সেই কিশোর বেলার কথা মনেপড়ে যায়,
হায় ! বরষার দিনে,
কিশোর বেলায়,
থৈ থৈ জল,পথে ঘাটে মাঠে,
কর্দমাক্ত পিচ্ছিলতায়,
পূর্ণ ছিল বাটে।
এদিক ওদিক,যেদিকেই যাই,
শুভ্রজলের খেলা বিনে,যেন কিছুই নাই।
একাকার হয়ে যেত সব,
বরষার নীরে,
মাঝে মাঝে আমন ধান,
জাগাতো মাথা নেড়ে।
মাঠে মাঠে ব্যাঙের,লাফালাফি কোলাহল,
সরুপথে ক্ষীণস্রোতে,
দারকিনার দল।
বিল হতে ডাঙায় আসতো,পুঁটি মাছের ঝাঁক,
বাঁশঝাড়ের ঘন ঝোঁপে,
ভেঁজা শিয়ালের হাঁক।
এক পসরা দু'পসরা,অনবরত বৃষ্টি ঝরে,
পথের ধারে নালা কেঁটে,
ছেঁড়া একটু জাল এঁটে,
উজানো ছোটমাছ, ধরতাম মজা করে।
বৃষ্টি ঝরত টাপুর টুপুর,
এক পসরা, দু' পসরা করে,
এমনো দিনে,কিশোর মন, থাকত না আর ঘরে।
ব্যাঙের মত লাফালাফি করতাম,
বরষার জলে,
বিলে যেতাম,কলাগাছ কাঁধে বন্ধুরা সব মিলে।
কাদামাখা ঘোলাজলে,
খেলতাম মাখামাখি,
পুকুরের গলাজলে,ডিগবাজি আর লাফালাফি।
ছ্যাতলা পরা,পুকুরপাড়ে,
কতই মজা করতাম,
দৌড়ে গিয়ে ছ্যাঁচড়া দিয়ে,পুকুরজলে পড়তাম।
পাড়ের ধারালো লালমাটি,
আঁচড়ে দিত উরুখান,
শর্টপ্যান্ট ছিঁড়ে যেত,টপটপে রক্ত ঝরত,
তবুও ক্ষিন্ত হত না,
দুরন্ত কিশোর মন।
হাঁটুজলে মাথা চুবিয়ে,পিঠ জাঁগিয়ে দিতাম,
বৃষ্টির ফোঁটা পিঠে পরত,
খই ফুটানোর শব্দহত,
মজা করে শুনতাম।
অঝরে বৃষ্টি ঝরত,সারাটিদিন বিরামহীন,
তিন প্রহরই প্রায়,বৃষ্টিতে ভিজে,
মজাও হত অন্তহীন।
শাপলার ঢ্যাঁপ আর শালুক তুলে,মজাকরে খেতাম,
বন্ধুরা সবে মিলে।
দুপুর গড়িয়ে যেত,পেটে ভীষম ক্ষুধা পেত,
তবুও ক্ষান্ত হত না,
দুরন্ত কিশোর মন,
মায়ের বকাঝকা আর বাবার দৌড়ানি খেতাম,
প্রতিদিনই, প্রতিক্ষণ।
কাদাযুক্ত মাঠে,ফুটবল নিয়ে,কত গড়াগড়ি,
কতবার যে মূর্তি হয়ে,
ফিরেছি বাড়ি।
কত বকা খেয়েছি অন্ত নেই তার,
সর্দার ছিলেম বলে,
বৃষ্টিতে ভিজে,কারো জ্বর এলে,আমিই খেতাম মার।
তবুও থেমে থাকত না মোদের,
বরষার আয়োজন,
আজকে সবই হারাতে বসেছি,
কেঁদে ওঠে তাই মন।
------০-----
রচনাকালঃ১২/০৮/২০১৪ ইং