যাত্রীবাহী একটা বাসে চড়ে বসলাম। আশেপাশে তাকিয়ে দেখলাম আমার মত আরও অনেক যাত্রী এখানে বসে আছে। সবার মুখ বেশ রঙিন।
নানান বর্নের যাত্রীতে এই বাস পরিপূর্ণ, লোকমুখে শুনলাম আমার আগে অনেকেই এই বাসের যাত্রী ছিলো। আরও অনেকে যাত্রী হিসেবে আসবে। যারা চলে গিয়েছে তাদের অনেকের অস্ত্বিত্ব এখন আর নেই। অনেকের হয়ত থাকবেও না।

আপনি থেকে তুমি, তুমি থেকে তুই, তুই থেকে সে, সব শ্রেনীর লোকেরাই এই বাসে যাতায়াত করে, এই বাসের আকৃতি গোলাকার এবং বাসের গন্তব্য শহরের অলিগলি থেকে অনেক দূরে। এর সঠিক গন্তব্য কোথায় তা কেউ জানেনা। অনেকে ভাবে এই বাসের কোনো গন্তব্যই নেই। সবাই জানে ছায়াপথ নামক এক অনন্ত যাত্রাপথে এই বাস চলে। কিন্তু কেউ এটা জানেনা এই বাসটির চালক কে। অনেকে মনে করে এই বাসের কোনো চালক নেই, চালকবিহীন এই যানটি সড়কপথে ঘুড়ে বেরায়। এই চলতিপথে অনেক যাত্রী অংশ নেয়। অনেকে অংশ ছেরে চলে যায়। অনেকে অংশ নিতে নিতে ঝরে যায়।
বাস থেকে নেমে কোন গন্তব্যে যাবে তা নিয়ে এখানে কেউ ভাবেনা। অনেকে মনে করে এরপরে আর কোনো গন্তব্য নেই। যাত্রীরা চায় অনন্তকাল এই বাসে থাকতে।  অনেকে বাস থেকে নামতেই চায়না। পরবর্তীতে জোর করে অনির্দিষ্ট কিছু গন্তব্যে তাদের নামিয়ে দেয়া হয়।
বাসে চড়ে বসা ও গন্তব্যে নামিয়ে দেয়ার মধ্যবর্তী সময়ের নাম চলতিপথ। যাত্রীদের স্মৃতির শুরু থেকে শেষ সব এই চলতিপথেই সীমাবদ্ধ।  
চলতিপথের সময়টুকুর আবার অনেক নাম আছে। কেউ বলে ইহলোক। কেউ বলে জীবন।
এ যেনো 'জীবন মানে এক অনন্ত বাস যাত্রা'