মৃদু আলোয় ড্রিম লাইটটা তখনো জ্বলছে
সাথে জানালার ফাঁকে আসা দুএকটি জোনাক
তোমাকে স্পর্শ করে আপন গন্তব্যে চলে যাচ্ছে,
চাঁদের আলোটা তোমার মুখের কাছে এসে থেমে গেছে
তুমি আমার থেকে হাত দুয়েক দূরে
তখনো তুমি আমায় স্পর্শ করোনি!
নীলাভ আলোয় যতদুর দেখা যায়,
একটি চাঁদমুখ
চিরল দাতের হাসি
চুড়ির টুনটান ধ্বনি
হলুদ শাড়িতে আটকে থাকা চুমকির আচমকা ঝিলিক ;
আমার অনুভবে আমার কল্পনায়
আমার কানে, আমার চোখে এসে পরম যতনে হাত বুলিয়ে যাচ্ছে
তখনো তুমি আমায় স্পর্শ করোনি!
এখন মধ্যরাত
দূর অদূরে পাখিদের ডাক
হঠাৎ দু একটি শেয়ালের হাঁক
স্টেশন থেকে আসা রেলের চিৎকার;
তোমাকে আমার আরও কাছে নিয়ে আসছে
এখন দুজনের দূরত্ব খুব জোর পাঁচ থেকে ছয় ইঞ্চি হবে
তখনো তুমি আমায় স্পর্শ করোনি!
এখন বাটিরাত
চাঁদটি দূর অজানায় লুকিয়ে গেল
জোনাকির আলোও তেমন নেই
ড্রিম লাইটের আলোটা তখনো জ্বলছে
হঠাৎ বিদ্যুৎ চমকালো
সাথে বিকট শব্দে একের পর এক বজ্রপাত!
এখন তুমি আমার এক থেকে দুইচুল দুরে হবে,
তখনো তুমি আমায় স্পর্শ করোনি!
এখন শেষ রাত
শেয়ালের হাঁকডাক নেই
বিদ্যুৎও চলেগেছে অনেক আগেই
মসজিদে আজানের ধ্বনির প্রতিক্রিয়ায়
কাছাকাছি কোথাও কুকুরগুলোর ঘেউউ ঘেউউ আওয়াজে তুমি হতচকিত!
পাখিদের কলরবেও আলাদা মাত্রা যোগ হয়েছে
মনে হচ্ছে তুমুল ঝগড়া চলছে,
তুমি হেলে দুলে এই বুঝি পড়বে আমার বুকে
কিন্তু .....না
তখনো তুমি আমায় স্পর্শ করোনি!
এখন ভোররাত
দূর থেকে আসা সূর্য কিরণ ;
তোমার ঝুড়িতে এসে আলোর ঝলকানি দিয়ে
আবার ফিরে যাচ্ছে,
দখিনা বাতাসে উড়ন্ত চুল এসে আমায় ছুঁয়ে দিচ্ছে,
প্রচন্ড্র বাতাসে জানালাটাও বন্ধ হয়ে গেল,
তুমি আমি একরুমে কেউ নেই কেউ না
এখনো তুমি আমায় স্পর্শ করোনি!
.......
আজ চার বছর পার হয়ে গেল
প্রতিটি রাতই তুমি জানালার ফাঁকে বসে
আমিও ঠিক পাশেই বসে!
রাত যায় দিন আসে তোমার ছোঁয়ার আশে আশে,
অপেক্ষার প্রহর দৃঢ় থেকে দৃঢ় হয় আমিও শক্ত হয়ে বসে
একটি স্পর্শের আশায় ঠিক প্রথম দিনের মতই
এখনো তুমি আমায় স্পর্শ করোনি!