এই শ্রাবণে মনে পড়ে শ্রাবণ মেঘের খেলা,
হৃদয় জানালায় উঁকি দেয় বিস্ময় স্মৃতিরা
সোনালি রোদ্দুর হলদে বিকেলে৷
আকাশে ডাকে কালো মেঘ
কেঁপে ওঠে ভূমি বিকট শব্দে।
টুপটাপ ঝরে নিকুঞ্জে মেঘের কান্না,
   নুপূর বাজে তার সিক্ত শুভ্র পায়।
পাতা কুড়ানিরা দলবেঁধে নৃত্যে মেতে
  ওঠে বাড়ির উঠোনে।
চোখ ধাঁধিয়ে দেয় গগনে চমকানো মরণ বিদ্যুৎ।

তুমি দুরন্ত কিশোরী,
দুরন্ত উত্তরী বায় ছোট্ট সেহেলির সনে
মেতেছিলে আমোদে ; উড়েছে তোমার নীল উড়নাটা
ভেজা বাতাসে।  
ভরা উৎসুক আঁখি দুটি তুলে চেয়ে রইলে  
দিগন্তে রংধনুর পানে।
            সুরেলা কন্ঠে শুনেছি তোমার মাধুরী মিশানো
   প্রেম-বিরহের সঙ্গীত।
পাখিগুলো নীড় থেকে এলো বাহিরে
উড়ে গেল শূন্যে
          দূর সীমানা ছাড়িয়ে।
গাঙচিল আকাশে উড়ে বেড়ায় অসীম সাহসে
       ভীরুতাকে উপাড়ি ডানা ঝাঁপটিয়ে।


  ফুটে কদমফুল,
       জুঁই ফুটে নিকুঞ্জবিতানে,
এই শ্রাবণে নামে বাদল উল্লাসে
    পুকুরে, বিলে, বন-বাদাড়ে, টিনের চালে।
ধুয়ে দেয় যত  কলুষতা ; মুছে দেয় গ্লানি।
           ময়ূর নাচে কুঞ্জে পেখম মেলে,
    সানন্দে নাচে তা-ধিন-ধিন।

   এই শ্রাবণে মেঘেরা করে ছুটোছুটি,
      খানিকবাদেই গগনে চমকায় বাঁকা বিদ্যুৎ,

চাতকের আশা
হয় পূরণ শাওনে
          হৃদয়ে ফোটে পুলক।
মহানন্দে গাহে বাদলের গান
      চাতক পাখি।  
  
            মনে পড়ে এ শাওন বেলায়,
      তুমি স্বপ্না মম প্রেয়সী প্রত্যহ বিষন্ন গোধূলি
       হেঁটে বেড়াতে নরম পায় ফসলের আইলে।
গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির সাথে মিশে যেতে
গাইতে বুঝি গুনগুনিয়ে শ্রাবণ মাসের
               বাদল ঝরার গান।      

মনে পড়ে এ শ্রাবণে
তোমার মিষ্টি দুষ্টুমি
খুব ছেলেমানুষী ছিলে তুমি
      দুরন্ত বালিকা!

          এখন শুধুই শ্রাবণে দুঃখ পোহাই
এখন আর ঝরে না তেমন বাদল,
ফুটেনা কদম্ব, শিউলির গন্ধে
    মৌ মৌ করে না বাড়ির আঙিনা।
     তুমিও আগের মতন শ্রাবণে ভাসাও না গা,
বিকেলে আর করোনা ছুটোছুটি,
  এখন শ্রাবণ শুধুই অতীতের মধুর কল্পনা।