যে ছেলে হারিয়ে গেছে মিছিলের ফাঁকে অন্তিমকালে,
তার পিতাকে কি করে আমি শান্তনা দেবো?
সহসা যে মায়ের আচল শূন্য হয়ে গিয়েছে,
আমি কি করে শুনাবো তাকে কষ্টের কবিতা।
বলছিলাম বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কথা,
নেটওয়ার্কে ঝিমিয়ে পড়া একটা অলস প্রজন্ম,
কি করে হঠাৎ প্লেকার্ড হাতে বেরিয়ে পড়লো জনসমুদ্রে?
স্লোগানে,মিছিলে, মিটিংয়ে, সমাবেশে।
সাথে যোগ দিলো বাংলার আপামর জনতা,
শিশু, যোয়ান, বৃদ্ধ, বেশ্যা, শ্রমিক জনতা।
ওরা কি চায়? অধিকার, স্বাধীনতা, নিরাপত্তা এইতো।
শাসকের কাছে এগুলো চাইতে হয়? চাওয়াটা কি অপরাধ?
বদলে পেলো বুলেট, লাশ আর লাশ, রক্তাক্ত প্রান্তর,
চারিদিকে আর্তনাদ, বারুদের গন্ধ, স্বজন হারানোর শোক।
আমি ৭১ দেখিনি ২৪ জুলাইয়ের নির্মমতা দেখেছি।
আমার ঘৃণা হয় স্বৈর শাসকের প্রতি, লজ্জায় ঘুম আসে না,
এটাই কি শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত মানচিত্র?
আমি দেখেছি ১৮ এর রক্ত ঢেউয়ের মতো টগবগ করতে,
তারা মানে না অন্যায়, ছুটে চলে রোদ বৃষ্টি আতঙ্কের মাঝে,
চোখে স্বপ্ন, হাতের মুঠে প্রাণ,স্লোগান যেন সাউন্ড গ্রেনেড,
এসব দেখে আহ্লাদিত একদল মানুষরূপী অমানুষ।
শহরের বুকে অনেক কিছুই বিক্রি হয়ে গেছে,
বিবেক, মনুষ্যত্ব, বন্ধুত্ব, ভালোবাসা ও দেশপ্রেম।
বিক্রি হয়নি কেবল ১৮ কে ধারণ করা অরুণ তরুণ,
আমাকে বলতেই হয় আবু সাইদের কথা,
আমার মনে পড়ে দীপ্ত, মুগ্ধদের আত্নত্যাগ।
অন্যায়ের কাছে তারা মাথা ণত করে নাই,
দাসত্বের শৃঙ্খল ভাঙতে ছিলো বদ্ধ পরিকর।
ঐ যে ছোট্ট শিশু আহাদ, কি দোষ ছিলো তার?
স্বাধীন দেশে জন্ম নিয়ে সে পায়নি নিরাপদ আশ্রয়।
এক নদী রক্ত, সংগ্রামে, অবশেষে তারুণ্যের বিজয়!
আগামীর বাংলাদেশের জন্য এ আরেক ইতিহাস,
এই চেতনা ছড়িয়ে পড়ুক টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া।
মানুষ থেকে মানুষে। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে।