মা,
এখনো মোর,কান টেনে টেনে মলে,আসরে বলে,
"তোর ছেলেবেলার সেই দুষ্টুমী,
আজও গেল না "।
আমারও অনেকটা মনে পরে,সত্যিই বেশ দুষ্টু ছিলাম।
বেশ মোটাসোটা আর বড্ড,
পাজিও ছিলাম বটে।
কেউ ই রেহায় পেতোনা,মোর দুষ্টুমী থেকে।
বৃদ্ধা দাদীটাকে ই বেশী
জ্বালাতাম।
বাড়ির পাশেই ছিল,পাড়হীন ভয়ংকর মেটো কূপ।
সুযোগ পেলেই, তার চারিধারে
দৌড়াতাম।
দেখে সবার গা ভয়ে শিহরিয়ে উঠতো,
যদি কূপে পড়ে যাই,সেজন্যে
কেহ ধরতে যেত না।
মা চুপিচুপি গিয়ে,খপ করে ধরে,টেনে হিঁচড়ে আনিতো।
বাবা দিলেন, কূপের ধারে শক্ত
বাঁশের বেড়া।
তবুও থামতো না দুষ্টুমী, বাঁশের সেই বেড়া ধরে,
বাঁদরের মত ঝুলতাম।
আর দাদী ;
রোদে ধান শুতাতে দিলে,ভাঙ্গা থালায় ভর্তি করে,
লুকিয়ে লুকিয়ে,কূপের জলে,
ফেলতাম।
দাদী,ক্ষুব্দ হয়ে, কানে ধরে,বাঁশের খাঁচায় বন্দি করতো।
বহু কান্না করেও,মিলিত না
মুক্তি।
তারপর প্রচন্ডরোষে, বাঁশের খাঁচাটি উপড়ে দিয়েই,
প্রাণপনে ভূঁ দৌড়।
আর,
ছোট ছোট মুরগীছানা পেলেই, ধরে এনে
কাঁমড়িয়ে জখম করে
দিতাম।
বিড়ালছানার লেজটি,রশিতে বেঁধে গাছের ডালে
ঝুলিয়ে রাখতাম।
কোথাও,
কারো বাড়িতে, শিম,লাউয়ের কঁচি গাছ পেলে,
লুকিয়ে গিয়ে, উপড়ে
দিতাম।
আরও একটু বড় হলাম,বাবা স্কুলে পাঠালেন,
সেখানেও দুষ্টুমী গেল না!
তবুও ফেল করি নি।
কার বাগানে, কখন কি ফল পাকঁলো, তার হিসেব
ছিলো আমার
মাথায়।
আম,জাম,লিচু, পেয়ারা, কুল আর জামরুল ,
যা ই হোক না কেন,পাকঁলেই,
আমার পেটে!
সীমাহীন দুষ্টুমীতে,অতিষ্ঠ করে রাখতাম গ্রামটি।
আজ কত বছর পরও,ভুলিনি
সেই স্মৃতিগুলো,
ভুলিনি সেই গ্রামটি, ভুলিনি সেই দুষ্টুমীতে ভরা,
আমার ছেলেবেলা।
"""""""যবণিকা '''''''''"''
রচনাকালঃ০৫ /০৮/২০১৪ ইং
হলুদিয়া,
মধুপুর,টাংগাইল।