সভ্যতার অন্তরালে
জীবন জলের ভেতর, প্রামাণ্য দলিল খুঁজতে বেড়িয়েছি।  
বুকের বালি খুঁড়তে খুঁড়তে
যে জল পেলাম, সেখানে দেখলাম সবুজ বাংলাদেশ।
পায়ের তলায় অপার্থিব কাদা,
ভেসে থাকা জলে বাঁশ পাতা আর ক্ষুদে পানা
জীবনের গল্প লিখে রেখেছে,
পাণ্ডুলিপির মত মসৃণ দহন কাল।

কোন এক সন্ধ্যে বেলায়
নর্মদার পানে চেয়ে দেখি
তিরতির করে বইছে জল  
সারাদিনের কোলাহল উপেক্ষা করে
অবশেষে সময় ভোগের পালা এলো বলে।

অতীতের নীল ভালোবাসা- বড্ড বেমানান  
প্রকৃতির সংস্পর্শে হয়ে গেল রঙিন- নস্টালজিক
অদম্য প্রাণে
চিৎকার করে উঠে বললাম, -এখনো যুদ্ধ শেষ হয়ে যায়নি হে জীবন হ্যাঁ হ্যাঁ।  

স্মৃতি, মেয়েটি আমায় নক্ষত্র বলেই ডাকতো
সময় ভাগাভাগি হয়ে যাবার পর
চাঁদের গিরিখাতে জ্যোৎস্নার আলো হারিয়েছি ঠিকই
সুশোভন পলকে ভেবে মরি- সেকি! আঠারো বছরের “তুমি“
কানে বাজা সেম্ফনিতে
মাটির দিকে মুখ করে
সান্ত্বনার বাণী দিলেম নিজেকে, বললেম - পুরোনো কথা আর ভেবো না। ছুটি নাও।

ছুটি! সে আবার কি জিনিস?
মায়ের কোলে বেড়ে ওঠা বয়স থেকে শুরু করে
গ্যালিলিও গ্যালিলির হাত পাকা দাড়ি হলেও,  
ছুটি বলতে কোন শব্দ নেই নির্গত নিঃশ্বাসে।
তা না হলে, ভিঞ্চির আঁকা মোনালিসা
কেন মুচকিহাসি দিয়ে আমাকে ডাকবে ল্যুভর মিউজিয়ামে?
তাই বলছি, ভোরের আলো নিভে গেলেই ছুটি।  

এখনো কালো মেঘ দেখলে
বলে দিতে পারি সেখানে কতটুকু জল জমা আছে।  
কতটা গভীরে যেতে পারে
তার গর্জন এর সুর।  
গুটি পায়ে হেঁটে আসা পথে
ফেলে আসা স্মৃতি আমাকে তাই শিখিয়েছে,
মিছে কলঙ্কের সাধু বার্তা
আমার কাছে উত্তপ্ত উনুনে জ্বলন্ত আগুন।

মায়ের কপালে স্যাঁতসেঁতে দরিদ্র দেয়াল আর বাবার রঙীন ফুলদানি
একি ফ্রেমে বাঁধাই করে রেখেছি আমার চুনকাম করা ফ্ল্যাট ঘরে।
আমার মেয়ে, ছোট ছোট আঙ্গুল দিয়ে কি যে এঁকেছে তা সেই জানে
আমার বেশ ভাল লাগে, ঠিক যেন মধুকূপী ঘাসের পরে মাথা রেখে- আকাশ দেখা।  

যদি পারো পথভোলা ডাকে চিঠি দিও
জানতো- অপ্রত্যাশিত চিঠিতে এক অনন্য ভালোলাগা লুকিয়ে থাকে
তাকে ধরা যায় না।