(শয্যাশায়ী আমার এক বন্ধুকে...)

বন্ধু তোর জন্য-    
কী করা উচিত জানি না সঠিক,  
তাই এক ভয়ানক অসহায়ত্ব আমাকে    
জাপটে ধরেছে।  
তোর শিয়রে ছিলাম বসে কিছু ক্ষণ
অসহ্য নৈঃশব্দ্য ঘিরে ছিল আমাদের,  
অধোমুখে তোকে অমন করুণ উপবিষ্ট দেখে    
কী বলি, কীভাবে বলি অনেক ভেবেও মাথায় আসেনি কিছু।    
বরং নিজের এ আপাত দৈহিক সুস্থতা যেন
এক অব্যক্ত অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছিলো;      
নিজের সুস্থতা যে বস্তুত
এক ধরনের অপরাধ হতে পারে  
একটু স্বস্তির জন্য তোর অমন আকুতি দেখে
আজ বুঝলাম।  
ঐ অখণ্ড নৈঃশব্দ্যের মাঝে  
তোর দিকে চেয়ে
কখন পুরনো দিনে ফিরে গেছি বুঝতে পারিনি-  
তোর সেই উজ্জ্বল চোখের অন্তর্ভেদী দৃষ্টি
ঋজু ভঙ্গিতে দাঁড়ানো, গোঁফের ঢালুতে লেগে
থাকা অন্তহীন হাসি ছিল সৌন্দর্যের এক দৃশ্যমান সংজ্ঞা,      
যা দেখে যে কোন তরুণীর হৃদকম্পন ত্বরিত বেড়ে যেত-  
জানিস, তখন বড্ড হিংসে হতো তোকে!    
সৌন্দর্য ও বহুবিধ গুন
তোকে ঋদ্ধ করেছিলো অকৃপণভাবে।  
রাজনৈতিক সঙ্কটে তোর মেধাবী সিদ্ধান্ত
শেষ পর্যন্ত সন্দেহাতীত সঠিক হয়েছে বারবার।    
তুই বন্ধু ছিলি, ভালো বন্ধু
তোর মেধা, ব্যক্তিত্ব ও সাফল্যের আলোকছটা  
কখন অনন্য-সাধারন করে তোকে    
আমাদের থেকে অনেক উঁচুতে তুলে দিয়েছিলো
বুঝতে পারিনি।
সাফল্যের সবটুকু আলো তোকে ঘিরে ছিল বলে      
আমাদের বুকের ভেতর
এক ধরনের কষ্ট হত, ঈর্ষাময় সেই কষ্ট।
  
বন্ধু! তোর এমন বিষাদময় মুখ, ক্লান্ত চোখ  
একদম দেখতে চাই না,    
বন্ধু তুই পুনরায় বিবেকানন্দের মত বুকে হাত বেঁধে
ঋজু ভঙ্গিতে উঠে দাঁড়া আমাদের মাঝে
অপলক চোখে সবাই দেখুক তোকে-  
আর আমাদের বুকে ফের
ঈর্ষা ও ব্যথার সূক্ষ্ম স্রোত বয়ে যাক।