(২০০৯ সালে বি.ডি.আর বিদ্রোহ নিয়ে লিখা)

আজও আমি স্বপ্নে দেখি
পঁচিশে ফেব্রুয়ারির কম্পিত সকাল
ম্যানহলে পড়ে থাকা বিভৎস্য লাশ।
এ লজ্জা রাখি কোথায়?
একাত্তরের এর বিজয় গেল বৃথায়।
আজও আমার হ্নদয় কেঁপে উঠে
সাতান্ন সেনা ভাইয়ের পড়ে থাকা
মায়াময় প্রাণহীন মুখখানির কথা ভেবে।
এ লজ্জা রাখি কোথায়?
চোখে ভাসে গুলজার ভাইয়ের বেঁচে থাকার আশায়
মৃতের মত পড়ে থাকার করুন কাহিনী,
তবুও শেষ রক্ষা হয়নি তার।
মেজর শাকিলের নিষ্পাপ শিশুর
বাবা হারানোর আর্তনাদ!
ছি! এ লজ্জা রাখি কোথায়?
আমরা কতটা নিষ্ঠুর, কতটা পাষন্ড!
দূর থেকে শুধু চেয়ে দেখেছি
কিছু করতে পারিনি ভাইদের জন্য,
শুনতে পাইনি কটাদিন বেঁচে থাকার আহাজারি।
এ লজ্জা রাখি কোথায়?
পিলখানার বাতাশে পোড়া লাশের গন্ধ
অভিনব কায়দায় ঘাতকের পুঁতে রাখা লাশের ছন্দ।
মনে পড়লে আজও আমার
শরীরে জ্বর আসে।
মনে হয় কী লাভ বেঁচে থেকে?
প্রানহীন মূর্তির মত বেঁচে থাকার
নামই কী জীবন?
নিজেকে মনে হয় কাঠের টেবিল।
নোংরা রাজনীতির ঘৃণিত নেতাদের
থাবা খায় কিন্তু প্রতিবাদ করতে পারি না।
এ লজ্জা রাখি কোথায়?
আর কতটা লাশ পেলে
এ জাতি  হবে লজ্জিত?
এটাই কী ত্রিশ লক্ষ শহীদের
রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন বাংলা?
যেখানে আজও প্রতিনিয়ত লাশের স্তুপ জমা হয়।
আমরা কতটা নির্মম,কতটা ঘৃণিত!
আজও আমরা পঁচিশে ফেব্রুয়ারী শোক দিবস
ঘোষনা করতে পারি নি।
এ লজ্জা রাখি কোথায়?
আমার এই সোনার ভাইদের
অবহেলিত এক একটি লাশ,
এই জাতির এক একটি অভিশাপ।
আজও আমরা যদি লজ্জিত না হই?
আমরা মনুষ্যত্ব ফিরে না পাই!
তবে আমাদের নিষ্ঠুরতার গ্লানি নিয়েই
কাটাতে হবে শত বছরের অভিশপ্ত  জীবন।