প্রথমেই নমস্কার করি সকলকে ।
আমার নাম শৈলেন চৌনী ।আমি পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বাঁকুড়া জেলার হীঁড়বাঁধ ব্লকের অন্তর্গত ধ্বজামনি পুর গ্রামে জন্ম আমার। ছোট থেকেই কবিতা, গল্প, নাটক,গান বিভিন্ন শৈল্পিক ভাবনা চিন্তা করতাম ।
পরিবারে বিভিন্ন দুঃখ, কষ্টের মধ্যে বড়ো হয়েছি। গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষ করে, ভগড়া দামোদর উচ্চ বিদ্যালয়ে শুরু করলাম পড়াশোনা। ৭-৮ এই দুটি শ্রেনী আমি আমরন ভুলব না।প্রচন্ড বদমাইশি করেছি, একটা প্রবাদ আছে না যে "সঙ্গ দোষে লোহা ভাসে", হয়তো এই প্রবাদ টার কিছু অংশ লেগেছিল যার জন্য আমি বিভিন্ন নেশা করতে থাকি, সজ্ঞান তখনও হয় নি আমার অষ্টম শ্রেণির পড়া শেষ করে আবার নতুন মোড় নিল জীবনে। দুরসম্পর্কের একজন মামা ছিল শালডিহা উচ্চ বিদ্যালয়ের ইংরাজী শিক্ষক। যার জন্যে আমাকে আর ভগড়া স্কুলে পড়তে হল না ।নতুন জীবন পেলাম আমি ।আমার বাড়ি থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত শালডিহা স্কুলে নবম শ্রেণীতে ভর্তি ভর্তি হলাম । থাকার জন্য প্রথমে শালডিহা তে বিবেকানন্দ মিশন হস্টেলে, কোন এক কারণে হঠাৎ হস্টেল বন্ধ হয়ে যায়।তারপর আমি গেলাম দিলীপ কাকুর মেসে, সেখানের পরিবেশ, প্রকৃতি, মানুষ জন, খুব ভালো লাগলো। তবে আমি ছোট তখনও ছিলাম।ভালো, খারাপ বোঝার ক্ষমতা আমার তখন হয় নি ।এটা আমার অক্ষমতা, দুর্ভাগ্য বলতে পারেন।এরপর দিন গুলো ওখানে ভালোই চলে যাচ্ছিল, পড়াশোনা মোটামুটি হতো খুব একটা ভালো না আর খুব একটা খারাপও না।তখন একটা কবিতা লিখেছিলাম কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত সেই লেখাটা হারিয়ে যায়।অনেক খুঁজেছি কিন্তু পাইনি।
এরপর ওখান থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিলাম। ফল মোটামুটি ভালোই হলো। শালাডিহা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ থাকব চিরকাল।তারা প্রচন্ড ভালোবাসা দিয়েছেন।
এরপর কিছুটা অর্থের অভাবে ও কিছুটা শারীরিক অসুস্থতার জন্য সেখানে আর থাকা হলনা।চলে এলাম বাড়িতে রেজাল্ট বেরোনোর পর ভর্তি হলাম একাদশ শ্রেণিতে কলা বিভাগে ।মশানঝাড় আদিবাসী উচ্চ বিদ্যালয়ে।আমার বাড়ি থেকে চার কিলোমিটার দূরত্বে।সেখানের শিক্ষকরা এতটাই ভালো যে বলে বোঝাতে পারব না।সব ছাত্র কেই ওনারা নিজের ছেলের মতো স্নেহাদর দেন।আমি এখনো এই বিদ্যালয়ের ছাত্র।
এই সুদীর্ঘ জীবনসংগ্রামে সংগ্রাম করে জীবনে যতটুকু সুখ, দুঃখ, আনন্দ পেয়েছি তা লেখনীর মধ্যে তুলে ধরেছি এটাই আমার আমি খুঁজে পাই।প্রতিবাদের ছন্দ খুঁজে পাই।সমাজকে অবক্ষয় এর হাত থেকে বাঁচাতে চাই আমি আমার লেখার মাধ্যমে। এটাই আমার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা।
যাক, অনেক কথা বললাম চোখের কোণে একটু জল নাড়া দিয়েছে।অতীতের স্মৃতিচারণ করতে করতে।এবার বন্ধ করছি।
অন্তিমে এটাই বলতে চাই
". . . . . . এইতো আঠারো
এখনও অনেক বাকি"
(ধন্যবাদ)