আমার নেতার চরিত্রটা ফুলের মতোই সাফ;
চরিত্রে তার দাগ লাগালে করব না তো মাফ।
নেতা আমার সমাজসেবী, অন্ধ লোকের আলো;
সব নেতারা খারাপ হলেও আমার নেতা ভালো।
হাজার দেবীর করছে পুজো, কুজো হয়ে রাতে;
নেতার এমন কর্মে রে কার চুল ছেঁড়া যায় তাতে!
চায়ের কাপে, কথার তাপে– নিন্দা করিস নেতার;
‘চেতছি কেন?’– প্রশ্ন করিস, ‘এটাই হেতু চেতার!’
রাখতে ধরে নেতার সুনাম ধরব জীবন বাজি;
নেতার তরে যুদ্ধ করে হবো শহীদ-গাজি।
ঘর্ম ফেলা-ই কর্ম আমার, বর্ম-শিরোস্ত্রাণ;
নেতা-ই আমার প্রেম-সাধনা, নেতা-ই আমার জান।
নেতার তরে হইতে রাজি সাতটা সাগর পার;
হয় নি সুযোগ আসতে আজও সুদৃষ্টিতে তার।
নেতার যারা কর্মী আছি, কর্মে বাঁচি রোজ;
ছ মাস পরে কষ্টে নেতা নেন আমাদের খোঁজ।
চাই না আমি পদ-পদবী, চাই না হাজার টাকা;
নেতা-ই আমার মা-বাবা আর নেতা-ই মামা-কাকা।
মাঝেমাঝেই নেতা এসে হাত নেড়ে যান, চাই!
এটুক ছাড়া নেতার কাছে কিচ্ছু চাওয়ার নাই।
নেতার সাথে তুলছি ছবি, ফুলছি তাতেই আমি;
আর কে আছে বাংলাদেশে আমার চেয়ে দামি!
নেতার কথায় ছিঁড়ব বেলট, মারব হাজার মানুষ;
নেতার নামে তুলব নীলে হাজার কথার ফানুশ।
নেতার সাথে জেতার আশায় চেতছি যখন রাগে;
আগুনঝরা মুখটা দেখে হাজার মানুষ ভাগে।
যার আশাতেই করছি আমি হাজার টাকা ধার;
হয় নি সুযোগ আসতে আজও সুদৃষ্টিতে তার।
কর্মী হয়ে ধন্য হলাম, হলাম দারুণ খুশি;
নেতার মতোই নেতা হবো, স্বপ্ন মনে পুষি।
কিন্তু নেতা হয় নি হওয়া খুন করেছি তাই;
নেতার তরে যা করেছি সবই হলো ছাই।
বঙ্গদেশের চামচা মোরা মগজ পুরোই ফাঁকা;
নেতার পিছে সোনার জীবন করছি আঁকা-বাঁকা।
রাজপথে নিজ রক্ত দিলাম ভক্ত হতে যার;
হয় নি সুযোগ আসতে আজও সুদৃষ্টিতে তার।
১৮-ই মে, ২০২৩
লামা, বান্দরবান।
#