সামনে ক্রিকেট বিশ্বকাপ।
গত ফুটবল বিশ্বকাপে দেখেছি বাংলাদেশের ফুটবল উন্মাদনা। যদিও আমারা ঐ বিশ্বকাপ খেলব এ স্বপ্ন আমার নাতিও দেখবেনা আশাকরি। তবুও এ ফুটবল বিনোদন আমাদের রক্তের সাথে মিশে একাকার। আর এখনকার সমর্থক গুলোর ফুটবল চর্চায় জ্ঞান সীমাবদ্ধ ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা মেসি-নেইমার এ। তাই সুন্দর ফুটবল বিনোদনের চেয়ে আমরা বেশি মেতেছিলাম অসুন্দরের কুরুচি চর্চায়। সমর্থন করা দলকে ভালবাসে আমরা কত পাগলামি-ই না করেছি। আজ প্রযুক্তির কল্যাণে দেখেও নিয়েছি আমাদের ভালবাসা মেসি-নেইমারের কাছে কতটুক যায়। শোনেছি তাদের মুখে- "বাংলাদেশ নামের দেশ? কোথায় সেটা?" বা হালকা "হ্যাঁ। দেশটি অনেক ফুটবল প্রিয়।" হেডলাইন হত কাগজে!
কিন্তু। আজ আমাদের ছেলেরাও তো একটা বিশ্বকাপে অংশগ্রহন করতেছে। কই সে উন্মাদনা? কই সে পতাকা মিছিল? নিজেদের টাইমলাইনে আনতে আয়োজক হয়ে ফ্লাসমব করি। কিন্তু এখন তো আরো বেশি সমর্থন প্রয়োজন, ছেলেরা অন্যদেশে খেলতে গেল বলে।
আমার লিখা "পরিচয়'' শিরোনামের একটা কবিতার কথা মনে পড়তেছে আজ। সে কবিতার সারমর্ম ছিল এই- "আমি একটা জ্ঞানীদের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিলাম তাঁদের সাফল্যের রসায়ন জানতে। একজন একজন করে করতালি মুখড় সন্ধ্যায় সকলে নিচের সারি হতে স্টেজ এ উঠছিল। আর আমিও হাততালি দিয়ে যাচ্ছিলাম। স্টেজ ভরপুর দেখে আসেপাশে তাকাতেই দেখি দর্শক সারির সকলে জ্ঞানীর কাতারে উপবিষ্ট। আমি একাই দাঁড়িয়ে তাঁদের অনুপ্রেণীত করে যাচ্ছি। নিজের পরিচয পেলাম তখন।" হ্যাঁ, এ হচ্ছে আমরা বাঙালীদের সভাব শুধু আমার না। আমরা অন্যদের সাফল্য গুণকির্তনে এতো ব্যস্ত যে নিজেদের হারিয়েই বসেছি আমরা।
আমি আমার পরিচয় খুঁজে পেয়ে হারের ব্যথায় কাতর না হয়ে জয়ের পথে ফিরে আসতে নিজেকেই অনুপ্রণীত করব। আমি আমাকে ভালবাসি, আমার বাংলাকে ভালবাসি। আমার (বাংলাদেশ দলের) ব্যর্থতায় ক্রোধ না করে ব্যথিত হব, আমি আমার (
বাংলাদেশ দলের) বিজয়মঞ্চে করতালি দিতেদিতে উটে দাঁড়িয়ে একদিন নিশ্চই বলব- "বিশ্ব ছাড়ায়ে উঠিয়াছি একা- চির উন্নত মম শির"
অনেক অনেক শোভকামনা বাংলাদেশ দলের জন্য।