প্রতিদিনের চেয়ে—
আজকের সকালের সূর্যটা
এ পাড়া ও পাড়া করে
পালিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছিল
তার সাথে সাথে বাবা তার ছেলেকে
দরজার মধ্যে রেখে
সেই পাড়ায় পাড়ায় জলসার আসরে
ঘুরতে ঘুরতে দুপুরটাকে রেখে
ছেলেটার কথা ভুলে গিয়েছিল
ছেলেটা নিশ্চয় খিদের অভাবে
মেঝেতে পড়ে পড়ে কাঁদছে
বাবার সে কথা মনে নেই
মনে এলে জলসা ঘর থেকে
ছুটে যেতে পারতো।
বোকা ছেলে!
কি করে বুঝবে—
তার চোখের কুয়োর জল তোলা
মেঝেতে ডুবে গেছে
কান্না নয়—
— যন্ত্রণা!
বোকা ছেলে!
বাবার জন্য দুপুর ভেঙে
বিকেলেও পলকহীন ভাবে তাকিয়ে আছে
কখন এই পাড়ায় ফিরে আসা সূর্যের সাথে
বাবাকে জড়িয়ে ধরবে।
অসহায় ছেলে
তাকিয়ে থাকে পেটে খিধে নিয়ে
তাকিয়ে থাকে চোখে জল নিয়ে
তবুও বাবার ভাবনায় আসেনি
বাবা বিকেলে পাকা কমলালেবুর মতো
সূর্যের গায়ে হেলান দিয়ে
জলসায় মেতে থাকে
তাকে ঘিরে কত মানুষের উন্মাদনা
তাকে ঘিরে কত স্বার্থের মাখামাখি
শুধু মনকে ভুলিয়ে রাখার জন্য
জলসায় সন্ধ্যা এনে দেয়
উপেক্ষিত ছেলে!
সন্ধ্যা এলে সারা শরীরে
তার আগুন হয়ে ওঠে
স্পষ্ট দেখতে পায়
তার বাবাকে কারা যেনে
অন্ধকারে মিশিয়ে দিচ্ছে
হাত,পা বেঁধে ভাসিয়ে দিচ্ছে
তার সর্বস্ব নিয়ে—
হঠাৎ বাবা যেন কিছু বলতে চায়
ততক্ষণে ছেলের কথা বলতে গেলেও
রাত্রির সমুদ্রে বাবা ও ছেলে হারিয়ে যায়।