বিনিদ্র রাত, অগ্নিদগ্ধ বেহালা!
শুনেছি সুরের কোনো ভাষা নেই,
কুকুরের কাঁন্নার মতন অস্ফূট!
বেহাগের করুণ সুর!
তবু কেনো যেন মনে হয়-বন্ধু সেলিমের উন্মুক্ত হৃদয় ইনট্রতে রাখা,
শেক্সপিয়রের বহুঝংকারময় একটা  জটিল বাক্যের কথা-
...সুখী ভাবি,প্রত্যাশা করি না ...

একবার সময় হলে দেখে নিও; কতটা কাঁন্না মিশে আছে,
ঠিক যেন কোকিলের নিদারুণ কাঁন্নার মতন!
প্রখর অমাবশ্যা, বেদনার্ত দুটি চোখ,
এই বুঝি বজ্রপাত নেমে আসলো!

কোচিং মাস্টারের জীবন; নেই সরকারি দামী পদ, ব্যাংক-ব্যালেন্স
কিংবা কোনো সুন্দরী নারীর লোভ!
কবিতার সাথে সারারাত সহবাস করতে করতে-
আমি আজ বড় ক্লান্ত; তবুও বেশ আছি বন্ধু!

অফিস থেকে ফিরে এসে কি বলবি না-কিরে দুপুরে খেয়েছিস?
ফেইসবুক লাইভে এসে কি আবার গানের আড্ডা বসাবি না?
অসংখ্য কমেন্টের ভীড়ে সুমির কমেন্ট পড়বি না-শিল্পীটা কে?
আমিতো এককালে শিল্পীই হতে চেয়েছিলাম বন্ধু,
তারপর জজ, ব্যারিস্টার, উকিল-মোক্তার, আরো কত কি...
শেষমেষ কী হলো দেখ-কিছুই হতে পারি নি।
তবুও  বেশ আছি বন্ধু!

একবার সময় পেলে দেখে যাস বন্ধু;
আমিও যে নিজেকে বড্ড সুখী ভাবি, বড্ড সুখী!
বিশ্বাস কর বন্ধু, আমিও যে আজ কারো কাছে প্রত্যাশা করি না;
বস্তির জীবন, অগ্নিঝরা টিন, ছোট একটা ঘর!
স্ত্রী-পুত্র নিয়ে গাদাগাদি, ভালোই কেটে যাচ্ছে সময়...
নোংরা পঁচা কুকুর, ইঁদুর, বিড়াল, মাছি সবাইকে ভাবি আপন।
রক্তাক্ত প্যাড, দামী কনডমের খোসা, টাটকা পোলাও-কোর্মা;
সবই পড়ে থাকে এখানে;
ঐ তো পাঁচ তলা, দশ তলা বিল্ডিংয়ের নিচে;
বেশ আছি বন্ধু!

মহাদেব সাহার মত কেনো জানি আমারও মনে হয়-
এক কোটি বছর হয় তোমাকে দেখি না,
পার্থক্যটা বোধহয় শুধু লিঙ্গের; লিঙ্গ পরিবর্তনের!
কেমন আছিস বন্ধু তোর দুনিয়ার আয়ানকে নিয়ে?
আর তোর মা; ঐ যে একবার দেখা হলো রাজশাহীতে!
আচ্ছা বন্ধু, বেইলী রোডে আজ কি আড্ডা দিবি না?
বারবার মনসুরটা ফোনে জ্বালাচ্ছে, কখন যাবি বল্?

মিজুর কি জানি শান্টারপোত শান্টারপোত মিষ্টি শব্দটা শুনবি না?
দেখবি না আতিকের সেই নির্ভেজাল হাসিটা ?
নাকি যাবি না; তোর পকেট ফাঁকা হবে বলে;
কখন যাবি বন্ধু? আমার কথা বলছিস?
এইতো আমি রাস্তায়, আসছি...
আচ্ছা বন্ধু, আমাদের ইউসুফটা কি ওখানে আজ আসবে না?
কি বললি! না ফেরার দেশ; সেটা আবার কিরে?
বোধহয় তুই কাব্যিক ঝংকার তুলছিস...
পাজি মনসুরটার মতন-তিন বছর হয়ে গেল ইউসুফ নেই!
কত স্মৃতি, কত কথা, কত বন্ধুত্ব, কত খুনসুটি...!