যখন আমি মরে যাব তখন কি এই পৃথিবী আমায় মনে করবে? নাকি সে নিজের মত চলতে থাকবে?
যেই তাঁরাগুলো সন্ধে হলে রোজ আমার সঙ্গে গল্প করতো আমার মৃত্যুর পর সেই তাঁরাগুলো কি আমায় ভুলে যাবে? আকাশের যেই চাঁদটা আমায় ছাড়া কিছু বুঝত না, আমার মৃত্যুর পর সে কি আমায় ভেবে মন খারাপ করে মেঘের পেছনে আড়াল হয়ে থাকবে?
যেই অঞ্চলে আমি শৈশব থেকে কৈশর, কৈশর থেকে যৌবনকাল পার করেছিলাম, সেই অঞ্চলের কাদামাটি কি হাজার মানুষের পদচিহ্নের মাঝে আমার অনুপস্থিতি টের পাবে?
মৃত্যুর পর যদি ফিরে আসা যেত তাহলে হয়তো জানতে পারতাম আমায় ছাড়া পৃথিবী কেমন করে চলছে।
ফিরে এলে হয়ত দেখতাম এ পৃথিবী আমায় ছাড়া একবিন্দু থেমে নেই। আমার থাকা না থাকায় মহাবিশ্বের কিছু যায় আসে না। সে তার গতিতে চলছে, আমি মরে যাওয়ার পরেও সূর্য দিব্যি আলো দিয়ে যাবে, চাঁদ উদিত হয়ে লাবণ্য ছড়াবে, তাঁরা মিটিমিটি করে জ্বলবে, সব কিছুই স্বাভাবিক ভঙ্গিতে চলবে যেনো আমি এই পৃথিবীর কেউ ছিলামই না।
আমি ভাবতাম আমি এই পৃথিবীর বাসিন্দা, এটাই আমার গন্তব্য, ভুলে গিয়েছিলাম এই পৃথিবীতে আমি এসেছি শুধুই ভ্রমনের জন্য। এখানে বসবাস করা আমার উদ্যেশ্য ছিল না। এখানে আমি শুধুই একজন অংশীদার মাত্র, যার অস্ত্বিত্ব শুধুই অংশগ্রহণ করা।
পৃথিবী আসলেই একঘেয়ে, সে কারও জন্য অপেক্ষা করতে চায় না। পৃথিবী হচ্ছে মহা সড়কে চলমান বাসের মত, যে কোনো নির্দিষ্ট যাত্রীর জন্য অপেক্ষা করে না। তার লেনাদেনা শুধুই যাত্রী নিয়ে, কোনো না কোনো যাত্রী দিয়ে তার শুন্যস্থান সে পূরন করে নেবেই।