প্রিয় লাবণ্য,
এখন রাত্রি প্রায় দশটা।
বিষন্ন চিত্ত, অশ্রুসিক্ত নয়নে তোমাকে লিখতে
বসলুম রক্তাক্ত চিঠি।
আমার হৃদয় ছিঁড়ে এখন শুধুই অবিরল রক্তক্ষরণ!
তোমাকে না পাওয়ার বেদনা আমার হৃৎপিন্ডটাকে
তিলে তিলে ক্ষয় করে দিচ্ছে ক্রমশ।

                ২
প্রিয় লাবণ্য
তুমি কি কখনো আমার চোখের দিকে তাকিয়েছ?
যেখানে মেঘেরা খেলা করে, বৃষ্টি ঝরায় রাতের শ্রাবণে!
জানো লাবণ্য,
ইদানিং আমার বুকের ভিতর কী কষ্টের কল্লোলই না  
ভীষণ নৃত্য করছে ;
যেন সে ঢেউয়ের দাপটে আমার হৃৎপিন্ডটা ভেঙে-চুরে
চুরমার হয়ে যাবে এক্ষুণি!
শুধু ভয় হয়! হৃদয়টা হুহু করে কেঁদে উঠে গভীর রজনীতে, সকলের অন্তরালে।
বলতে পারো লাবণ্য,
কেন আমি এতটা ভয় পাই?
আর কেনই বা আমার চিত্তে সুখ নেই?
তোমাকে পেয়েও না পাওয়ার তরে, হারাবার ভয়ে ;
আমাদের রচনা করা এক অদ্ভুত নিয়মের কারণে।

                  ৩
আচ্ছা লাবণ্য,
তুমিও কি আমার মতন রাতের অন্ধকারে অশ্রু ঝরাও?
তুমিও কি আমার মতন প্রেম-যাতনায় ভুগো?
ভাবো কি এ অধম প্রেমিকের কথা?
না পাওয়ার যন্ত্রণা তোমাকেও কি ভীষণ কাঁদায়?
নাকি দিব্যি কেটে যায় সুখ স্বপ্ন দেখে তোমার সমস্ত রাত্রিটুকু?
জানি হয়তোবা তুমিও ঘুমোতে পারো না আমার মতন।
বুকে এক সাগর যন্ত্রণার নীর নিয়ে নির্ঘুম কাটে তোমার
প্রিয় অলসবেলা!
ঘুমোতে পারো না তুমি ;ঘুমোতে দেয় না তোমায়
সর্বনাশা সংবিধান।

                  ৪
চোখে শুধুই দুঃস্বপ্ন!
মৃত্যুর যন্ত্রণা থেকেও যেন তীব্রতর প্রেম যাতনা!
কুড়ে কুড়ে খায় হৃৎপিন্ড!
নিঃশেষ করে দেয় রক্তের হিমোগ্লোবিন!
চোখের নিচে পড়ে কালো কালো দাগ,
এ যে ছানি নয় এ যে কবির প্রেমাশ্রু!
লাল টকটকে দুটি চোখ!
কবির হৃদয় যাতনার এক ক্ষুদ্র প্রতিচ্ছবি।
  
(চলবে.....)