আজ কেমন আছো তুমি?
দেখছো কতটা বোকার মতোই না প্রশ্নটা করেছি!
তুমি নিশ্চয়ই অনেক ভালো আছো,
সুখে আছো, তাই না?
তোমাকে ছোট্ট একটি গল্প বলি,
তুমি হয়তো জানো না,
এই বয়সে এসেও তোমার কথা ভেবে হঠাৎ কখন
চোখে জল গড়িয়ে পড়ে বুঝে উঠতে পারি না।
আমিও বেশ অবাক হই।
তুমি তো ফেলে গেছো বহু বছর হয়ে গেল,
তার পরেও কেন এমন হয়?
যেমন ধরো আজ সকালের ঘটনাই,
আমি বাসের জানালার পাশে বসে
দুর্বার গতিতে বাস ছুটে চলেছে,
হটাৎ তোমার কথা মনে পড়তেই
চোখ জলে ছলছল হয়ে ওঠে, বয়ে যায় জলধারা,
আজ যেন সে ধারা থামতেই চাইছিলো না।
বোবা গোঙ্গানিতে ভিতরটা ডুকরে ডুকরে উঠছিলো,
ভাগ্যিস চোখে কালো গ্লাস পরা ছিল, মুখে ছিল মার্কস।
পাশের ছিটে বসে থাকা চাচা'য় বারবার আমাকে দেখছিলো,
তাতে আর কি
আমি তো চোখ বন্ধ করে নিজেকে লুকিয়ে রেখেছিলাম,
তিনি কি ভেবেছেন তাতে অবশ্যই আমার কোন ভাবনা ছিলো না।
তুমি কি জানো,
অফিসেও মাঝে মাঝে এমন হয়,
দৌড়ে ওয়াস রুমে যাই,
তখন চোখের লোনা জল নিয়ে সমস্যা হয়না,
বেসিনেই প্রবাহিত হয়ে যায়।
আমি থ'হয়ে দাঁড়িয়ে থাকি গ্লাসের সামনে,
আর নিজেকে প্রশ্ন করি কেন এমন হয়?
কোন উত্তর খুজে পাই না।
মজার ব্যাপার কি জানো,
লাল টকটকে চোখে যখন বেরিয়ে আসি,
স্টাফরা তখন জিজ্ঞেস করে,
স্যার আজ কি হলো আপনার, মন খারাপ?
নির্মোহ একটি হাসি দিয়ে কখনো বলি,
না দাঁতের ব্যাথাটা হটাৎ বেড়ে গেল আরকি,
কখনও বলি মাইগ্রেন, কখনও বা মাথা ব্যাথা।
নিজের সঙ্গে নিজে চুরি করছি দেখে লজ্জাও হয়।
আচ্ছা সত্যি করে বলো তো,
তোমার কি কখনও এমন হয়েছে?
ওহ দেখেছো আসল কথা বলতে ভুলে গেছি,
কি দুর্ভাগ্য দেখ, পকেট হাতড়ে দেখি
কোন টিস্যু পেপার নেই!
কি আর করা গাড়ী থেকে নেমেই
আস্তে করে গলির ভিতরে ঢুকে শার্টের হাতলে
চোখ মুছে সোজা ঢুকে গেলাম রেস্টুরেন্টে,
ফ্রেস হয়েই বয়কে একটি কোল্ড কফি দিতে বলি,
কি আশ্চর্য! সে যেন আকাশ থেকে পড়লো।
আমিও নাছোড়বান্দা,
শীতের সকালেই আমার কোল্ডই কফি চাই!
তোমার মনে কি আছে?
একটি কোল্ড কফি আমরা কিভাবে
একটু একটু করে ভাগাভাগি করে খেতাম,
যেন শেষই হতো না।
অগত্য অফিসে দেরি,
বসকে বললাম, সরি বাসটা মিস করেছি।
তবে কি এটাই ভালবাসা?
যেটা তুমি অনেক অবহেলায় নিঃশ্বেস করেছিলে,
আমি ঠিক বুঝে উঠতে পারি না,
আজও বুঝে উঠতে পারি না!