সভ্যতার এ ক্রান্তিকালে,
ভেবোনা,স্রষ্টার ভয়ে বিক্ষিপ্ত এ মানষগুলো সত্যিই মানুষ হয়ে গেছে
ভেবোনা, নিমকহারামীর দেউড়ি ভেঙে মানুষগুলো বেরিয়ে এসেছে মানুষের শহরে,
ভেবোনা, সকল ধর্মযুদ্ধ ভুলে সকলেই ছুটে এসেছে সত্য শান্তির পথে।
ভেবোনা, মৃত্যুভয়ে ধনাট্য তার সিন্দুক খুলে বিলিয়ে দিচ্ছে সমস্ত আভরণ অনাথের হাতে,
ভেবোনা, থমকে গেছে  মানুষে মানুষে সকল জুলুম ব্যভিচার অত্যাচার,
ভেবোনা, চূর্ণ হয়ে গেছে মানব মনের সকল দম্ভ হিংসা আর ক্ষমতালিপ্সুতা।
ভেবোনা, এস্টেরয়েডের আঘাতে এখনি চূর্ণ হবে ধরাধাম,
ভেবোনা, দুমুখো মানুষগুলোর প্রাণশুষে নিতে ধেয়ে আসছে রক্তিম সৌর কণিকা,
ভেবোনা, স্রষ্টার হুকুমে এখনি  আসবে কেয়ামত।
তবুও ধেয়ে আসছে মৃত্যু উপত্যকার দুর্গন্ধ বাতাস,
বেওয়ারিশ লাশের ভাগাড়ে জমে উঠেছে শকুনি উম্মাদনা;
ক্রমশই বাড়ছে লাশের মিছিল
বাড়ছে হাহাকার
আত্মচিৎকার
বাড়ছে মানুষ হতে মানুষের দুরত্বের ঘনঘটা।
মৃত্যুভয়ে আজ আতঙ্কিত
গ্রাম গঞ্জ
শহর নগর
মসজিদ মন্দির বিদ্যালয় ব্রোথেল।

তবুও;
এ অস্থির পৃথিবী আবার শান্ত হয়ে যাবে,
শান্ত হয়ে যাবে আমার কথিত সোনার বাংলা।
করোনাতঙ্ক ভুলে মানুষগুলো আবার নেমে আসবে পাথরের শহরে,
আবার ব্যস্ত হবে সভ্যতার চাকা,
রাজনৈতিক কীটগুলো আবার শুষে খাবে জনতার গুদাম,
কাঁচামাংসখেকু ভদ্র শয়তানগুলো গিলে খাবে ষোড়শী মাংস।
মধ্যবিত্তের চাপা আর্তনাদে আবার ভারী হবে মুক্ত বঙ্গাকাশ,
খেটে খাওয়া মানুষগুলোর রক্তশুষে, প্রতিযোগীতায় মত্ত হবে বয়ষ্ক দালান,
ড্রেনের উচ্ছিষ্টে ভীড় করবে নবজাতকের কঙ্কাল,
বড়বাবুর গোদামে ফুপিয়ে বাড়বে মজুত পণ্য
আর ডাস্টবিনে পরে থাকবে বুভুক্ষা লাশ।
আবার মর্গে পচে গলবে ন্যায় বিচারের বাণী,
টেবিলের তলদিয়ে মোটা অংক শুষে নিবে রাজনৈতিক শকুন,
বেকার যুবকের ছেঁড়াচটির ফাঁক দিয়ে ছ্যাঁকা দিবে উত্তপ্ত রাজপথ,
কাপড়ের আঁচলে অনাহারী শিশুটিকে বেঁধে ফুটপাতে ঘুমাবে মা,
বড়লোকের পাজারো চলবে, শ্রমিকের পাঁজর ভেঙে।

আবার মানুষগুলো স্রষ্টাকে ভুলে যাবে,
কালো টাকার পাহাড় গড়ে, মদ জোয়া আর বাঈজী নিয়ে সমেত হবে উকাসের মেলায়।
আবার ধর্ষিতা হবে পাঁচ বছরের শিশু,
বিচারহীন সমাজ নাক ছিঁটকে ঘৃণা করবে তাকে।
আবার গণতন্ত্র মরবে স্বৈরতন্ত্রের মিশিলে,
কসাইখানার মাংসের মতো বিক্রি হবে মানবতা,
সেদিন হয়তো স্রষ্টা রুষ্ট হবে, ভূলুণ্ঠিত করতে মানুষের সমস্ত ক্ষমতা।

-