লাল গোলাপটা প্রথম ফুটেছিল যখন,
উল্লাসে মেতে সবাইকে বলেছি তখন।
দেখো, কত সুন্দর দেখতে, আহা কি সুন্দর ঘ্রাণ,
সুবাস ছড়িয়ে গোলাপ জুড়িয়ে দিল সকলের প্রাণ।
সুবাসে মোহিত হবো শুকানো অবধি নিজ থেকে,
ততদিন শুধু দেখবো তাকে ডালের মাঝে রেখে।
নিষ্ঠুরভাবে গোলাপটাকে ছিঁড়ে নিলে এক প্রাতে,
ফুটেনি একটি কাঁটাও তোমার হাতে।
ঝরেনি একটি ফোঁটা রক্ত তোমার দেহ থেকে,
লোভ সামলাতে পারলে না গোলাপটাকে দেখে।
অথচ একটি ফুটন্ত গোলাপের জন্য গাছটির যতœ নিতে,
কতবার রক্তাক্ত করেছি দুটো হাত কাঁটার আঘাতে।
কত যে মায়ায় জড়ানো গোলাপটি ফুটেছে ডালে,
অথচ, আমার আগেই তুমি তার সুবাসটুকো নিলে!
লজ্জার মাথা খেয়ে ইনিয়ে বিনিয়ে এই বলে সান্ত্বনা দিলে,
কিছু মনে করোনিতো গোলাপটা ছিঁড়ে নিয়েছি বলে।
কি বলবো সেদিন, ভাষা ছিল না একটুও মুখে,
বিমূঢ় হয়ে রয়েছি শুধু, মনের ক্ষোভটুকু লুকিয়ে রেখে।
নকল হাসির মাঝে বলেছিলাম মনের কষ্টটুকু মুছে,
তোমার জন্যই হয়তো গোলাপটা এত সুন্দর হয়ে ফুটেছে!
সময়ের কাছ থেকে আমি জানলাম অবশেষে,
ভালোবাসার গোলাপ এখন ভালোমন্দ নির্বিশেষে
হয়ে গেছে, হাটে কিংবা রাস্তার মোড়ে বেচাকেনার পণ্য,
ফুটেই চলেছে কারো কুটিল কামনা মিটানোর জন্য!
গোলাপ আর গোলাপীরা যুগ যুগ ধরে,
এমনি করেই ফুটতে না ফুটতে, কারো নিষ্ঠুর হাতে মরে!
আজো দেখি কত গোলাপ ফুটে আর ঝরে,
ইচ্ছে করেই নেইনি কোন গোলাপের ঘ্রাণ হাত দিয়ে ধরে।
ছিঁড়তে চেয়েছি অনেকবার ফুলদানিতে সাজানো বলে,
পারিনি, অব্যক্ত বেদনায় চোখ দুটো ভরে যায় অশ্রুজলে।
মাঝে মাঝে গোলাপের ডালটা আলতো করে কাছে টেনে,
তুলতুলে গোলাপের পাপড়িগুলোকে বলি কানে কানে।
তোমার মতো হাজারো গোলাপ সুবাস ছড়ানোর আগে,
দিয়েছে জীবন কারো কুটিল কামনার মিথ্যে অনুরাগে!