হিংস্র পশুদের দল কবিতা শোনে না,
বিষাক্ত পতঙ্গ কবিতা শোনে না
এবং যে পাখি রক্ত খায় সেও কবিতা শোনে না।
সমস্ত পাথর কবিতা পড়ে না,
কবিতা পড়ে না- নিরবিচ্ছিন্ন আঁধার,
কুয়োর প্রাণীরা, সময়ের তপস্বী বিড়াল।

যে পাখি গান গায় সে কবিতা বোঝে;
নদী কবিতা বোঝে, ঝর্ণা কবিতা বোঝে,
পাহাড়ও নীরবে শোনে কবিতার কথা।
শান্ত সাগরে কবিতা ঢেউ খেলে;
খাল, বিল, জলাশয় চিরদিন পড়ে থাকে
চিরায়ত কবিতার ক্যাম্পাসে।

ওই যে বৃষ্টির কথা বলো, সেও রিমঝিম তালে
কবিতা পড়তে পড়তে থেমে যায়।
জোনাকিরা রাতের পল্লীতে খোঁজে কবিতার রঙ;
চাঁদের মোহন রূপ কবিতার পরশে।
ঝলমল স্বরে কবিতা পড়ে ভোরের শিশির।

শিশুরা ছুটলেই কবিতা হয়ে যায়,
মায়ের বকুনি জন্ম দেয় সুমিষ্ট কবিতা,
মহীয়সী নারী কবিতাপ্রেমে আচ্ছন্ন থাকে;
মহান নেতারা পটভূমি আঁকে শ্রেষ্ঠ কবিতার।
প্রকৃত প্রেমিক কবিতার মাঝে বুঁদ হয়ে থাকে।

নদী পড়ে মনের খেয়ালে জলের কবিতা,
নীলাম্বর পড়ে মেঘের দেয়াতে নীলের কবিতা,
বাতাসে দোল খায় জীবনের কবিতা।
আগুনের কাছে আছে সাত্ত্বিক কবিতা;
সূর্যের হাসিতে মুক্তি পায় আলোর কবিতা।

এখনও কবিতা পড়ে কষ্ট ভোলে অশান্ত প্রবীণ;
এখনও কবিতা পড়ে পথ খোঁজে যুবক-যুবতী।
এখনও উদ্যানে ফুলেরা কবিতা পড়ে,
এখনও এই মাটির বুকে হয় কবিতার চাষ।

যখন পাখিরা গাইবে না,
যখন নদীতে থাকবে না কলকল ধ্বনি,
যখন বৃক্ষের কবিতাপঠন শেষ হবে,
সমস্ত পৃথিবী হয়ে যাবে প্রাণহীন মরুভূমি।

যেদিন কেউ কবিতা পড়বে না, কবিতা শুনবে না,
সেদিন আমি মৃত্যুর কথা ভাববো।
অতএব, আমি কবিতায় আছি, কবিতায় থাকব।
----------------------------------------
রচনা: ০৪/৪/২০২০ ইং, চট্টগ্রাম।