আমার ঘরের রংচটা পুরনো মেঝেটায়-
আজকাল রোজ ঝাঁট দেওয়া হয়,
সপ্তাহে একদিন নিয়ম করে মোছা হয়,
এলোমেলো কাপড়গুলোকে গোছানো হয়;
ময়লা হলে তা ধোয়াও হয় নিয়মিত।
সে'সব আমিই করি।
পরিষ্কার আয়নাটা'র সামনে দাঁড়াতেই-
একজন ভগ্নপ্রায় ছিপছিপে যুবকের
প্রতিচ্ছায়া দেখতে পাই।
এই নগরবাসীরা যাকে নিরেট মানুষ ব'লে চেনে;
তাঁদের কেউ কেউ তাকে সম্মান করে;
কেউ আবার হিংসায় পথে কাঁটা বিছিয়ে দেয়।
আমি ঘরের ভিতর থেকেই-
পাথুরে দৃষ্টিতে তাঁদের সবাইকেই দেখে যাই।
এই ঘরের দেয়ালে এখন আঁকা থাকে
প্রাণহীন স্বপ্নের ভিন্ন ভিন্ন অবয়ব;
মোহঘোরে নিমগ্ন বিপুল অভিপ্রায়।
অথচ একসময় এই ঘরটাতেই ছিলো
একজন উদভ্রান্ত মানুষের বাস।
যে একদিন বৃষ্টি হতে চেয়েছিলো;
শারদীয় জ্যোৎস্না, ভোরের শিশির, সমুদ্রের ঢেউ
কিংবা পানকৌড়ি হয়ে গলা ডুবিয়ে
বসে থাকতে চেয়েছিলো হিম হিম নদীজলে।
কালান্তক সমস্ত সংলাপ মেনে নিয়ে,
বিষুবের ঠিক মাঝামাঝি দাঁড়িয়ে থেকেও-
সে'সবের কিছুই হতে পারেনি সে।
সেই মানুষটা আজ সন্ধ্যের নীলের মতো
বেমালুম নিভে গ্যাছে কিনা;
নাকি অভিমানে পায়ে হেঁটে চলে গ্যাছে
মাইল মাইল বিদগ্ধ প্রখর মরুপথ।
তা'র খবর আজ আর কেউ রাখেনা; আমিও না।
অথচ সে একদিন বৃষ্টি হতে চেয়েছিলো।