মনে পড়ে খুব পৌষের সকাল,
তখনও আমার ঘুম ভাঙেনি,
কাটেনি তখনও ঘুমের ঘোর।
শয্যায় শুয়ে আছি আমি,
কুম্ভকর্ণের মতো গভীর নিদ্রায় আচ্ছন্ন!
ধূসর কুয়াশায় চাদরে মুড়ানো যেন গোটা পৃথিবী।
তখনি হঠাৎ একটি মোলায়েম কন্ঠস্বর
ভেসে আসলো আমার কর্ণকুহরে।
উঠ, উঠ আর কত রবে নিদ্রিত!
উঠে এসো কবি,আজ ঘন কুয়াশায়
শিশির ভেজা দুবঘাসে হেঁটে বেড়াব
শুধু তুমি আর আমি নগ্ন পায়।
প্রেয়সীর কন্ঠস্বর শুনে তড়িঘড়ি উঠে পড়লুম
আরাম- শয্যা ছেড়ে!
হাজার বছর ধরে ছিলাম অপেক্ষাতুর
তোমার ডাক শুনিবার!
সহস্র বৎসর ধরে ছিলাম অপেক্ষাতুর
দীর্ঘ পথ হাঁটিবার
হাতে রেখে হাত আমার কল্পিত প্রেয়সীর!
মনে পড়ে,
চারিদিকে কুয়াশার ঘনঘটা।
নিস্তব্ধ জননী!
সূর্যের নেই দেখা উদার গগনে!
পথে নেই আজ পথচারী,
নেই কোনো পাখির কূজন!
শুধু আছি তুমি আর আমি।
হঠাৎ অপ্রত্যাশিত তোমার কোমল
চরণতলে বিঁধিল কন্টক,
তুমি উহ্ চিৎকার করে উঠলে!
তোমার সেই ক্ষীণ আর্তনাদে আকাশ- বাতাস
যেন একাকার!
সেদিন তোমার টুকটুকে লোহিত রক্তের
দু- এক ফোঁটা পড়েছিল শুভ্র শিশিরে।
হাতের কাছে ছিলনা কোনো এন্টিস্যাপটিক,
তাই সেদিন পান করেছি তোমার উষ্ণ লহু!
আজ তুমি নেই, শুধু তোমার স্মৃতিগুলো
আমার স্মৃতির ডায়েরিতে
রেখেছি সযত্নে।