তোমার জন্মক্ষণ,
আমার জন্মের বহু আগে।
আমার যৌবনের প্রভাত লগ্নে,
তোমার বুকফাটা যৌবন করেছে শিহরিত,
আবার চক্ষু নিমজ্জিত,
হঠাৎ যেন প্রবল ঝড়ে অশান্ত প্রকৃতি।
তারপর কতটা বসন্ত কেটে গেল!
তোমাকে খুঁজেছি আমি
সবুজ ধান ক্ষেতে, পান ক্ষেতে,
গহিন বনে, নীলিমার ডাগর চোখের মিষ্টি দোলায়,
পাখিদের কোলাহলে, শিশুদের নরম ভালবাসায়।
আত্মভোলা হয়ে ছুটে গিয়েছি
যেখানে দিগন্ত ডুব দেয়,
জেগে উঠে বালুচর ।
কাননে ঘুরেছি,
কুসুম কুঁড়িয়ে কুঁড়িয়ে মালা গেঁথেছি।
শুধু তোমাকে খুঁজতে গিয়ে
ভিজে গেলাম বৃষ্টিধারায়,
কোন এক ঘোর অমাবস্যা রাতে,
পিতা, আমার ছত্রছায়া, মেঘ হয়ে উড়ে গেল বলে।
অবশেষে, কনকনে শীতে জড়োসড়ো পথের বৃদ্ধ ভিক্ষুকটি বলেছিল,-
তুমি বহু প্রেমে মাতোয়ারা, অনন্ত যৌবনা,
রসে ভরপুর।
জানি, তোমার অনন্ত বাসনা, অনন্ত প্রেম।
তুমি সদা ক্রন্দনরত
পথের অনাহারী শিশুটির জন্য,
তুমি কখনো ছুটে যাও গ্রাম বাংলায়,
কখনোবা সৈকতের লোনা জলে।
তুমি যোদ্ধা অতি মহান,
কখনো কাঁপিয়ে দাও এই ধরিত্রী।
তুমি পরকীয়া, কর প্রেম, গভীর আবেদনে।
তোমার দেহে অবগাহনে ,
থাকে মুগ্ধতা হৃদয়ে,
ছোঁয়াতে সৃষ্টির নেশা,
তুমি ধরা দিয়েছ বহুজনে।
কারো হয়েছো রানী, কারো বিরহীনী।
তুমি আরাধ্য শান্তি নিকেতনে।
কখনো ঘুরেছ দ্বারে দ্বারে,
কখনো বা বিদ্রোহী।
তোমার প্রেমের অনন্ত তৃষায়,
নাম তার জীবন, আনন্দ হারিয়ে
বার বার ফিরে আসে এ বাংলায়,
কখনো হাঁস, কখনো শঙ্খচিল, কখনো শালিক ।
যেন উম্মাদ।
তুমি সেই বনলতা সেন, হৃদয়ের কারুকার্য,
জীবনের আনন্দ, হাজার বছরের পথ চলা।
আমি নজরুল হবো,
বলবো তোমাকে,
"আমি চিনেছি তোমারে, আমার ভাঙিয়া গিয়াছে বাঁধ।"
আমি এখনো তোমার জন্য রাতজাগা এক পাখি,
শুধু তোমার জন্য,
পাশে অহেলায় পড়ে থাকে,
না পাওয়ার বেদনায় কাতরানো আমার সোনা বৌ।
অত:পর চলে যায় ঘুমের দেশে।
তুমি হাজার বছর বয়সী সভ্যতা,
হচ্ছো তুমি দিন দিন রূপময়,
তেমনি বাড়ছে তোমার ক্ষুধা।
সুনীল দা কে তেত্রিশ বছর অপেক্ষায় রেখেছ,
কত্তোকিছু তাঁর অভিলাষ ছিল।
কতটুকু তাঁকে দিয়েছ বলো?
তবে সত্যি বলছি,
আমি যদি তোমার প্রেমহীন হয়ে পড়ি,
"আবার আসিব ফিরে" বলার সময় দেব না।
হবো নিরোদ্দেশ।
বলো, তুমি বলো,
কবিতা, কখন তুমি ফিরে আসবে,
আমার হৃদয়ে পোতবে প্রেমের খুঁটি?
আমি তোমার প্রেম চাই, অনন্য প্রেম।
করি এই প্রেম নিবেদন।
---------