তোমাদের এ সভ্যতা থেকে কয়েক আলোকবর্ষ দূরত্বে , আমার একটা শহর আছে,
প্রায় দেড়শো কোটি বছর আগের পুরানো এক অসভ্য শহর!
সেখানে আছে, আমার এক নিজস্ব স্বাধীনসত্তা,
আছে জীর্ণ দালান কোঠায় ছোপ ছোপ ছাত্রাক আর কলঙ্কের আলপনা।
স্যাঁতস্যাঁতে পিচ্ছল শ্যাওলার এক ভয়ঙ্কর শহর।
এখানে সবিতার কিরণ আজো পড়েনি,
বিদঘুটে নিশিত অন্ধকার চারিদিক।
কতক ক্যাকটাস আর লজ্জাপতীর কাঁটাঝোপ এখানে সেখানে।
কিছু রঙ্গন আর বাগানবিলাস ফুটে আছে অস্পষ্ট শুভ্র,
বহুকাল অসূর্যম্পশ্যা বলে লাল হতে পারেনি।
এ শহরের ইট শুরকি আর সুউচ্চ ভবনগুলো এখনো জীবন্ত,
ভাঙা টবেএকটি মলিন গোলাপ নুয়ে আছে দুই কোটি বছর ধরে,
কালের স্বাক্ষী হয়ে দুই জনমের কষ্ট নিয়ে।
এই তো, মাত্র দুইশো বছর আগে সীলগালা করে দিয়েছি শহরটা।
প্রবেশদ্বারে লিখে দিয়েছি"এ এক অভিশপ্ত শহর,এখানে প্রবেশ নিষেধ"।
এখানে বসন্ত আসে, ফুল ফোঁটে না,
মরা ডালে বসে কাক ডাকার মতো অভিমানে কেঁদে যায় বসন্তেরা।
একদিন, পথভুলে এক মোহিনী পিক বসেছিল পয়লেস্তরহীন ভগ্ন ইমারত চূড়ায়।
বলেছিল সে, পুর্ণিমার শশী হবে,
ভালবাসার দ্যূতিতে তমস্যকালো মুছে দিয়ে গড়ে তুলবে অমরাবতী।
আমি বলেছিলাম, তুমি ক্ষত বিক্ষত হবে ক্যাকটাসের কাঁটায়,
পাগলীটায় মানে নি।
নুয়েপরা গোলাপ টবে অকাজে জল ঢেলেছে অর্ধযুগ কিন্তু ফুল ফোটেনি।
অতঃপর, অভিমানে ছুটেছে অন্যগ্রহে।
সেই থেকেই সীলগালা।
চিরচেনা অন্ধকারে, আলোক আলোকবর্ষ দূরে আমার একটা শহর আছে।