জাল নিয়ে কাঁধে বাপ-ব্যাটা যায় মাতামুহুরীর তটে;
বাপ ফেলে জাল ছেলে চেয়ে থাকে বসে থেকে ঐ বটে।
মাছের আশায় অপলক ভাবে সন্ধানী আঁখি মেলে;
হায় আফসোস! পায় নি তো মাছ সারাদিন শ্রম ঢেলে।
পুরোদিন ছিল তৃষিত-উপোস তাকিয়ে নীলিম জলে;
নদী বয়ে যায় হুঙ্কার ছেড়ে ধ্বনি তুলে কলকলে।
যেন বলে যায়, ‘দেবো না তোমায় ছোট-বড় কোনো মাছ’;
মিলবে না দেখা হৃদয় জমিনে সহানুভূতির গাছ।
ছলছল চোখ মুছছে বা-জান বেদনার উচ্ছ্বাসে;
রক্ত ঝরিয়ে সূর্য পালায় দিগন্তে বনবাসে।
বাড়িতে উপোস রয়েছে স্বজন কাঁদে যাতনার ঘাতে;
তাইতো বা-জান মুছে যায় জল জলমাখা সেই হাতে।
দূর মসজিদে সুললিত সুরে হাঁকছে মুয়াজ্জিন;
নদীর পানিতে ইফতার করে বাজাতে রোজার বীণ।
ইফতার শেষে উদ্ধত হাত খোদার আরশ পানে;
নয়নের জল নদীতে মিশিয়ে ভাসছে অশ্রুবাণে।
হারিকেন হাতে সন্ধ্যাবেলায় শূন্য হাতেই ফিরে;
অথচ শতেক খাবার ধনীর চারিধার আছে ঘিরে।
সাম্যবোধের শিক্ষাটা যদি সিয়াম না দিতে পারে;
কিসের জন্যে রমজান-রোজা এসেছে সবার ধারে?