স্বাধীন হঁয়েছি স্বাধীনতা পেঁয়ে
খুশির কথাই বটে,
পরাধীন হঁয়ে কাজ ক’রে যেছি
স্বাধীনতা নাই মোটে।
স্বাধীনতা মানে কি বাঁশ-ডগায়
পতকাটো ধ’রে তোলা,
না হুল্লোর ক’রে গলাটো ফাটিয়ে
“জয় হিন্দ্”টোকে বলা।
প্যাট তো ভরেনা বাতাসটো গিলে
খেটে-খুটে খেতে হয়,
তা বলে বিবেকটোকে বাঁধা দিয়ে
দাস হ’ সম্ভব লয়।
আমাদের পারা বাবুরাও খাটে
ইস্কুলে আপিসেতে,
লাল কালি দিঁয়ে দাগ দিঁয়ে দেয়
দেরি হলে সেথা যেতে।
মেনে লিছি আমি ঠিক লয় এটো
ল্যাটটো ক’রে সেথা ‘য’,
তাই বলে কি গো স্বাধীনতা নাই
একটুকু জিরেন্ ‘খ’ ।
তুমিতো অন্ততঃ শুদোবে আমাকে
কেনে দেরি হল বল,
সিটোকে না ক’রে মিনি কারণেতে
দাগটো দিলেই হল।
পতিদিন দেখি আরো কত জনা
পিছে আসে আগে যায়,
তাদের তলায় একটোও দাগ
কখুনো পড়েনা হায়!
থালেই দেখোগো দলের লুকেরা
কতই সুযোগ লেয়,
দলের বাইরে তুমি আছ বলে
তুমাকে চাপটো দেয়।
আজকের দিনে সেই চাপ পায়
কাজ করে যেবা বেশি,
সারা দিন খাটে, খেটে খেটে মরে
থালেই তারা তো খুশি!
খুব খুশি তারা সারাদিন যদি
তুমি থাক পাশে পাশে,
যিটো চায় তারা, সিটো পাবে বলে
বসে থাকে তার আশে।
চাকরের কথা লয় এটো শুদু
সবার কথা বলছি,
সরকারি, বেসরকারি, যে হও
তাদের কথা তুলছি।
চাকর আমরা সকলেই ঠিক
চাকরি লিয়েছি যবে,
বড়বাবুদের বস্ নাকি বলে
তাকে তো মানতে হবে!
ঠিক কথা মেনে লিতে হবে যদি
মানার মতন বলে,
একচোখো ক’রে আমাকে খাটাবে
বল কীভাবে তা চলে?
কুলি-মজুর, চাষা-ভুষো আমরা
খেটেই তো খেতে চাই,
বড় পদে আছ তুমি বড়-বাবু
তোমার নিয়ম নাই?
গরীব আমরা মুনিবকে বুঝি
করি, মুনিব যা বলে,
আমাদেরও ভাই প্যাটটো আছে
কীভাবে আমার চলে?
সারাদিন যেলে ষাট টাকা পাই
পাত পড়ে দুই গোণ্ডা,
শাগ্-ভাত খাই, মাছ ডিম নাই
চাইছি কি ছেনা-মণ্ডা?
বারো ঘণ্টায় মোটে ষাটটা টাকা
ঘণ্টার হিসেবে পাঁচ,
যেদিন পারি না কাজে যেতে থাকে
প্যাটেতে ছুঁচোর নাচ।
আমার খাটুনি, তোমার পয়সা
ব্যাঙ্কেতে জমিয়ে যেছ,
মেয়ে-মরদেতে কাজ করে যেছি
তার ফল তুমি পেছ।
এই স্বাধীনতা কি দিছে আমাকে
কই গতরের দাম,
সব যুগে কিগো দাসের মতন
ঝরাব গায়ের ঘাম?
লিজের কথা তো অনেক বলেছি
তোমাদের দুটো বলি,
স্বাধীনতা মানে ঠিক ভাবনার
স্বাধীনতা নিয়ে চলি।
স্বাধীনতা মানে তো চুষে ‘খ’ লয়
স্বাধীনতা আনো কাজে,
লিজের ঢাকটো যেমনি বাজাবে
আমারও যেন বাজে!
স্বাধীনতা মানে সোজা পথে চলা
বাঁকা পথে যেতে মানা,
সোজা পথে তুমি দেখো সোবাইকে
তবেই তো হবে জানা!
এটো সার কথা, তুমি দেবে কিছু
আমি দোব কিছু আর,
তবেই তো হবে জানাজানি সবে
হবে স্বাধীনতা ধার।
স্বাধীনতা হল ওপরে ওঠার
সভ্যতার এক সিঁড়ি,
আলগা বসলে বেথা লাগে গায়ে
তাইতো পাছায় পিঁড়ি!
স্বাধীনতা হল ভোজের মতন
এক সাথে ঘেঁসে বসা
একা খেলে মজা লাগে নাকি যদি
নাই থাকে ভালবাসা।
স্বাধীনতা কখুনো এটো বলে না
অপরকে পায়ে দলো,
স্বাধীনতা বলে আমি সাথে আছি
পাশে,পিছে তুমি চলো।
সকলেই ভাবো কিসে ভাল হবে
কীভাবে এগুবে দ্যাশ,
দ্যাশের ভালটো করতে যেলেই
দেখতে হবে তো শ্যাষ!
তা তো হছে নাকো, হাতে লিয়ে শুদু
লিজের লিজের ঝাণ্ডা,
হাতের পতকাটো উল্টিয়ে লিয়ে
মারছে পাছায় ডাণ্ডা।
কেউ ভাবেনা আমরাও মানুষ
গরু তো আমরা লই,
তবু কেনে ভেদ, করছ পভেদ
মোর স্বাধীনতা কই?
<>