নিজের ভেতর নিজস্বতায় ডুবে গিয়ে
আমার ঘনত্বে উদ্ভাসিত হতে চাইলাম
দৃষ্টিকাড়া রঙিন একটা ইমেজ
আঁকতে আঁকতে সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলো
আলো-আঁধারির আলোয়
তীব্র মুগ্ধতা নিয়ে ক্যানভাসে
দু'চোখ রেখেই আঁতকে উঠলাম আমি...

ক্যানভাসটি তৈরি ছিল
অগণিত সম্পর্কের সুতো দিয়ে
দেখলাম রঙ কোথাও সমান্তরাল নয়
রঙ ধরতে পারেনি আমার ক্যানভাস
আকাশের মেঘ হয়ে ছাড়া ছাড়া
আলগা আলগা হয়ে আছে সব রঙ।
সৌন্দর্য, সম্পর্ক, প্রেম, মুগ্ধতা কিংবা
আনুগত্যের সুতো ছিঁড়ে গেলে যেমন
ধুসর-ফ্যাকাশে লাগে। ঠিক তেমনটিই
হয়ে আছে আমার সাজানো রঙিন ক্যানভাস...

ইবাদাতে শুরু করি অগণিত সফর আমি
স্থির ইনাবতহীন বিপর্যস্ত সম্পর্কগুলো -
ছেড়া ঘুড়ি হয়ে অস্তিত্বহীন হচ্ছে অজানায়
সুতোগুলো ঘাস-বৃক্ষে জড়িয়ে কমে যাচ্ছে
পৃথিবীর প্রবণতা থেকে আমি ধীরে ধীরে
আলাদা এক ছন্নছাড়া ভবঘুরে হয়ে যাচ্ছি
বন্ধনগুলো ঢিলে হতে হতে
পিছলে যাচ্ছে যত্রতত্র
আমি বিচ্ছিন্ন আমার থেকেও
কোথাও থামার একটু ঠাঁই নেই আমার
ঘণ হয়ে আসছে প্রবল নিজস্বতা—
কোথাও লাগছে না ভালোবাসার দরদে
ফুটো টেনিস বলের চেয়েও মূল্যহীন
একান্ত আপন কান্নার চেয়েও একা
পাইলিং মেশিনের শব্দের চেয়েও বিরক্তিকর
হয়ে গেছি— অথচ ভাবছি আমার দাম বাড়ছে...

নিজস্বতার তীব্রতায় মুর্শিদের দরবার
এড়িয়ে চলে যাচ্ছিলাম খুব সন্তর্পনে
কিন্তু! কে জানতো আমার আল্লাহর দয়া
এখনও আমাকে ছেড়ে যায়নি!
মুর্শিদের চোখে আটকে গেলাম
আমার হালত জানতে চাইলেন মুর্শিদ
মিথ্যে বলতে পারিনি তাঁর চোখে দেখে...

মুর্শিদ বললেন, "রঙ ঘণ হলে
তারপিন দিয়ে পাতলা করতে হয়
এরপর সেই রঙ অন্যকে রাঙায়
নিজেও উজ্জ্বল হয়ে উঠে।
নিজস্বতা ঘণ হলে
দাসত্ব ও বিনয়ের তারপিনে তাকে
পাতলা করতে পারলেই
নিজেও উজ্জ্বল হবে
অন্যকেও সাজিয়ে দিতে পারবে
সিবগাতুল্লাহ'র চেতনায়।"
মুর্শিদের দেওয়া তারপিনে কিছুটা
নেমে আসছি জীবন ও মানুষের ক্যানভাসে...