এই আলোচনার প্রথম পর্বের মন্তব্যে আসরের বিশিষ্ট কবি কবীর হুমায়ূন লিখেছেন, "আরও বিস্তৃত হলে মন্দ হত না।" সকলের সময়ের কথা মাথায় রেখে কেবল আলতো করে ছুঁয়ে যেতে চেয়েছিলাম বিভিন্ন দিকগুলি। কিন্তু প্রিয় ছান্দসিক কবির কথাকে মর্যাদা দিয়ে শ্রীকৃষ্ণকীর্তন ও পদাবলীতে প্রবেশের আগে চর্যাপদ সম্পর্কে আরও কিছু কথা বলে নেওয়া যাক ।
ডঃ মহম্মদ শহীদুল্লাহ-এর মতে চর্যাপদগুলির রচনাকাল অষ্টম থেকে দ্বাদশ শতাব্দী। মূলত বৌদ্ধ সহজিয়াদের সাধনপ্রণালি সম্বলিত দার্শনিক জিজ্ঞাসার কাব্যিক রূপায়ন হল এই চর্যাপদগুলি।
তবু এগুলির কাব্যিকমূল্য কেউই অস্বীকার করেননি।বরং চর্যাগুলিতে ব্যবহৃত উপমায় তথা রূপক-এ চমকিত হয়েছেন সকলেই। তাছাড়া এগুলিই হল এই উপমহাদেশের প্রায় 110টি ভাষার মধ্যে বাংলায় রচিত প্রথম লিরিক। নিজেদের ইতিহাস না জেনে যেমন কোন জাতি এগতে পারে না তেমনই বাংলা সাহিত্যের চর্চাকারীদেরও অবশ্যই বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস জানা জরুরি বলে আমি মনে করি। অনেকেই জানেন । আবার অনেকেরই নানান কারণে জেনে ওঠা হয়ে ওঠেনি ।যদি এই লেখা তাঁদের সামান্যতম উপকারে আসে তাহলে আমার এই শ্রমসাধ্য প্রয়াস সার্থক হয়েছে বলে মনে করব।
আমাদের অর্থাৎ বাংলা ভাষাভাষীদের ঐতিহ্য এতটাই সমৃদ্ধশালী যে, অল্প কথায় লিখে শেষ করা সত্যিই কঠিন। কেবল অপার বিস্ময়ে তাকাই আর ভাবি, যে কথা ডিলান টমাস অথবা ইয়েটস কিছুদিন আগে লিখেছেন সেকথা হাজার বছর আগেই লিখে গেছেন আমাদেরই পূর্বপুরুষ ! একটা দৃষ্টান্ত দেওয়া যাকঃ-
জো সো বুধী সোহি নিবুধী।
জো সো চোর সোহি সাধী।।(ডেন্ডনপা, চর্যা 33)
(যে জ্ঞানী সবার চেয়ে, অজ্ঞান সে ঘোর।
সবার চেয়ে যে সাধু, সেই ব্যাটা চোর।।)
আর হাজার বছর পর ডিলান টমাস লিখছেন,
So the blind man sees the best
অথবা কবি ইয়েটস লিখছেন,
The ceremony of innocence is drowned
The best lack of conviction , while the worst
Are full of passionate intensity
আরও একটা দৃষ্টান্তঃ-
পেখমি দহ দিহ সব্বহি সুন।
চিএ বিহুন্নে পাপ না পুন।।(ভাদেপা)
(দেখছি আমি দশ দিকেতেই সবকিছু যে শূন্য।
মন ছাড়া যে নেই কোন পাপ,নেইতো কোন পুন্য।।)
আর 500 বছর পর শেক্সপীয়ার লিখছেন--
For there is nothing either good or bad,
but thinking makes it so
চর্যাপদগুলির কাব্যগুণতো প্রশ্নাতীত, অথচ এগুলি লেখা হয়েছিল গীতহিসাবে। সেকারণে এগুলিকে চর্যাগীতিও বলা হয়ে থাকে। এগুলি যে গীতহিসাবে গাওয়া হত তা স্পষ্টভাবে বোঝা যায় বিভিন্ন রাগের উল্লেখে। অর্থাৎ হাজার বছর আগেই বাঙালি জাতির সুর-তাল-লয় সম্পর্কে যেরকম জ্ঞান ছিল তা ভাবলে রোমাঞ্চিত হতে হয়। তার কয়েকটি দৃষ্টান্ত দিয়ে চর্যাপদ সম্পর্কিত আলোচনার ইতি টানতে চাই ।
চাটিলপা
রাগ-গুঞ্জরী
ভবণই গহণ গম্ভীর বেগেঁ বাহী।
দুআন্তে চিখিল মাঝেঁ ন থাহী ॥
ধামার্থে চাটিল সাঙ্কম গঢ়ই।
পারগামী লোঅ নীভর তরই ॥
ফাড়িঅ মোহতরু পাটী জোড়িঅ।
অদঅদিঢ়ি টাঙ্গি নিবাণে কোডিঅ॥
সাঙ্কমত চড়িলে দাহিণ বাম মা হোহি।
নিয়ড়ি বোহি দূর মা জাহি ॥
জই তুম্হে লোঅ হে হোইব পারগামী।
পুছহু চাটিল অনুত্তরসামী ॥
(ভবনদী বয় বেগে গহিন গভীর,
মাঝগাঙে ঠাঁই নাই, পঙ্কিল দু’তীর—
চাটিল ধর্মের জন্য সাঁকো গড়ে তায়,
পারগামী লোক তাতে পার হ’য়ে যায়।
অদ্বয়-কুঠারে চিরে মোহতরু, তার
তক্তা জুড়ে নির্বাণের সাঁকো হ’ল পার।
চেয়ো না ডাইনে বাঁয়ে এ-সাঁকোয় চ’ড়ে,
দূরে নয়, বোধি আছে নিকটেই ওরে।
কিভাবে ওপারে যাবে, যারা যেতে চাও,
অনুত্তর স্বামী গুরু চাটিলে শুধাও।)
--------------------------'-------------
ভুসূকুপা
রাগ-পটমঞ্জরী
কাহেরে ঘিনি মেলি আছহুঁ কীস ।
বেঢ়িল হাক পড়ই চৌদীস ॥
অপণা মাংসেঁ হরিণা বৈরী ।
খনহ ন ছাড়ই ভুসূকু অহেরী।।
তিণ ন হুবই হরিণা পিবই ন পাণী ।
হরিণা হরিণির নিলঅ ণ জাণী ॥ধ্রু॥
হরিণী বোলই সূণ হরিণা তো ।
এ বণ ছাড়ী হোহু ভান্তো ॥
তরঙ্গতেঁ হরিণার খুর ন দীসই।
ভুসূকু ভণই মূঢ়া-হিঅহি ণ পইসই॥
(কারে করি গ্রহণ আমি, কারেই ছেড়ে দেই?
হাঁক পড়েছে আমায় ঘিরে আমার চৌদিকেই।
হরিণ নিজের শত্রু হ’ল মাংস-হেতু তারই,
ক্ষণকালের জন্য তারে ছাড়ে না শিকারী।
দুঃখী হরিণ খায় না সে ঘাস, পান করে না পানি,
জানে না যে কোথায় আছে তার হরিণী রানি।
হরিণী কয়, হরিণ, আমার একটা কথা মান্ তো,
চিরদিনের জন্য এ-বন ছেড়ে যা তুই, ভ্রান্ত!
ছুটন্ত সেই হরিণের আর যায় না দেখা খুর—
ভুসুকুর এই তত্ত্ব মূঢ়ের বুঝতে অনেক দূর।)
------------------------'------------'-''
লুইপা
রাগ-পটমঞ্জরী
ভাব ন হোই অভাব ণ জাই ।
অইস সংবোহেঁ কো পতিআই ॥
লুই ভণই বঢ় দুলক্খ বিণাণা ।
তিঅ ধাএ বিলসই উহ লাগে ণা॥
জাহের বানচিহ্ন রূব ণ জাণী ।
সো কইসে আগম বেএঁ বখাণী ॥
কাহেরে কিস ভণি মই দিবি পিরিছ্ছা ।
উদক চান্দ জিম সাচন মিচ্ছা ॥
লুই৫ ভণই মই ভাবই কীস।
৯জা লই অচ্ছম তাহের উহ ণ দিস ॥
(ভাব-ও হয় না, না-যায় অভাবও,
এমন তত্ত্বে কী-বা জ্ঞান পাব?
লুই বলে, বোঝা ভীষণ কষ্ট,
ত্রিধাতু-বিলাসে হয় না স্পষ্ট।
যা-কিছু অরূপ, যা অতীন্দ্রিয়
আগম-বেদে কি তা ব্যাখ্যনীয়?
কী জবাব দেব—জলে বিম্বিত
চাঁদ সে সত্য, নাকি কল্পিত?
লুই বলে, কোনো কিছু নাই জানা,
কই আছি, নাই তারই যে ঠিকানা।)
------''----------------'--------
লুইপা
রাগ-পটমঞ্জরী
কাআ তরুবর পাঞ্চ বি ডাল।
চঞ্চল চীএ পইঠা কাল॥
দিঢ় করিঅ মহাসুহ পরিমাণ ।
লুই ভণই গুরু পূচ্ছিঅ জাণ ॥
সঅল সমাহিঅ কাহি করিঅই ।
সুখ দুখেতেঁ নিচিত মরিঅই॥
এড়িঅউ ছান্দ বান্ধ করণ কপটের আস ।
সূনূ পাখ ভিড়ি লাহু রে পাস ॥
ভণই লুই আম্হে ঝাণে দীঠা ।
ধমণ চবণ বেণি পিন্ডী বইঠা॥
(শরীরের গাছে পাঁচখানি ডাল—
চঞ্চল মনে ঢুকে পড়ে কাল।
দৃঢ় ক’রে মন মহাসুখ পাও,
কী-উপায়ে পাবে গুরুকে শুধাও।
যে সবসময় তপস্যা করে
দুঃখে ও সুখে সেও তো মরে।
ফেলে দাও পারিপাট্যের ভার,
পাখা ভর করো শূন্যতার—
লুই বলে, ক’রে অনেক ধ্যান
দেখেছি, পেয়েছি দিব্যজ্ঞান।)
-------------------
কাহ্নপা
রাগ-পটমঞ্জরী
আলিএঁ কালিএঁ বাট রুন্ধেলা ।
তা দেখি কাহ্ন বিমণা ভইলা।।
কাহ্ন কহি গই করিম নিবাস ।
জো মণ গোঅর সো উআস ॥
তে তীনি তে তীনি তীনি হো ভিন্না।
ভণই কাহ্ন ভব পরিচ্ছিন্না ॥
জে জে আইলা তে তে গেলা ।
অবণাগবণে কাহ্ন নিঅড়ি বিমণা।।
হেরি সে কাহ্ন নিঅড়ি জিনিউর বট্টই।
ভণই কাহ্নি মো হিঅহি ন পইসই ॥
(আলিতে কালিতে পথ আটকায়,
তাই দেখে কানু বিমনাঃ, হায়!
কানু বলে, কই করব রে বাস?
যারা মন জানে তারা উদাস।
তিন জন তারা, তারা যে ভিন্ন,
কানু বলে, তারা ভবচ্ছিন্ন।
এই আসে তারা, এই হয় হাওয়া
বিমনা কানু এ’ আসা ও যাওয়ায়।
নিকটেই জিনপুর: কিভাবে
মোহান্ধ কানু সেখানে পালাবে?)
-----------------------------
বিরুবাপা
রাগ-গবড়া।
এক সে শুন্ডিনী দুই ঘরে সান্ধই।
চীঅণ বাকলত বারুণী বান্ধই৪ ॥
সহজে থির করি৫ বারুণী সান্ধ।
জে অজরামর হোই দিঢ় কান্ধ॥
দশমি দুআরত চিহ্ন দেখইআ।
আইল গরাহক আপণে বহিআ॥
চউশঠী ঘড়িয়ে দেউ পসারা ।
পইঠেল গরাহক নাহি নিসারা ॥
এক খড়ুলী সরুঅ নাল ।
ভণন্তি বিরুআ থির করি চাল ॥ [
(এক সে শুঁড়িনি, ঢোকে দুইখানি ঘরে,
চিকন বাকলে মদ্য ধারণ করে।
সহজে এ-মদ চোলাই করো রে, তবে
অজর অমর দৃঢ়স্কন্ধ হবে।
দশমীর দ্বারে ছদ্ম আমন্ত্রণ
দেখে, খদ্দের সেদিকে ধাবিত হ’ন—
পসরা সাজানো চৌষট্টি ঘড়ার,
খদ্দের ঢুকে বা’র হয় না রে আর।
একটাই ঘড়া, অতি-সরু মুখ তায়—
বিরু বলে, ঢালো ধীরে ধীরে ঘড়াটায়।)
-----------------------------------
শবরপা
রাগ-বরাড়ি (বলাড্ডি)
উঁচা উঁচা পাবত তহিঁ বসই সবরী বালী ।
মোরাঙ্গ পীচ্ছ পরিহাণ সবরী গীবত গুঞ্জরী মালী ॥
উমত সবরো পাগল সবরো মা কর গুলী গুহারী?
তোহেরী ণিঅ ঘরিণী ণামে সহজ সুন্দরী॥
ণাণা তরুবর মৌলিল রে লাগেলী ডালী ।
একেলী সবরী এ বণ হিন্ডই কর্ণ কুন্ডল বজ্রধারী ॥
তিঅ ধাউ খাট পড়িলা সবরো মহাসুহে সেজি ছাইলী ।
সবরো ভুঅঙ্গ ণইরামণি দারী পেম্ম রাতি পোহাইলী ॥
হিঅ তাঁবোলা মহাসুহে কাপুর খাই।
সুণ নৈরামণি কন্ঠে লইআ মহাসুহে রাতি পোহাই ॥
গুরুবাক্ ধনুআ বিন্ধ ণিঅ মনে বাণেঁ ।
একে সর সন্ধানে বিন্ধহ পরম ণিবাণেঁ ॥
উমত সবরো গরুআ রোসেঁ।
গিরিবর সিহর সন্ধি পইসন্তে সবরো লোড়িব কইসে ।।
(উঁচু পর্বতে বাস করে এক শবরী বালা,
ময়ূরপুচ্ছ পরনে, গলায় গুঞ্জামালা।
মত্ত শবর, পাগল শবর, কোরো না গোল,
সহজিয়া এই ঘরনিকে নিয়ে দুঃখ ভোল্।
নানা গাছপালা, ডালপালা ঠ্যাকে আকাশ-তলে;
একেলা শবরী কুণ্ডলধারী বনস্থলে।
ত্রিধাতুর খাটে শবর-ভুজগ শেজ বিছায়,
নৈরামনির কণ্ঠ জড়িয়ে রাত পোহায়,
কর্পূরযোগে হৃত্-তাম্বূল চিবায় সুখে,
আত্মাহীনার আসঙ্গ তার মত্ত বুকে—
গুরুবাক্যের ধনুকের তিরে আপন মন
গেঁথে ফেলে পাও পরিনির্বাণ, পরম ধন।
কোথায় লুকালে, শবর আমার, অন্ধকারে?
খুঁজব তোমাকে কোন্ গিরিখাতে, কোন্ পাহাড়ে?
----------'---------------------------------'-
গুন্ডরীপা
রাগ-অরু
তিয়ড়া চাপী জোইনি দে অঙ্কবালী।
কমলকুলিশ ঘান্টে করহু বিআলী॥
জোইনি তঁই বিণু খনহি ন জীবমি ।
তো মুহ চুম্বী কমলরস পিবমি।।
খেপহুঁ৪ জোইনি লেপন জাই।
মণিমূলে৭ বহিআ ওড়িআণে সমাই।।
সাসু ঘরেঁ ঘালি কোঞ্চা তাল ।
চান্দসূজ বেণি পাখা ফাল ॥
ভণই গুন্ডরী আম্ হে কুন্দুরে বীরা ।
নরঅ নারী মাঝেঁ ঊভিল চীরা ॥
(জঘনের চাপে, যোগিনী, আলিঙ্গন দে!
দিন কেটে যাক পদ্ম-বজ্র-বন্ধে।
মুখ-ভরা তোর কমলের রস, চুমুর চুমুকে খাব।
একমুহূর্ত না যদি থাকিস তাহলেই ম’রে যাব।
খেপে গেছি আমি, যোগিনী আমার, মেয়ে,
ঊর্ধ্বলোকেই করেছি যাত্রা মণিমূল বেয়ে বেয়ে—
শাশুড়ির ঘরে তালাচাবি হ’ল আঁটা
চাঁদ-সূর্যের দু’পাখা পড়ল কাটা।
গুণ্ডরী বলে, আমি সুরতের হেতু
নর-নারী-মাঝে ওড়ালাম কামকেতু।
----------------'-------''----'-----
ডোম্বীপা
রাগ-ধনসী
গঙ্গা জউনা মাঝেঁ রে বহই নাঈ ।
তহিঁ চড়িলী মাতঙ্গি পোইআ লীলে পার করেই ॥
বাহ তু৩ ডোম্বী বাহ লো৪ ডোম্বী বাটত ভইল উছারা ।
সদ্ গুরু পাঅ-পসাএঁ জাইব পুণু জিণউরা ॥
পাঞ্চ কেড়ু আল পড়স্তে মাঙ্গে পীঠত৬ কাছী বান্ধী ।
গঅণ দুখোলে সিঞ্চহু পাণী ন পইসই সান্ধি ॥
চান্দ সূজ্জ দুই চাকা সিঠি সংহার পুলিন্দা।
বাম দাহিণ দুই মাগ ন চেবই বাহ তু ছন্দা ॥
কবড়ী ন লেই বোড়ী ন লেই সুচ্ছলে পার করেই।
জো রথে চড়িলা বাহবা ণ জানি কুলেঁ কুল বুলই ॥
(পারাপারের নৌকা চলে গঙ্গা-যমুনায়,
মাতঙ্গিনী, যোগীকে পার করে সে-খেয়ায়।
সাঁঝ ঘনাল, বাও রে, ডোমনি, জোরসে চালাও না’,
গুরুর কৃপায় জিনপুরে ফের রাখব আমার পা।
পাঁচটি বৈঠা পাছ-গলুইয়ে, পিঁড়ায় বাঁধা দড়ি,
আকাশ-সেঁউতি দিয়ে নৌকা সেচো পড়িমরি।
সূর্য-চাঁদের লাটাই-দু’টি গোটায় এবং খোলে,
ডাইনে বাঁয়ে পথ নাই রে, যাও বরাবর চ’লে!
পয়সাকড়ি নেয় না ডোমনি, স্বেচ্ছায় পার করে;
বাইতে যে-জন জানে না, সে ঘুরে ঘুরে মরে।)