যন্ত্রণা রাত বাড়িয়ে দু-হাত মন্ত্র ছিল বুকে
একটা কিশোর কেঁদেছিল দেশ-জননীর দুখে।
শত্রু যখন শক্তিশালী বুক-কাঁপানো হিয়ে
পরাণ-পাখি বললো হাঁকি আমারে যাও নিয়ে।

দমকা হাওয়ার পাগলা হাতি রাত্রি জাগে কেউ
চিত্ত যেথায় রিক্ত নহে নিত্য ওঠে ঢেউ।
চক্ষে বারি লক্ষ্যে সে ধীর বদলে দেবে দিন
ভক্ত মায়ের রক্ত জবায় মিটিয়ে দেবে ঋণ।

দিন-দুখিনীর ঋণ মেটাতে মত্ত নদীর কুল
সাজিয়ে রাখিস যত্ন করে ফাঁসির মঞ্চে ফুল।
বলির ঢাকে ঐ যে ডাকে প্রদীপ নেভার পালা
সোনার থালায় সাজিয়ে রাখা মরণ-বরণডালা।

মনের কোনে শনের দড়ি বুকের ভেতর বোমা
বর্ষা-দুপুর বাজায় নূপুর নে কোলে তোর ও'মা।
দুকুল ভাসে বানের জলে অঞ্জলি তুই নে মা
শুকিয়ে গেছে প্রসাদি ফুল এবার বিদায় দে মা।

আজকে যারা বাঁধন-হারা ভোগের থালায় সুখ
লাভ কি বলো খবর রেখে কার ফেটেছে বুক!
শুকনো পাখার বেদন-মাখা ছেলে হারানো মা টি
আগলে রাখে আঁচলে তার শহীদ বেদীর মাটি।

নিত্য হাসে বিত্ত পাশে তোমার শহর গ্রাম
মা'র বিছানায় শুয়ে কেবল শহীদ ক্ষুদিরাম।
তোমার ছেলে থাকবে সুখে দিব্যি হেসেখেলে
ক্ষুদিরাম তো হবে কেবল পাশের বাড়ির ছেলে।