এবার একটা গল্প শোনাই। শুনবেন তো সবাই? সেদিন রাতে টিভি দেখছিলাম। ফেসবুক মেসেঞ্জারে বার্তা এল,

- আপু কেমন আছেন?

কুশল বিনিময়ের পর সে আবার জিজ্ঞেস করল,

- আচ্ছা আপু বিবেক কি শূলে চড়তে পারে?

আমি বললাম,
- তা পারে। কিন্তু এ প্রশ্ন?
ভাইটি বলল,
- আপনি বইটির প্রচার করছেন, তাই বললাম। কীভাবে বিবেক শূলে চড়ে?
- তাহলে কিনে ফেল সাদ্দাম হোসেন ইশতিয়াক এর ‘‘শূলে চড়া বিবেক’’। আর জেনে নাও কীভাবে?
- আমি অনেককে জিজ্ঞেস করেছি। তারা বলেছে বিবেক শূলে চড়তে পারে না।
- আচ্ছা বিবেক কী?
- ন্যায় অন্যায় বোধ নয় কি?
- হুম। বিবেক অন্যায় করা থেকে বিরত রাখে বা বাধা দেয়। মন্দ থেকে দূরে থাকে।
- তাহলে শূলে চড়ে কেমনে?
- মানুষকে কখন শূলে চড়ানো হয়, যখন সে গুরুতর অপরাধ করে। তাই না? বিবেকও তাই।
- কিন্তু বিবেক কীভাবে অপরাধ করে?

আমি হাসলাম। বললাম,

- তোমার সামনে প্রতিনিয়ত যে ঘটনাগুলো ঘটছে তার মধ্যে মানবতাবিরোধী ঘটনাও তো ঘটে, কিন্তু সেগুলোর প্রতিবাদ করতে পারো?
- কিছু করি, কিছু পারি না।
- যেগুলো প্রতিবাদ করতে পারো না, তার জন্য বিবেক কি প্রশ্নবিদ্ধ হয় না? কাঠগড়ায় দাঁড়ায় না? সাজাপ্রাপ্ত হয় না? মনে হয় না এমন ঘটনা প্রত্যক্ষ করার আগে মৃত্যুই শ্রেয় ছিল!

তারপর আমাদের আর বার্তা লেখা হলো না।

এরপর গত ১৮ই ডিসেম্বর হাতে পেয়েছি সাদ্দাম হোসেন ইশতিয়াক এর প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘‘শূলে চড়া বিবেক’’। বইটির প্রতিটি কাব্যে বেরিয়ে এসেছে মানবতার জন্য আর্তনাদ, নীতি আর দুর্নীতির দ্বন্দ্ব, অত্যাচার -অবিচার এর করুণ চিত্র। আর এসব দেখে দংশিত হয় বিবেক। এসব চিত্রে কবি তার কবিতায় চেতনাবোধ জাগিয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন কবির ভাষায়,
‘‘কাব্যিক -খনি মধুমাখা ধ্বনি আসে নাতো কবিতায়;
ভেঙে নীরবতা লিখি তেতোকথা জাগাতে যে চেতনায়।’’

সকল অন্যায়, অধর্মকে দূরে রেখে শুদ্ধ বিবেক চর্চার আহব্বান প্রতিধ্বনিত হয়েছে এই গ্রন্থে-

‘‘ন্যায়ের আলো না হোক কালো জলুক
প্রতিক্ষণ;
এই কামনা এই বাসনা পুষুক তরুনমন।
ন্যায়ের বাতি রাতারাতি জ্বলে নাতো ভবে;
ধৈর্য ধরে সহ্য করে জ্বালাতে তো হবে।’’

কবির এই চেতনা বলে দেয় দেশকে ভালোবেসে এগিয়ে নিতে তরুণদের উদ্যমী হতে হবে, করতে হবে শুদ্ধ বিবেকের চর্চা। আর এজন্য সাহসী আর সহ্যশীল হতে হবে।

আসুন বই পড়ি নিজেকে ভালো রাখতে। নিজেকে ভালবাসুন, নিজের যত্ন নিন, বেশি বেশি বই পড়ুন।