নারী-পুরুষের যৌন-কামনা, জোঁয়ার-ভাটা,মাংসের স্বাদ,
যৌবনের দুরন্ত স্রোত, বাথরুমের চিত্রকল্প কিংবা
দুটি সাংঘাতিক আগ্রাসী মনের প্রতিস্থাপন বিক্রিয়া ঘটলেই-
কবিতা অশ্লীল হয়ে যায় না; বাজেয়াপ্ত করা যায় না!
কারণ কবির শক্তি যে অনেক...
জারণ-বিজারণের খেলা সবাই বোঝে; কার্বনের বহুমুখী রূপ!
আহ! কী সুন্দর রূপ, রং, রস, বর্ণ, গন্ধ আর স্বাদ...
এতদিন কোথায় ছিলে -'সোনা’
বোধহয় পৃথিবীর সবচেয়ে বেশিবার উচ্চারিত শব্দ!
ঠিক যেন-’না’ শব্দের মতন ভীষণ কামুক, বড্ড বেশি...
কেমন জানি, অবুঝ দুটি শিশুর মতন!
কোন আকাশে; কোন ঠিকানায়?
নিষিদ্ধ পল্লীতে কত খুঁজেছি তোমায়!
কী হলো; বলো না...
আচ্ছা ধ্বনির পরিবর্তনও কী ভুলে গেলে?
বিগ ব্যাং -কিংবা ডারউইনের থিউরির মতন;
কুকুরের সঙ্গমের মত জমাটবাঁধা নিঃশব্দ চিৎকার!
যেখানে প্রিন্সিপিয়া এথিকা কিংবা ব্যাকরণ লাগে না;
প্রয়োজন পড়ে না হান্টিংটনের থিসিস...
বিশ্বাস করো- আজও তোমার কল্পনায় বিভোর;
অনাদিকাল যদি পেতাম এভাবে; ভেঙ্গেচুরে!
জানো তৃষ্ণা, মাধ্যমিকের অবেলা-অসময়ে-
সে কী যে তৃষ্ণা! স্পষ্ট মনে আছে আমার।
কোনো এক সন্ধ্যারাতে, কামাতুর স্বরে বলেছিলে-
‘তোমাকে দিয়ে কিচ্ছু হবে না!’
কাপড়ের উপর দিয়ে কি কাব্য লেখা যায়?
বিশ্বাস করো-তারপর থেকেই -
শরীরের রক্তকে কলমের কালিতে রূপান্তর করতে শিখেছি!
কলেজের সময়টাও ছিল ভীষণ বিদঘুটে!
তারপর থেকেই বলতে শিখেছি-
‘পৃথিবীতে সময় সবচেয়ে বড় বেঈমান।’
কিছু বুঝে না উঠতেই আগুন লাগলো হস্তরেখায়, কপালে,
মসজিদ, মন্দির, প্যাগোডা কিংবা গির্জায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সময়টাতে হিসাবের খাতা খুলেই দেখি নি;
শুধু চেয়ে চেয়ে দেখেছি আগামীর ভবিষ্যত; বুকে পাথর চাঁপা দিয়ে...
কবির শক্তি যে অনেক!
পুরুষের সুঠাম দেহ, লোমশ বক্ষ, স্বেচ্ছাচারী লৌহকঠিন বাহুযুগল,
কিংবা দুরন্ত বেগে কালো ঘোড়া ছুঁটে চললেই-
কবিতা নষ্ট হয়ে যায় না; বাজেয়াপ্ত করা যায় না!
কারণ কবির শক্তি যে অনেক...!
কাজের মেয়ে, দৌলতদিয়ার বেশ্যা, হিন্দু, বৌদ্ধ-
কিংবা খ্রিস্টানকে ঘরে তুললেই -
কবিতা অপবিত্র হয়ে যায় না; বাজেয়াপ্ত করা যায় না!
পল্টন, শাহবাগ কিংবা রেসকোর্স ময়দানে হাত উঁচু করে দাঁড়ালেই-
আর কবি হওয়া যায় না; কবির শক্তি যে অনেক!
নারীর স্তন, চোখ, ঠোঁট, উরুর ভাঁজ, খোলা চুলের গন্ধ!
কিংবা নিতম্বের সর্বনাশী উত্তাল ঢেঁউ উঠলেই-
কবিতা কুৎসিত হয়ে যায় না; বাজেয়াপ্ত করা যায় না!
কতবার ভেবেছি-অ্যাসিড-ক্ষারের বিক্রিয়া ঘটাবো,
আফ্রিকার জঙ্গলে, বাংলাদেশের কক্সবাজারে বসে!
কনডমের দোকান বসাবো তাজমহলের পাশে; শাহবাগে বসে!
কারণ কবির শক্তি যে অনেক!
সবাই এখনও ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, কলেজের প্রফেসর খোঁজে...
যেন পৃথিবীর সব সুখ তাঁরা দিতে পারে; বাদ দাও নাটক,
আমি বাদই দিয়েছিলাম আর নিরেট মূর্খের মতন বলেছিলাম -
আচ্ছা তুমি কী এখনো আমার পুরনো চিঠিগুলো খুলে দেখ?
নীরবে চোখের জল ফেলো, একাকী কোনো অমাবশ্যার রাতে...
নাকি ফেইসবুক-টুইটার, হোয়াটস-আপ কিংবা ইউটিউব নিয়ে -
পড়ে থাকো-ভার্চুয়াল জগতে ;অবিশ্রান্ত নিভৃতে!
এখনো কি ভাবো, আমার চাকরির বয়স কবে শেষ হবে?
বিয়ে করলে তারপর কি খাওয়াবে ? এটা, ওটা, সেটা, কী হলো?
কিছু বলছো না কেনো? বলো...
যাও কী, সমুদ্রস্নানে, ঘনজঙ্গলে, পার্কে, লেকের স্বচ্ছ জলে;
সদ্য কেনা দামী ফ্ল্যাটে, কোমর দোলাবে বলে;
কেমন যেন অদৃশ্য -অদেখা আদিম ভঙ্গিতে!
তৃষ্ণা, তুমি হয়তো জানো না-কবির মন কতটা শক্তিশালী!
কবিরা মানবধর্মেই বিশ্বাসী,ডাক দিও না হয় একবার হঠাৎ!
ছুঁটে যাব অদৃশ্য -অনিয়মে দুরন্ত বাজী হয়ে...
তোমার ঐ নিষিদ্ধ অবাধ্য শরীরে; শোনাবো এক অবিনাশী গান;
দেখবে অগ্নিস্রোত; আনবো নতুন ভোর,একটা নতুন সূর্য !
কবির শক্তি যে অনেক বড়; অনেক...!