খোঁজ নিলে দেখা যাবে, এমন বহু মানুষই আছেন এই ধরার বুকে যাঁরা জীবনের বাঁধা-ধরা পথে চলতে চলতে একটা সময় হঠাৎই ভাবেন, চলে যাই সব কিছু ছেড়ে অন্য কোথাও অন্য কোনখানে! কোন যুক্তিগ্রাহ্য কারণ ছাড়াই। আশেপাশের লোকেরা ভেবে সারা হয়, তার উপর অথবা অন্য কারো উপর অভিমান হয়েছে বুঝি। কিছু ক্ষেত্রে হয়তো বা তা হয়ও, কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এ সবের পিছনে কারণ খুঁজতে যাওয়াই বোকামি।

         বিশেষত যাঁরা ভাবুক শ্রেণীর মানুষ তাঁরাই এরকম উদ্ভট খেয়ালের শিকার হন বেশি।

          নিতান্তই কৌতূহল বশত এই আসরের শুরুর দিকের কবিদের সন্ধান করছিলাম সেদিন।বিশেষ কাউকে তেমন পাওয়া গেলনা।তবে জনা তিনেক উল্লেখযোগ্য কবিকে পেলাম।

   ১।পল্লব --যোগ দিয়েছেন ৪ বছর ৭ মাস আগে, প্রকাশিত কবিতার সংখ্যা-৬৫, ১ম কবিতা প্রকাশের তারিখ-১৪/০৯/২০১২, অদ্যাবধি শেষ কবিতা-১০/০৭/২০১৪

    ২।রইস উদ্দিন গায়েন -- যোগ দিয়েছেন  ৪ বছর ৪ মাস আগে,  প্রকাশিত কবিতার সংখ্যা-৫৭, প্রথম কবিতা প্রকাশের তারিখ - ১৪/ ০৩/ ২০১০ এবং অদ্যাবধি শেষ কবিতা -- ২১/০৩/২০১৪,

    ৩।নির্জন আহমেদ অরণ্য -- যোগ দিয়েছেন ৪ বছর আগে, কবিতার সংখ্যা -- ১২৩, ১ম কবিতা-৩০/০৯/২০১২, অদ্যাবধি শেষ কবিতা -- ০২/০৩/২০১৩,
      
       যেহেতু  এখন আমরা জেনেছি যে কবি পল্লবের এখানে মূল দায়িত্ব এডমিনের, কাজেই বাকি দুজন সম্পর্কে কিছু বলা যাক।

       খুব স্বাভাবিক কারণেই সেসময় তাঁরা কবিতায় তেমন মন্তব্য পেতেন না।অনেকগুলো কবিতায় শূন্য মন্তব্যও আছে।তবে মাঝেমধ্যে দু একজন কাব্যরসিক মানুষ যাঁরা হয়তো কবিতা লিখতেন না, তাঁরা কবিতা পড়ে মন্তব্য করতেন।ফলে মন্তব্য না পেয়ে পেয়ে একসময়  উৎসাহ হারিয়ে ফেলাটা খুব স্বাভাবিক।ঐ দুজনের কবিতা পড়ে দেখেছি, আমার খুবই ভাল লেগেছে।আরও একটা ব্যাপার লক্ষ্য করলাম,  এই আসরের এক কৌতূহলী কবি রইস উদ্দিন গায়েনের অনেক পুরনো একটা কবিতায় মন্তব্য দিয়ে এসেছেন।সেই মন্তব্যের উত্তরে কবি গায়েন লিখেছেন, অনেক দিন পর আবার উৎসাহ ফিরে পেলাম আপনার মন্তব্যে, ভাবছি আবার এই আসরে কবিতা নিয়ে আসবো।দেখতেই পাচ্ছেন তাঁর লেটেস্ট কবিতা ২১/০৩/২০১৪ তারিখে প্রকাশিত হয়েছে।তাও হয়ে গেল সাড়ে তিন মাসের ওপর।

         কবি অরণ্যের কবিতাও আমার ভাল লেগেছে।দেখা যাচ্ছে তিনি চার বছর আগে যোগ দিয়ে মাত্র ১২৩টি কবিতা প্রকাশ করেছেন। কবি গায়েন লিখেছেন আরো কম, মাত্র ৫৭টি।

          মাঝখানে বহু কবি যোগ দিয়েছেন আবার বিদায়ও নিয়েছেন অনেকেই। কিন্তু এটা মনে করার কোন কারণ নেই যে, সবাই অভিমানে চলে গিয়েছেন।তাঁদের অনেকেই মাঝে মধ্যে এসে দু একটি কবিতাও প্রকাশ করে যাচ্ছেন। আমি যে সময় যোগ দিই, সে সময় দেখেছি এবং এখনো দেখছি নিয়মিত তালিকায় থাকার একটা নেশা ধরে গিয়েছে অনেকের মধ্যে।যদিও এর  মধ্যে খারাপ কিছু আছে বলে আমি মনে করি না।আমারও এক সময় অভ্যাস হয়ে গিয়েছিল যে, প্রতিদিন একটা করে কবিতা দিতে হবে আসরে, না দিলে সেদিনটা কেমন যেন ফাঁকা ফাঁকা লাগতো। তাই সবাই যে  তালিকায় নাম দেখার জন্য প্রতিদিন লেখা দিচ্ছে, তা কিন্তু নয়। মানুষ তো আসলে অভ্যাসের দাস।সেই সাথে এনার্জিটাও দরকার হয়। তবে আমি নিজে উপলব্ধি করেছি, রোজ কবিতা লেখার তাগিদে কবিতার মানের সাথে অনেক সময় আপোষ করতে হচ্ছে।সত্যিই তো রোজ রোজ কি ভাল কবিতা মাথায় আসে? আর যাই হোক কবিরা তো আর কম্পিউটার নয়! তাই মাঝে কিছুদিন গ্যাপ রেখে রেখে কবিতা দিতাম।কিন্তু ঐ যে বলে অভ্যাস।

        আবার কবিদের মনেও তো অনেক সময় একঘেয়েমিতা এসে বাসা বাঁধতেই পারে, ভাঁটা পড়তেই পারে উৎসাহে, তখন কিছু দিনের জন্য অথবা বরাবরের জন্য ছুটি নিতেই পারে কেউ কেউ। সেসবের পিছনে অন্য কোন কারণ না খোঁজাই ভাল।