পল্লী মেয়ে পল্লী মেয়ে নামটি যে তার রাধা
কুলতোলিতে গ্রাম যে তার বলি তারি কথা ।
বেশতো ছিল ভালই সে বাবা মায়ের সাথে ।
বাবা ছিল ফেরিওয়ালা লোকাল ট্রেনেতে ।
নাইবা ছিল মণ্ডামিঠাই, নাইবা দামি পোশাক ,
তবুও ছিলো সুখ-শান্তি কুঁড়ে ভরে বাস ।
এক দিন মা যে মলো তখন বছর ষোল ।
পল্লী মেয়ে পল্লী মেয়ে এখন কিবা হবে
সাঁজআকাশে আবীর রঙে সন্ধ্যা প্রদীপ হবে ।
সংসারের পড়লো বোঝা তারি কঁদের পরে ।
সাঙ্গ হলো পড়াশোনা আর এক্কাদোক্কা খেলা ।
পল্লী মেয়ে পল্লী মেয়ে এখন কোথায় যাও
পিসি শুধায় এখন একটু সেলাই শিখে যা,
নেইতো পিসি সময় যে নেই একটু দাঁড়াবার
ঘরে নেইকো চালের দানা মুদির কাছে ধার ।
বাবা ফেরে রাতের বেলায় দেখে মেয়ে রান্না ঘরে
ছিন্ন বস্ত্র লুটায় মাটির পরে চোখের কোণে জল ।
বাবা জিগায় তারে কি হয়েছে বলরে মা -
মেয়ে শুধায় মুদির কাছে জমেছে অনেক দেনা ,
আজ চাল আনতে গিয়ে শ্যামলা মুদি আঁচল টানে ।
রুক্ষমুখে,পক্ক কেশে তাকায় বাবা উদাস হয়ে আকাশ পানে চেয়ে ।
চাঁদের আলো গেছে ঘুচে পূ্র্ণিমার এই রাতে ।
সকাল হলেই চিন্তা জাগে এখন কিবা হবে
বাস্তুজমি গেছে বন্দকে মোরলের কাছে রমলার চিকিৎসাতে ।
বুড়োর দুচোখ দিয়ে বহে অশ্রু শিশির ধরা ঘাসে ।
এমনি করে দিন কাটে যে মদন ফেরিওয়ালার
সকাল হতেই ঘানি টানতে অন্ন দুবেলার ।
বিকাল হতে হঠাৎ খবর আসে বাবা পড়েছে রেলে কাটা ।
মাথার ওপর ছাউনিটা হঠাৎ যায় সরে,
শঙ্খচিলে খুবলে খায় শালিক ছানা
নিম গাছের ঐ মগ ডালেতে বসে ।
পল্লী মেয়ে এখন তুমি একা,
বুকের কাপড় সরিয়ে তুমি বেচবে ইজ্দটা
লোলুপ শেয়াল তাকিয়ে আছে বুকের খাঁজে ।
শ্যামলা মুদি অনেক আছে খবর কেবা রাখে ।
সারা রাএি ভাবে এসব নয়ন নাহি মোদে ।
অশ্রুসজল নয়ন দুটি থাকে মায়র ফটোর পানে চেয়ে ।
ভোর হতেই মেনকা পিসি আসে রাধার কাছে ।
শান্তনা দিয়ে কাছে টানে বুকের মাঝে, ভয় নেই
আমি আছি করবি কাজ অবৈতনিক ইস্কুলেতে ।
পিসির কথা শুনে আলোক রেখা ধরে ।
বলেই ফেলে আবার শরু করবো লেখা পড়া আর খেলা ।
এখন সে পাড়ার অবৈতনিক ইস্কুলের রান্নার দিদিমোনি ।
পল্লীমেয়ে পল্লীমেয়ে এবার উচ্চ কর শির,
আলপনা দিয়ে সাজিয়ে তলো এই বাংলা মায়ের ঘর ।