিয়েই যার বিদায়।।
জানি জ্যোৎস্না রাতের রুপালি চাঁদ হতে পারব না আমি
রাতের তারারা ভীড় জমাবে না আমার চারপাশে
একাকি নিরজনে আমায় নিয়ে গান গাইবে না
কোন উরবর্শি তরুনি...ওগুলো তোমাদের ই প্রাপ্য
তবে নির্জন ঝোপের মাঝে টিপটিপ করে আপন মনে জ্বলতে থাকা
জোনাকপোকা হতে পারাটাই আমার সার্থকতা।
শীতের ভোরের স্নিগ্ধ রুপালি ঝলমলে রোদ হতে চাইনা
সবার অগোচরে শুকনো ঘাস ফুলের উপর জমে থাকা
এক ফোটা শিশির বিন্দু হতে পারলেই আমি তুষ্ট
যার একটু পরশে প্রান ফিরে পাবে নেতিয়ে থাকা
ধুসর ছোট্ট ঘাস ফুলটি......।।
কোকিলের কুহুতানে সবাইকে বিমোহিত করার মত
সেই মায়াবি কণ্ঠ আমার নেই............
তাইতো বসন্ত কিংবা বৈশাখের প্রথম দিনে রমনার বটমূলে
হয়ত খুজে পাবে না আমায়.........
কিন্তু মোরগের মত দিবসের প্রথম প্রহরে
নিজের জোরাল কর্কশ স্বরে যদি জাগিএ দিতে পারি
কোন ঘুমন্ত মুসাফিরকে...... যে পৃথিবীর মোহে
ভুলে গেছে তার গন্তব্য.................
তবে তাতেই আমি খুজে পাব আমার জীবনের মানে......
প্রবল বেগে ছুটে চলা নদী
কিংবা ঝরনার অবিরত ধারা
নাহ......কোনটাই হতে চাইনা ক্ষুদ্র এ সামর্থে
যদি পারতাম হতে.........
ছেলে হারা কোন মায়ের চোখের অশ্রু
অথবা রাত জাগা সাধকের অনুতাপের উষ্ণ আশু ফোটা...
অতি সাধারণ নগন্ন আমি......
এক ফোটা পানি থেকে সৃষ্টি যার
তাইতো শত চেষ্টায় ও গর্বে উচু হয় না এই আনাড়ি মস্তক
চারিদিকে শত চোখ ধাঁধানো তারার মাঝে জানি ঠাই নেই আমার
তাই কোন জীর্ণ কুটিরের লাজুক মেয়েটির
আঁধার রাতের একমাত্র সম্বল
মাটির প্রদীপ হতে পারাটাই আমার স্বপ্ন...
যে দখিনের উদ্যম বাতাস কিংবা
বৈশাখী ঝড়ের মত্ততা থেকে
প্রদীপটি আগলে রাখবে নিজের বুকের আরালে...
নিজের কাজল ভেজা চোখের জলেই
জ্বালিয়ে রাখবে সেই নিভু নিভু প্রদিপকে ...।।
জীবন ছোট...... সেই সাথে সপ্ন আর আশা গুলোও
বিহানে ঘরে ফেরা পাখির মত
দিগন্ত রেখায় যেদিন মিলিয়ে যাবে আমার অস্তিত্ব
সেদিন ক্ষুদ্র এই মানুষটিকে তাই খুঁজো
ক্ষুদ্র তার কাজের মাঝে
হয়ত এভাবেই তোমাদের দ্বারে ফিরে আসব
কাক ডাকা ভোরে... বারে বারে............।।