সব শেষ, কাজ শেষ, চলা শেষ।
গোধূলির খেলা তাও শেষ।
অস্পষ্ট হয়ে এল শেষের সাইরেণ।
তবু রয়ে যায় শুরুর হারিয়ে যাওয়া ঠিকানা,
চোরা গলিপথ আর এক অজানা লেন।
শেষ শীতের ধূসর ধোঁয়াশায়
উবু হয়ে পড়ে থাকে পুরানো শহর।
স্মৃতির রঙ মাখে কালি পড়া হ্যালোজেন,
বাইপাসে চায়ের দোকানে পাতলা দুধের সর।
কেঁদে ওঠে সাড়ে বারো টার রাত
আর, ছানি পড়া চোখে জেগে থাকে একলা ফুটপাত।
শেষবারের মত বুক চিরে চলে গেল
পাশের বড় অফিসের সার্চলাইট।
রক্তহীন বুকে ঠান্ডায় জমে ওঠে পিত্ত রস, লালা রস,
হরেক রস আর রসস্ফীত আরাবিয়ান নাইট।
সকালের ট্রেনে আসা তাজা ছানার জল
চুয়ে চুয়ে পড়ে অনাব্রিত বক্ষ পটে।
পাশের চায়ের দোকানটিতে ভিড় বেড়ে ওঠে।
ভাঙা ভাঁড় থেকে ঝড়ে পড়ে অধক্ষিপ্ত চায়ের লিকার
ধূলোভরা খালি পেটে।
বেলা বাড়ে, অগণিত পদক্ষেপ ক্রমাগত ধর্ষিত ইষ্টক পাঁজরে
ঝড়ে পড়ে থুথু, বড় অফিসের বড় বাবু দের পানের পিক।
বড় পাঁচিলের রেচনক্রিত জল বয়ে চলে শিরশির করে,
তোলপাড় করে তোলে হৃদয়ের দিক-দিগ্বিদিক।
প্রচণ্ড নাসা গর্জনে চমকিত বর্ষিত অটল
থকথকে আঠাল জটিল রস ফ্যাকাসে মুখে।
মিশেছিল তাতে দু ফোটা চোখের জল,
উড়ন্ত শঙ্খচিলের মল কী জানি কোন ফাঁকে।
শাল পাতার পোকা খাওয়া ছিদ্র দিয়ে পড়েছিল ফুচ্কার।
নেড়ি কুকুর টার ঘা থেকে আক্রান্ত বিষাক্ত কষ
জ্বালা দিয়েছিল, বিষিয়ে তুলেছিল থ্যাঁতলে যাওয়া মন।
খোঁড়া ভিখারী র কাটা ছড়া রক্তও মানেনি বশ।
এইভাবে, ভোর সাড়ে পাঁচ টার চায়ের দোকানের সাড়ে বারোর রতন
জল ছিটিয়ে, দূর করেছে কত অমাবস্যার কালিমা।
রাত সাড়ে বারো টার ওয়াগন ব্রেকার সাড়ে আঠারোর কানাই
মাদক রসে মাতিয়ে তুলেছে কত জ্যোৎস্না সিক্ত পূর্ণিমা।
তোমারই বুক জুড়ে, রসে রসে ব্যর্থ হয় কত দিন রাত,
অব্যক্ত স্লোগানরত, তুমি ব্রিদ্ধ ফুটপাত।