সত্যিই খুবই চমকিত হয়েছিলাম । জেনেছিলাম প্যারিসের সব গুলো ব্যাচেলর ম্যাচেই এভাবে ৩ তলা বা ২ তলা খাট আছে। যদিও এরপর আর ৩ তলা খাট দেখিনি।তবে ২ তলা খাট ৯৯ দশমিক ৯৯ ভাগ ম্যাচে বিদ্যমান।
আমরা কতনা রংগিন স্বপ্ন বুকে একে প্রবাসে পাড়ি জমাই। প্রবাসে আসার পর আমরা বুঝতে পারি প্রবাস কি ? প্রবাসে আসার পর একজন মানুষের প্রথম কাজ হয় তার থাকার ব্যবস্হা করা। তারপর অন্যসব।
আমি জেনেছি বেশির ভাগ প্রবাসীরা কয়েকজনে মিলে ম্যাচ করে থাকেন। ইউরোপের যে সমস্ত দেশে ঘুরার সুযোগ হয়েছে, সব দেশেই দেখেছি একই অবস্হা। কোথাও ২ তলা বিশিষ্ট খাট না থাকলেও এক রুমে ৩/৪ জন থাকতে আমি দেখেছি। আর কোথাও একরুমে ৬ জন পর্যন্ত থাকতেও দেখেছি। দুই রুমের বাসায় ৬ থেকে ৮ জন, তিন রুমের বাসায় ১২ থেকে ১৪ জন, আর চার রুমের বাসায় ১৮ থেকে ২০/২২ জন থাকতেও আমি দেখেছি। শুধু দেখেছি বললে ভুল হবে। একসময়ে আমি নিজেও থেকেছি ওভাবে।
এমনও বাসা আছে যেখানে দাড়াবার কোন যায়গা নাই। এক ধরনের মুরুগের খাঁচার ভেতর যেন আমরা বাস করছি। অনেকেই হয়তো বাধ্য হয়ে থাকছেন, আবার অনেকে দুটো পয়সা বাচানোর জন্য এভাবে থাকছেন। কেননা তার দেশে প্রতি মাসে হাজার হাজার টাকা পাঠাতে হয়। সে না খেয়ে,না পরে,না শুয়ে থাকলেও দেশে তাকে প্রতিমাসে টাকা পাঠাতে হবে।
এমন না যে, ৩/৪ জনে মিলে ২/৩ রুমের বাসায় থাকতে পারবেন না।তিন রুমের একটা বাসার ভাড়া যদি হয় ৯০০ ইউরো তাহলে অনায়াসে ৩ জন বা ৪ জন থাকতে পারবেন। জনপ্রতি পড়বে ২৫০ বা ৩০০ ইউরো। কিন্তু এখানে যদি ৮ জন থাকেন তবে ১০০ বা ১২০/১২৫ জনপ্রতি পড়বে। তাই টাকা সেইভের জন্য আমরা প্রবাসীরা গাদাগাদি করে থাকি। বিশ্বাস করেন শুধু দেশের জন্য,দেশের মানুষের জন্য, নিজের প্রিয়জনের মুখে হাসি ফুটানোর জন্য প্রবাসীরা এই কষ্টের থাকাটাকেও হাসিমুখে মেনে নেন।
প্রবাসে যিনি নতুন আসবেন তাকে সব উপরের তলায় থাকতে দেয়া হয়। আস্তে আস্তে তার অবস্হান পরিবর্তন হয়। আমিও যখন নতুন এলাম তখন আমাকে ৩ তলায় থাকতে হয়েছে। তবে বেশিদিন নয়। আমি ১০ দিন তিন তলায় থেকে বাসা পরিবর্তন করে অন্য বাসায় চলে গেলে সেখানে আমাকে ২ তলায় থাকতে দেয়া হয়। আস্তে আস্তে নিচ তলায় নেমে আসি। আর বর্তমানে আছি পরিবার পরিজন নিয়ে।