চোখ জালা করে রক্ত ঝরে পড়ে রাতের মধ্যপ্রহরে,
কেমন করে কাঁদব বলো সখা,তুমি কতো ব্যবধানে,
ব্যস্ত সংসারে আলগা আমি নীল সিন্ধু পাখির মতো কেঁপে উঠি অচেতনে,
সাদা চুলের ফাঁকে ইন্দ্রমেঘের ষাটটি বছর গেলো উড়ে বিনা বর্ষণে|
চিনে মাটির ছায়া নগরে কাটছে গো ধ্যান মগ্ন অন্তরে,
সেই একটি বিকেলের পরে|
শুনেছি,সখা সেই বিকেলে তুমি কৃষ্ণচূড়া পাপড়ি তলে,
রক্তের ক্যানভাসে পথজুড়ে বাংলা সুরে ভালোবাসি লিখবে বলে,
স্বপ্ন ঘুমের পদ্ম নীড়ে গেলে চলে আকাশ বীণার তরঙ্গে,
আর আমি সময়ের ঘর্ষণে থেতলে আছি ধূসর রঙে|
সবাই বলে তুমি শহীদ হয়েছে প্রিয়ে রক্তজবা বুলেটের আঘাতে,
যদি পারতাম লীলা চঞ্চল ললাটে আধখানা বুলেট
আমার বুকেও নিতে!
হয়তো ভিজে সন্ধ্যার ঠোঁটে চমক জোছনার বাহুতে
থাকতাম তোমার স্নানে,
বিজয়ী স্বরলিপির পরিচয়ে নীল অরণ্যে
চষে বেড়াতাম নিত্য লগ্নে|
সেই একুশের বিকেলের পরে,
নিষ্টুর দীনতা লয়ে শিথিল ফাগুন মুচড়ে পড়ে!
জানি জানবে না কেউ আশ্রিত হৃদয়ের প্রশ্রয়ে আছো তুমি,
কৃষ্ণ তিথির মালতী শাখায় তোমার নামটি নড়ে,
আসমানী শাড়ীটি আজও পরে দেখি গন্ধ শুকি,
চাঁদ উঠলে সপ্তমী!
ঝাউবীথির দুলুনিতে চশমা চোখে আজও পড়ে ফেলি,
প্রশ্নবিহীন তোমার উত্তরের স্পর্শ মাখা চিঠি সকলি|
সেই বিকেলের পরে,
জন্ম থেকে মৃত্যু দুয়ারে সজাগ অথবা তন্দ্রাভারে,
অপেক্ষায় থাকি সখা অধরা তোমারে ছুঁয়ে দিতে নিবিড়ে|
~~~বাংলা আমার ভাষা~~~