কঙ্কালদের সাথে শায়িত ছিলাম
মড়িঘরের মরচে ধরা স্ট্রেচারে।
ডাকঘরে মৃতের চিঠি
নীলরঙা পেটিকার বুকে
পঁচতে শুরু করেছে!
জানিনা তার কত যুগের ক্ষোভ—
এক চিঠিতেই পুড়িয়ে মারল।

আরশির সম্মুখে স্থবির হয়ে দাঁড়িয়েছে
অজ্ঞাত এক হলুদ পাড়ের শাড়ি,
ক্রন্দনের বিশুষ্কতা তার সারা গায়ে
সে কি মেঘেদের দলে হারিয়েছে?
প্রজাপতির দলে ভিড়েছে নাকি
মৌমাছিদের সাথে খোঁজেছে সুরা?

ম্যানহোলের ঢাকনা ভেঙে বেরোলো
মৃতদেহের বিকট গন্ধ।
তিমির ঘোলাটে পৃথিবী হতে
নক্ষত্রের চারিপাশে মিশেছে
কলঙ্ক, অপযশের গাঢ় ছাপ।

নিগড়ের রুদ্ধতায় গাছটি অভুক্ত,
সংগ্রাম করতে গেলে মরবে নিজে।
তার আঁচলে গড়িয়ে দোল খাওয়া শিশু
বজ্রের মত প্রশ্নবিদ্ধ করে মাতা'কে—
এই পরাধীনতার মানে কী?
বড় গাছের পদতলে পেষ্টিত হবে ভেবে
পরাধীনতার গলায় ঝুলিয়ে দিয়েছে
হৃৎপিণ্ড দিয়ে তৈরি মস্ত এক তালা।

মানুষেরা উড়তে শিখেছে একদিন,
কিশোরীর হাতে উড়েছিল আলোর মশাল।
হলুদ পাড়ের শাড়িটা বিজয়ের যন্ত্রনায়
পুড়ে মরে পড়ল বালুচরের ধারে।
সেইদিন— প্রিয়তমার দৃষ্টি হতে আড়ালে
কালচে উর্ণনাভ'র পিঠে চড়ে
লাশকাটাঘরের স্ট্রেচারে গিয়ে ঘুমিয়েছি।
এই অপরিচিত ঘরে এসেছে অজ্ঞাত কবি,
নতুন এক লাস্যময়ী কাব্য রচিবে বলে!
হলো না তার সেই কাব্য রচনা,
সে ও শুয়ে পড়ল প্রতিবেশী স্ট্রেচারে।
তার ও প্রবল স্পৃহা কঙ্কাল হওয়ার,
জীবনের এই খাঁচা হতে বের হওয়ার
তার প্রবল অভিলাষ।