প্রতিদান


কলম হাতে এক অন্ধকার রাতে, আমি স্তব্ধ হয়ে বসেছিলাম।
মাথাভর্তি শব্দ ছিলো, কিন্তু কলম থেকে অনেক চেষ্টার পরেও কথা বের করতে পারছিলাম না।
রাতের অন্ধকার ক্রমেই বেরে যাচ্ছিলো।
কলমের কালি ক্রমেই ফুরিয়ে আসছিলো।
মনে হচ্ছিলো জীবনের সমস্ত কালি বোধ হয় এখনই ফুরিয়ে যাবে।
তখন মনে হচ্ছিলো শেষ বারের মত কিছু কথা বলতে পারলে হৃদয়টা মলিন হত,
কিন্তু আমার কলম সেদিন বোবা হয়ে গিয়েছিলো,
একটা শব্দও বলতে পারছিলো না।
অথচ একসময়ে এই কলম অনর্গল কথা বলত।

টেবিলের নিচে তাকিয়ে দেখলাম কুচি কুচি হওয়া বেশ কিছু কাগজ পরে আছে। সেই কাগজের প্রত্যেকটাতেই, তোমায় নিয়ে লেখা কবিতাদের বসবাস ছিলো।
সব কবিতাদের ছিরে ফেলা হয়েছে।
কে ছিরেছে বলতে পারবনা, হয়ত আমি নিজেই ছিরেছি।
অনেক কষ্টে কাগজের মায়া ছাড়িয়ে উঠে গেলাম ঘুমানোর জন্য।

বিছানায় শোয়ার পর দেখলাম আমার চোখ থেকে কলমের কালির মত শব্দ বেরোচ্ছে।
কোনোভাবে থামানো যাচ্ছে না।
অশ্রুর মত করে চোখের শব্দগুলো ঝড়তে থাকলো সারারাত। সেই শব্দের তীব্রতায় বালিসের রঙ পর্যন্ত পরিবর্তন হয়ে গেল।  
সেদিন আমার চোখ থেকে বের হওয়া শব্দেরা একটা কথা বারবার বলছিলো, এই অশ্রুসিক্ত রাতের প্রতিদান তোমাকে দিতে হবে।


কাব্যগ্রন্থ- নক্ষত্রের ক্ষত