মানব সভ্যতার রূপায়ণে কবিতা, সাহিত্য এক অবিচ্ছেদ অংশ। কবিতা, সাহিত্য কালের মহান এক সাক্ষী। মানব মনন, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক। যারা সংস্কৃতি চর্চা করেন, লেখালেখি করেন, কাব্যচর্চা বা গল্প-উপন্যাস লেখেন, তাদের সম্পর্কে আমাদের সমাজে একটি নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি লক্ষ্য করা যায়। স্বাভাবিক কারণেই নুতন ও প্রতিভাবান লেখক এবং শিল্পীরা এতে নিরুৎসাহিত হন। অনেকে এমনও বলেন, কবি বা সাহিত্যিকরা যা লেখেন তা তাদের কল্পনা থেকে লেখেন। কল্পনা কখনো বাস্তব নয়। কল্পনা করে তারা যা লেখেন হুবহু সেই ঘটনাটি হয়তো কখনো ঘটেইনি। ফলে কল্পনা করে যা বলা হয় তা এক ধরনের মিথ্যাচার। কোন মুসলমান মিথ্যা বলতে পারে না, মিথ্যাকে প্রশ্রয় দিতে পারে না। অথবা তাদের অধিকাংশ ভাবনাই যাচ্ছেতাই। বাস্তবতার মিল নেই, তাই এসবের প্রয়োজনও নেই। কিন্তু বাস্তব সত্য হলো, একটি জাতির, বা দেশের ঐতিহ্যের ধারণ ও বাহন হয় এই লেখালেখি, সংস্কৃতি চর্চা, কাব্যচর্চার মাধ্যমে। এমন নেতিবাচক মনোভাব যখন কোন আলেম প্রকাশ করেন তখন শিল্পী-সাহিত্যিকদের মধ্যে স্বাভাবিকভাবেই এ প্রশ্নটি দেখা দেয়, তাহলে কি ইসলাম সাহিত্য সংস্কৃতি চর্চাকে নিরুৎসাহিত করে? প্রশ্নটি নিঃসন্দেহে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও গুরুতর। ফলে সাহিত্য ও সংস্কৃতিচর্চা জায়েজ কিনা, জায়েজ হলে তার সীমারেখা কতটুকু, ইসলাম সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চাকে কতটা গুরুত্ব দেয়, এ বিষয়গুলো সম্পর্কে আমাদের প্রত্যেকেরই একটা স্বচ্ছ ধারণা থাকা দরকার।
ঐতিহাসিকভাবে লেখালেখির গুরুত্ব রয়েছে- এটি শুধু বর্তমানের জন্য প্রয়োজন নয়, মানব সৃষ্টির শুরু থেকে পৃথিবীর শেষ দিন পর্যন্ত এর প্রয়োজনীয়তা একই ভাবে বজায় থাকবে। তবে লিখলিখি হতে হবে সুন্দর ও সত্যের পক্ষে। ইসলামের দৃষ্টিতে কবিতা, সাহিত্য দু’ধরনের- একটি সত্য ও সুন্দরের পথ প্রদর্শক, অপরটি মানব সভ্যাতার জন্য ধ্বংসাত্মক, অকল্যাণকর, কুরুচিপূর্ণ বিভ্রান্ত চিন্তার ধারক। ইসলাম একদিকে যেমন কল্যাণকর সাহিত্যের সৃষ্টিতে উৎসাহ ও প্রেরণা দিয়েছে ঠিক তেমনি সভ্যতার জন্য ক্ষতিকারক ও অশ্লীল সাহিত্য তৈরিতে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে।
পবিত্র কুরআনুল কারীমে কবিদের নামে সুনিপুণ বর্ণনা সমৃদ্ধ ‘আশ-শুয়ারা’ নামক পূর্ণাঙ্গ একটি সূরা রয়েছে। উক্ত সূরায় আল্লাহ বলেন:- এবং কবিদের যারা অনুসরণ করে তারা বিভ্রান্ত। আপনি কি দেখেন না যে তারা প্রতি ময়দানেই উদভ্রান্ত হয়ে ঘুরে বেড়ায় এবং এমন কথা বলে যা তারা করে না। তবে তাদের কথা ভিন্ন যারা ঈমান আনে ও সৎকাজ করে এবং অত্যাচারিত হলে প্রতিশোধ গ্রহণ করে। অত্যাচারীরা অচিরেই জানিবে কোন স্থানে তারা ফিরে আসবে। (সূরা-আশশুয়ারা, আয়াত ২২৪-২২৭)।
এখন এই আয়াতের একটু বিশ্লেষণ করি-
এই আয়াত তৎকালীন আরব কবিদের নিয়ে নাজিল করা হয়েছে, সেই সময়কার কবিরা সাধারণত বিভ্রান্ত ছিল, এবং তাদের অনেক অনুসারীও ছিল যারা বিভ্রান্ত। বলা হয়েছে কবিরা যেকোনো ময়দানে উদ্ভ্রান্ত হয়ে ঘুরে বেড়ায়, এখানে ময়দানে বলতে কল্পনার বিচরণ বুঝানো হয়েছে, আর কল্পনার বিচরণ এলোমেলো তাও বুঝানো হয়েছে। আবার যেসব কবি আল্লাহর প্রিয় তাদেরও বর্ণনা রয়েছে এই আয়াতে।
উক্ত আয়াত থেকে বুঝতে পারি, কল্পনা করা কোন দোষের কিছু নয়। এমনকি কল্পনার বিচরণও যতই এলোমেলো হোক, তবে তা হতে হবে সত্য ও কল্যাণের জন্য।
এই আয়াত নাযিল হওয়ার পর হযরত আব্দুল্লাহ বিন রাওয়াহা, হাসসান বিন সাবিত, কা’ব ইবনে মালিক প্রমুখ সাহাবী কবি কাঁদতে কাঁদতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকটে হাজির হন এবং আরজ করেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আল্লাহ তা’য়ালা এই আয়াত নাযিল করেছেন। আমরাওতো কবিতা রচনা করি, এখন আমাদের উপায় কী?
রাসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন আয়াতের শেষাংশ পাঠ কর। এ আয়াতের উদ্দেশ্য এই যে, তোমাদের কবিতা যেন অনর্থক ও ভ্রান্ত উদ্দেশ্যে প্রণোদিত না হয়। কাজেই তোমরা আয়াতের শেষাংশে উল্লিখিত কবিদের শামিল, (ফতহুল বারী)।
আলোচ্য আয়াতের একদিকে বিপথগামী কবিদের চিহ্নিত করা হয়েছে এবং অপর দিকে তুলনামূলক পর্যালোচনার মাধ্যমে সত্য ও সুন্দরের পতাকাবাহী কবিদের শ্রেষ্ঠত্ব নিরুপন করে তাদেরকে উৎসাহিত করা হয়েছে। যারা কবি তারা প্রাকৃতিক ভাবেই কিছুটা ভাবুক, কল্পনাপ্রবণ ও আবেগী। এটা তাদের স্বভাব ধর্ম। এ কল্পনাপ্রবণ ও আবেগী না হলে কাব্য সৃষ্টি করা যায় না। এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে কবিদের প্রতি বিশেষ এক নেয়ামত। যে কারণে সাধারণ মানুষ যা পারে না তারা পারেন, আর পারেন বলেই তারা কবি।
কবিদের এ ভাবের জগৎ থেকে, কল্পনাপ্রবণতা থেকে দূরে রাখা আল্লাহ্র ইচ্ছা নয়। তবে তারা যেন এ ভাবের জগতে বিচরণ করতে গিয়ে বিপথগামী না হয় এ জন্য আল্লাহ্ তা’য়ালা কয়েকটি শর্ত জুড়ে দিয়েছেন:-
১। একজন কবিকে ঈমানদার হতে হবে।
২। ঈমান আনার সাথে সাথে অসৎ কর্ম বর্জন করে সত্য ও সুন্দরের অনুসারী হতে হবে।
৩। এ ভাব প্রবণতা ও আবেগী বিচরণ যাতে তাকে সৎ পথ থেকে বিচ্যুত করতে না পারে সে জন্য আল্লাহ্কে বেশি বেশি স্মরণ করে সদা সর্বদা তাঁর সাহায্য চাইতে হবে।
৪। আর যখনি মানবতা বিপন্ন হবে, নিপীড়িত, নির্যাতিত হবে তখনি কবি তার সর্ব শক্তি নিয়োগ করে প্রতিশোধ গ্রহণের জন্য প্রাণান্তকর চেষ্টা করবেন। (যতটুকু তার সাধ্য- লিখার মাধ্যমে প্রতিশোধ নেয়া, যেমনটা ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে কাজী নজরুল ইসলাম করেছিলেন)
মানুষকে তার প্রাপ্য অধিকার সচেতন করে তোলার জন্য, নিপীড়ন ও নির্যাতনের ব্যপারে জনগণকে একত্র করার জন্য, কিসে এবং কিভাবে মানবতা বিপন্ন হচ্ছে তা স্পষ্ট করার জন্য সভ্যতার স্বপক্ষে বিপ্লবের বাণী উচ্চকিত করার প্রথম ও প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে কবিদের।
সূরা আশ শোয়ারা ছাড়াও সূরা আম্বিয়ার ৫ নম্বর আয়াত, সূরা সাফফাতের ৩৬ নং আয়াত, সূরা তুরের ৩০ নং আয়াত, সূরা আল হাজ্জার ৪১ নং আয়াত, সূরা ইয়াসিনের ৬৯ নং আয়াতসহ কুরআনের বিভিন্ন জায়গায় কবি ও কবিতা প্রসঙ্গ আলোচিত হয়েছে। এর কারণ তৎকালীন আরবে তখনো গদ্য সাহিত্যের উদ্ভব ঘটেনি। মূলত সাহিত্য বলতেই তখন ছিল কেবলমাত্র কবিতা। এ জন্যই সাহিত্য বলতে কুরআনে কবিতারই উল্লেখ করা হয়েছে। তাই এ আলোচনায় কবি বলতে কবি ও সাহিত্যিক এবং কবিতা বলতে কবিতার সাথে সাহিত্যকে বুঝতে হবে। আর সাহিত্য বলতে গান, নাটক, গল্প, উপন্যাস সবই এর অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়।
কবি ও কবিতা সর্ম্পকে মহানবি (সাঃ)বলেছেন-
* নিশ্চইয় কবিতা হচ্ছে সুসংবদ্ধ কথামালা, কাজেই যে কবিতা সত্য আশ্রিত সে কবিতা সুন্দর। আর যে কবিতা সত্য বিবর্জিত সে কবিতার মধ্যে কোনো কল্যাণ নেই।
* উট থামাতে পারে তার সুকরুণ ক্রন্দন। কিন্তু আরবরা থামাতে পারে না তাদের কবিতার সুর।
* নিশ্চয়ই কবিতা বিদ্যুতের চেয়ে দ্রুতগতি সম্পন্ন এবং তীরের ফলার চেয়েও ক্ষিপ্র ও ভয়ানক।
* আরবদের সুসংবদ্ধ কথা হলো তাদের কবিতা। কবিতার ভাষায় কিছু চাইলে তারা মন ভরে দান করে। তাদের ক্রোধের আগুন নিভিয়ে ফেলে কাব্যের অন্তঃসলিল প্রবাহ। সাহিত্যের আসরে কবিতাই হলো তাদের মনকাড়া শ্রেষ্ঠ উপহার।
এখানে কুরআনের আয়াত ও হাদিসের আলোকে লিখালিখি, কল্পনা, ভাবনার উৎসাহ স্পষ্ট। তবে সেই ভাবনা কেমন হবে তার দিক নির্দেশনাও বিদ্যমান। আরেকটু আলোচনা করে বলা যায় ---
কবির করণীয় সম্পর্কে আল্লাহ সরাসরি গাইড ও নির্দেশনা দিয়েছেন উক্ত আয়াতে(সূরা-আশশুয়ারা, আয়াত ২২৪-২২৭)। ।
আয়াতের শেষাংশে কবিদের জন্য কতিপয় নির্দেশনা ও মহৎ গুণাবলির উল্লেখ করে আল্লাহ মানবসমাজে এসব কবির যে শুধু শ্রেষ্ঠত্ব তুলে ধরেছেন তাই নয়, এর মধ্য দিয়ে এসব কবির প্রতি আল্লাহর যে বিশেষ কৃপাদৃষ্টি রয়েছে তা প্রমাণিত হয়। কবিদেরকে বলেছেন মাত্র চারটি গুণ অর্জন করতে। যদি কোন কবি এ চারটি গুণ অর্জন করতে পারে, তবে দুনিয়া ও আখেরাতে তার সাফল্য অবধারিত। এ গুণ চারটি কী? আল্লাহ বলেন, সে চারটি গুণ হচ্ছে : যারা বিশ্বাস স্থাপন করে, সৎকর্ম করে, আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরণ করে এবং নিপীড়িত হলে প্রতিশোধ গ্রহণ করে।
আয়াতে উল্লেখিত প্রথম ও দ্বিতীয় গুণ দুটো কবির ব্যক্তিসত্তার সাথে সম্পর্কিত। তৃতীয় ও চতুর্থ গুণ দুটোর সম্পর্ক তার কাব্য ও শিল্প সত্তার সাথে। এখানে একজন কবি বা সাহিত্যিককে আল্লাহ ভাবপ্রবণতা বর্জন করার হুকুম না দিয়ে আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরণ করার মাধ্যমে তাকে সঠিক খাতে প্রবাহিত করতে বলেছেন। এতে করে তার বিপথগামী হওয়ার ভয় যেমন তিরোহিত হবে, তেমনি কাব্য বা শিল্পচর্চা থেকেও তাকে সরে দাঁড়াতে হবে না। । তারা যেন এ কাব্য চর্চা করতে গিয়ে দিকভ্রান্ত ও দিশেহারা না হয়। এ জন্য তাদের কারণীয় সম্পর্কে বিশদ আলোচনা করেছেন, যে আলোচনায় তাদেরকে চারটি অপরিহার্য গুণ অর্জন করতে বলেছেন।
এ আয়াতে চতুর্থ যে গুণটির কথা বলা হয়েছে তা মূলত কবি ও শিল্পীদের জন্য আল্লাহর দেয়া একটি কর্মসূচি। যেখানে আল্লাহর আইন প্রতিষ্ঠিত নেই সেখানে কোন না কোন পর্যায়ে মানুষের অধিকার ক্ষুন্ন হবেই। ফলে মানবিকসত্তা নিপীড়নের শিকার হবে। এ নিপীড়নের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার প্রাথমিক দায়িত্ব দেয়া হয়েছে কবি, শিল্পী ও সাহিত্যিকদের। মানুষকে অধিকারসচেতন করে তোলার জন্য, নিপীড়ন ও নির্যাতনের ব্যাপারে জনগণকে সজাগ করার জন্য, কিসে এবং কিভাবে মানবতা বিপর্যস্ত হচ্ছে তা স্পষ্ট করার জন্য সভ্যতার সপক্ষে প্রতিশোধের বাণী উচ্চকিত করার প্রথম ও শুরুর দায়িত্ব কবিদের ওপর অর্পণ করা হয়েছে এ বক্তব্যের মাধ্যমে।
অশ্লীল ভাষা যেকোনো ক্ষেত্রেই কুরুচিপূর্ণ- সুন্দরকে সবসময় এটি কলুষিত করে, কুরআন ও হাদিস মতে এটি যেমন হারাম সমাজেও এমন ভাষা বব্যবহারকারীদের অবস্থান খুবি নীচে । যেসব কবিদের ভাষায় অশ্লীলতা প্রকাশ পায় তারা মূলত তাদের নিজের চিন্তা ভাবনার প্রতিফলন ঘটান, এতে তার কবিতা যেমন অশ্লীলতা ছড়াচ্ছে তেমনি তার সম্পর্কে তেমন ভাবনা অন্যের মনে গেঁথে যাচ্ছে ।
কাব্যে অশ্লীলতা বর্জনের ব্যাপারে মহানবীর কঠোর নির্দেশ ছিল। তিনি বলেছেন ‘ইসলাম গ্রহণের পরও যে অশ্লীল কবিতা ছাড়তে পারলো না, সে যেন তার জিভটাই নষ্ট করে ফেললো।’ রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরও বলেছেন ‘কারো পেট বা হৃদয় যদি পুঁজপূর্ণ হয়ে পঁচে যায়, তবুও সেই পেট বা হৃদয় অশ্লীল কবিতার চেয়ে উত্তম।’
ঠাণ্ডা মাথায় একবার ভাবুন কথাটির গভীরতা কতটুকু ?
প্রিয়নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর দরবারে একবার কবিদের নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল। আলোচনাক্রমে জাহেলী যুগের অশ্লীল কবিতার জনক ইমরাউল কায়েসের প্রসঙ্গ এলে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার সম্পর্কে বললেন দুনিয়ায় তিনি খ্যাতনামা হলেও আখিরাতে তার নাম নেবার কেউ থাকবে না। কবিদের যে বাহিনী জাহান্নামের দিকে যাবে সে থাকবে তার পতাকাবাহী।
সুতরাং যারা অশ্লীল কাব্য রচনা করেন, বা অশ্লীল সাহিত্য চর্চা করছেন তারা কী ভেবেছেন- এর পরিণাম কত ভয়ানক হবে ?
আল্লাহ আমাদেরকে সত্য ও সুন্দরের পক্ষে কাব্য, সাহিত্যচর্চা করে অশ্লীলতা বর্জন করে কবিতা লেখার পুরস্কার হিসাবে কবি হাস্সান বিন সাবিত (রাঃ) এর মত জান্নাতে যাওয়ার তাওফিক দান করুক।
উল্লেখ্য- কবিতা লেখার পুরস্কার হিসাবে কবি হাস্সান বিন সাবিত (রাঃ) জীবিত অবস্থায় জান্নাতের সুসংবাদ পেয়েছিলেন।