বসন্তের কোন এক পড়ন্ত বিকালে
একা আমি দাঁড়িয়ে রেলিং ধরে
খোলা আকাশে তাকিয়ে...।
সামনে রাস্তা ধরে ছুটে চলেছে
মানুষ তার জীবনের প্রয়োজনে।
ভাবনা নেই সেখানে আমার...
আমি ভাবছি জীবনের কথা
একটু আনমনা
অনেকটা বিষন্নতায়
কী যেনো খুঁজে চলেছি আমি।
মাঝে মাঝে এক পশলা বাতাস এসে
ছুঁয়ে যায় আমাকে...।
গাছের শাখে সবুজ কচি পল্লব
হেলে দুলে নাচে।
তাদের কণ্ঠে নতুন জীবনের গান
গল্পে আছে কতাে না স্বপ্নের কথা।
আমি ভাবছি শুধু ভাবছি
এ জীবনের কথা...।
আকাশের নীলিমায় তাকিয়ে থাকা
এ আঁখিদ্বয় হঠাৎ নড়ে উঠলো।
এক ঝাক পাখি উড়ে যায়।
আকাশ থেকে আকাশের নীলিমায়।
উড়ে ডানা মেলে
দূর থেকে দূরে সীমানা পেরিয়ে।
যন্ত্রণায় কাতর আমার এ মন
ঐ পাখিদের মতো
সেও উড়ে যেতে চায়
আকাশের বুকে হারিয়ে
ঐ নীলিমায়,
ঐ পাখিদের মতো ডানা মেলে
মুক্ত জীবনের গান গেয়ে
আমার এ মন উড়ে যেতে চায়
জীবনের ভার এড়িয়ে!
আসলে সে পারে না
পারে না তার যে ডানা নেই।
অবুঝ সে মন তা মানতে চায় না
মানতে পারে না তার পরেও
ইচ্ছে ভরে অপূর্ণ এ মন
চাপা পড়া ঘাসের মতো ধূসর
জীবনের রঙ হারিয়ে সে এখোন
বিমলিন নিষ্প্রাণ এক স্বপ্নহীন।
ফ্যাল ফ্যাল করে চেয়ে
ঐ আকাশের পানে।
হঠাৎ সম্বিত ফিরে দেখি
কপােল বিন্দু বিন্দু ঘাম জমে
বুকের ভিতর দুর দুর করে..
ডুকরে উঠছে এক গোপন ব্যথা।
ঘন নিশ্বাসে বিকৃত মুখশ্রী
তাহলে কী তবে
পাওয়া না পাওয়ার দ্বন্দ্বে এমোন হলো!
একা আমি দাঁড়িয়ে আছি রেলিং ধরে
খোলা আকাশে তাকিয়ে,
দিনের শেষভাগের পরিশ্রান্ত সূর্য
তখনো আপন সোনা ঝরা আলোয়
রাঙিয়ে রেখেছে এ বসুধা।
আস্তে আস্তে হারিয়ে যাবে সে
আকাশের বুকে,
মাঝে মাঝে এক পশলা বাতাস এসে
ছুঁয়ে যায় বিমত্ত এই আমাকে।
আমি ভাবছি শুধুই ভাবছি
জীবনের কথা।
ধীরে ধীরে আঁধারের গহ্বরে
তলিয়ে যায় পৃথিবী।
আমি তাকিয়ে থাকি খোলা চোখে...
(প্রকাশকালঃ ফেব্রুয়ারী-২০০৬)