এখনো ফুল ফুটে ডাঙাপাড়ার বিলে,
ডুব সাতার খেলে পানকৌড়ি,
ভাসতে ভাসতে সাদা হাঁসটাও ডুব দেয়
পানকৌড়ি হবার ব্যর্থ প্রচেষ্টায়।

এখনো শাপলা শালুক ফুটে বিলের সুঠৌল বুকে,
উত্তরের বাতাসে দক্ষিনে দোলে,
একটার পর আর একটা ফোটে, তারপর আরো একটা,
শূন্য পুরনের পূর্ণ প্রচেষ্টায়।

অথচ, বিল-পাড়ের বকুল গাছের তলা আজও শূন্য।
আমি আছি, তুমি নেই।
বসতে বসতে মেরে ফেলা বকুল তলার ঘাসগুলো আজ তরতাজা।
অনেকদিন আমাদের স্পর্শ পায় নি।
এ তরতাজা ঘাস নয়, আমার বুকের তরতাজা ক্ষত।


কলিম মাঝি আজো বসে থাকেন যাত্রীর প্রত্যাশায়।
অনেকদিন হল
আমার পকেটের টাকা যায় না কলিম মাঝির পকেটে।
একদিন দশ টাকা দিলাম। ফিরিয়ে দিয়ে বলল,
যাত্রী নৌকায় না তুলে টাকা পকেটে তুলি না।
তবু তিনি আমায় তুলতে পারলেন না তার নৌকায়,
আমি দশটা টাকা তুলতে পারলাম না তার পকেটে,
তুমি নেই, তাই।


একদিন আমি চলে যাচ্ছিলাম বর্ষার স্রোতের মতন,
অভিমানের তীব্র বেগে।
তুমি বাধ দিলে না।
আজ বলি,তোমার বাধ ভাঙার সাধ বা সাধ্য আমার ছিল না।
বাধের একটু বাধা পেলেই থেমে যেত অভিমানী খরস্রোত!

আমি চলে গেলাম সাগর পানে।
তীব্র রোদে সাগরে যাবার আগেই শুকিয়ে যাচ্ছি
নতুন নদীর বালু শুষে নিচ্ছে আমায়
আমি হারিয়ে যাচ্ছি, তোমার বাধের অপেক্ষায়।

আজও নির্লজ্জ্বের মত পিছন ফিরে তাকাই,
তুমি বাধ দেও কিনা!
কিংবা, হাত নেড়ে থামতে বলো কিনা!
হাত নেড়ে থামতে বললে না, হাত নেড়ে বিদায় দিলে।
আমি হারিয়ে গেলাম।

তারপর আজো ভাবি,
আমি হারিয়ে গেলাম নাকি তুমি হারালে আমায়?