স্বপ্ন পোড়ার গন্ধ শুকেছ ?
ঐ যে, ডাস্টবিনের পাশে বসা
রুগ্ন শিশুটির স্বপ্ন ।
বেঁচে থাকার মরণপণ লড়াইয়ে
ডাস্টবিনটি ছিল যার বিশাল রাজ্য
সে জিতে নিয়েছে এ রাজ্য জীবনের কাছ থেকে ,
আর রত্নের চেয়েও দামী ছিল তার ঝুলি
সেখানে সে আগলে রাখত তার সম্পত্তি
নিত্যদিন যা সে কুড়িয়ে পেত পথের ধার থেকে।
আমি দেখেছি ওই শিশুটির পুড়ে যাওয়া
রঙ-বেরঙের স্বপ্নের ছাই।
কংক্রিটের জরায়ু থেকে বের হয়ে
দিনপ্রতি কতবার হেটে গেছি ওর পাশ দিয়ে
তবুও হাত রাখিনি ওর কাধে এতটুকু মমতায়,
নিথর হয়ে যাওয়া মস্তিষ্কে পড়ে ছিল
যতটুকু সহানুভূতি, তা শুধুই
আবদ্ধ ছিল কিছু করুণাসূচক শব্দের মাঝে।

শিশুটির কৈশোর-
তখন তার চাওয়াটুকু যেন একটু বেড়েছিল
তাই তো করমব্যাস্ত পথচলায়
সে আবার দেখা দিয়েছিলো, বাস বা টেম্পুর
হ্যান্ডেল ধরে ঝুলন্ত অবস্থায় ।
যান্ত্রিক জীবনের কোলাহলে এভাবেই
কেটে যায় তার দিন ।
সকাল,দুপুর আর বিকেল গড়িয়ে
দিনশেষে ক্লান্তিকে সাথে করে নিয়ে
সে এসে দাড়ায়
ফুটপাতের ওই ভাঙ্গা হোটেলে ,
এঁটো এক থালা বাসি খাবারেই তৃপ্ততা পায় সে ।

ওর তারুণ্য-
পৃথিবীতে টিকে থাকার তীব্র তাগিদ
ওকে দিশেহারা করে দেয়
আর ঠিক তখনই আমারা ওকে তুচ্ছ গন্ন করে
ফেলে দেই ভাবনার আস্তাকুড়ে,
অতঃপর শুরু হয় ওর অন্যায়ের পথে যাত্রা।
চুরি, ছিনতাই, আর জঘন্য কাজ হয় ওর জীবিকা,
আর দিনশেষে যখন নিষিদ্ধ পল্লী হয়
তার শান্তির ঠিকানা ,
তখন তা আমাদের চোখে রূপ নেয় ঘেন্নার
ওর প্রতি জমে একবুক তিক্ততা ।

আর যখন জীবনের শেষ-
তখন তার প্রানহীন দেহ পড়ে থাকতে দেখি
রাস্তার ধারে,
সেই মুহূর্তে আবার ফিরে আসে সহানুভূতির
মাঝে আবদ্ধ করুণাসুচক শব্দগুলো।
তবুও বেশ আছি এর মাঝেই
পোড়া স্বপ্নের উটকো গন্ধ গায়ে মেখে
অবিরাম পথ চলায়,
আর মানবতাটুকু হাতের মুঠোয় পুড়ে
সাচ্ছন্দে ভালো থাকায় .....................।


রথী মিতু
৪-৮-২০১৪