দয়া করে বলো,
মহুয়া বনের কোন গাছটিতে তুমি মৌচাক বেঁধেছ?
আমার শীত ঘুম ভাঙিয়ে দিয়ে সেই যে চলে গেলে,
আর তো এলে না।
আজও আমি মধুর ফাঁকা বোতল হাতে দাঁড়িয়ে আছি,
উত্তর খোলা শিক ভাঙা জানালার উত্তরে কনকনে হাওয়ায়,
শ্রান্ত সংকুচিত দুটো চোখ মেলে,অন্তরঙ সারাটা বেলা জুড়ে
শুধু তোমারই প্রতীক্ষায়।
কিন্তু, আর যে পারিনা;
মুহূর্তের দমকা হাওয়ায় চোখে জ্বালা ধরে আসে।
হঠাত নোনতা জলে ঝাপসা হয়ে ওঠে উত্তপ্ত কৃষ্ণ কনীনিকা।
বুক ধরাস করে ওঠে, কোন ফাঁকে তুমি এসে চলে যাবে
আমার চির ঘুমের ঘোর ষড়যন্ত্রের অন্তরালে।
তাই শীতল আতঙ্কে ঘর্মাক্ত হয়ে ওঠে শরীর, শিওরে ওঠে পলক,
আমার রোগগ্রস্ত অগোছালো বিছানার দিকে তাকিয়ে।
চোখের তলায় অভিমানের গভীর কালি জমে ওঠে।
উত্তরে হাওয়ার গুপ্ত ইন্ধনে রোগ বাড়তে থাকে।
চারিদিকে ভীষণ অন্ধকার আজ আমার সাথী।
তবুও ক্রমাগত ফুরন্ত জ্বালানীর শেষ সম্বল দিয়ে
তোমাকে, শুধু তোমাকে দেখি আর পুলকিত হয়ে উঠি।
প্রকৃতির সব আলো আজ তোমার মৌচাকে বিচ্ছুরিত বর্ণালী।
বসন্তের প্রথম বার্তার স্পর্শে তোমার অফুরন্ত মধু রস হয়ে
ঝরে পড়ে অগণিত ঘাসের শীর্ষে।
সমস্ত ফুলেরা তোমাকে মধু দিয়ে অভিষিক্ত করার জন্য তৎপর।
আমার আলোর দিন শেষ, আমার কাজ শেষ।
শুধু আমি নিজের সেই পুরোনো বিরণ্জিত
বর্ণ দিয়ে আজও বর্ণিত করে চলেছি নিজেকে।
মধুর একটু লাল আভাও আমি পাইনি
মুখের ছোট্ট ব্রণ টা লাল করে তলার জন্য।
তাই আমি দিন দিন ফ্যাকাসে হয়ে উঠি।
শেষের সাইরেন বাজে।
পৌষ অলি আমায় ক্ষমা করো।
তোমার গুঞ্জন, পৌষের ডাক ক্ষীণ হয়ে আসে,
আমার গোঙানীর কর্কশ ধ্বণিতে।