একটা কবিতা লেখার কথা ছিল;
কবি অধীর আগ্রহে বসে আছে...
ইস্পাতকঠিন মনোবল,
আজ কেনো জানি নড়বড়ে!
রচিত হবে না বুঝি অমর কবিতাখানি?
রেখাবন্ধনীরা আজ রদনী হয়ে গেছে;
দূরে দাঁড়িয়ে হাসছে, বিকট শব্দে!
এমনটায়তো হবার কথা ছিল বহুকালপূর্বে,
ব্রাকেটবন্দী জীবন!
অভিন্ন যন্ত্রণাগুলো রূপকথার বুড়ি হয়ে গেছে,
বসে আছে হাঁটুগেড়ে।
অস্থির চিত্ত; ভবিতব্যের কথা জানে বিধাতা।
আভাস মিলছে আত্মঘাতী গোলের,
আর চুরমার হওয়া স্বপ্নটার।
তাজ্জব হবার কিছু নেই!
এমনটায়তো হবার কথা ছিল বহুকালপূর্বে,
ব্রাকেটবন্দী জীবন!
অদৃশ্য রাঙা শুক্রবারের কথা আমি ভুলে গেছি,
ভুলে গেছি, বেদনার রং নাকি নীল!
অসম্ভব মনের জোরে।
ঔদাসীন্য, বিরতিহীন প্রতিবাদী ভূমিকা ...
আর আছে রাজনীতিবিমুখ বিদায়ঘন্টা।
দুর্গমপথ; কষ্টের নদীটা আজ ভয়ের চাদরে ঢাকা;
না পাওয়ার ভয়! আর বিবর্ণ স্মৃতিগুলো!
এমনটায়তো হবার কথা ছিল বহুকালপূর্বে,
ব্রাকেটবন্দী জীবন!
একটা কবিতা লেখার কথা ছিল;
কবি অধীর আগ্রহে বসে আছে...
নিজের কণ্ঠই কেনো জানি নিজের কাছে-
আজ অপরিচিত মনে হয়;
হয়তো ধার করে বললাম বন্ধু রুহুলের কথাটুকু,
দোষ কী তাতে?
প্রগতিশীল হওয়াটা চারটেখানি কথা নয়;
বুকের মধ্যে লালিত স্বপ্ন খুব যতেœ পুষে রেখেছি,
কেনো জানি; প্রতিনিয়ত শুনি ভাঙনের শব্দ!
মাঝে মাঝে মনে হয়; স্বপ্নটা একশো আশি ডিগ্রি উল্টে গেছে!
অকরুণ আঙুলের ছোঁয়ায়।
তীব্রতা আর ঝাঁজ নিয়ে কথা বলি না এখন;
বহুদর্শী হতে চাই নি কখনও,
অহমিকা, অকালবোধন,বিত্ত এতসব নেই আমার।
এমনটায়তো হবার কথা ছিল বহুকাল পূর্বে,
ব্র্যাকেটবন্দী জীবন!
অবিসংবাদী হতে চাই নি আমি,
প্রবল ইচ্ছেরা মরে গেছে;
গুমরে কাঁদে একাকী, প্রচণ্ড আবেগে!
তবুও বিজিগীষার ভাব।
সোজাসাপটা নির্জলা মিথ্যা বলি না আমি,
দাবানলের কথা বলবো না আজ,
অবিমৃষ্যকারীর মতো...
এক ধরনের নিলর্জ্জ হয়ে।
এমনটায়তো হবার কথা ছিল বহুকাল পূর্বে,
ব্র্যাকেটবন্দী জীবন!
অপ্রতিরোধ্য মুরারীপুর হয়তো ভুলে যাবে আমাকে,
অবিনশ্বর সৃষ্টি উল্লাসে...
তো কী হয়েছে?
ভালোবাসাতো আছে,
কোন অনন্যার কথা বলবো না এখানে,
দেবো না বর্ণনা স্বেচ্ছাচারী হয়ে; চরম স্বেচ্ছাচারী...
অবর্ণনীয় ভেজা চিকুরের কথা নাইবা বললাম এখানে,
বিভাবরীর কামিনী থাক না বাতায়নের সমীরণে,
দরকার নেই কাছে আসার;
এতটুকু ভালোবাসার।
অদ্রি, জয়ন্তীরা আজ দেদীপ্যমান,
ঠুনকো আবেগে বিভব নিনাদ,
তো কী হয়েছে? তুলসী গঙ্গার তটে বসে,
আবার গাব সেই গান...
বিটপীর বুকে লালিত উনপঞ্চাশ বায়ু দেখবো আমি,
কারো নয়; নিজেরটা;
একান্ত গভীর করে...!
একটা যুগ শুরু হয়ে গেছে,
ইংলিশ ডক্টরের যুগ হয়তো...
থাক না সেটা; পরে বলা যাবে ভিন্ন কোন কবিতায়।
এমনটায়তো হবার কথা ছিল বহুকালপূর্বে,
ব্রাকেটবন্দী জীবন!
কাকোদরের ছোবল মারতে আসি নি আমি,
মাত্র আদার ব্যাপারী!
অন্যপুষ্ট হতে চাই না আমি,
কারণ আমি যে অক্ষয়বট!
মেঘে মেঘে বেলা হয়েছে অনেক...
কালেভদ্রে অবশ্য গড্ডলিকা প্রবাহ-
কেমন জানি তুর্কিনাচন!
আকাশে তোলার দরকার নেই আমায়,
জানি লাভ হবে না কোনো!
এসেছি করাতের দাঁত হয়ে; তামার বিষ নিয়ে-
দৌবারিক সাজতে! আর ভিখারীর মত দাঁড়িয়ে থাকতে...
দামিনীর প্রবল ঝাপটায় হর্যগুলো আজ উদাসীন;
কেমন জানি অহি-নকুুল,
আর এই আমার কাষ্ট-হাসি...
গোধূলি, সায়াহ্ন, অপরাহ্ণের গল্প করবো না আজ;
হয়তো করবো আষাঢ়ের গল্প!
এমনটায়তো হবার কথা ছিল বহুকালপূর্বে,
ব্রাকেটবন্দী জীবন!
জানি ওরা ঘাঘু, পথিকৃৎ সন্দেহ নেই তাতে;
তাই বলে কী অন্তরটিপুনী এতটায় নির্দয়!
আজ না হয় অনিকেতন,
ঘরের মেঝেই আমার সম্বল,
অম্বরে ঢাকা আমার সমস্ত পৃথিবী!
স্বপ্নটা আজ নর্দমায়; কিছুটা আশ্রয় ভাগাড়ে,
জানি গোবরে সরোবর নই আমি; তস্কর প্রকৃতির।
তবুও তো আমি মানুষ,
অনিন্দ্য বলবো না আমি,
বলবো সেই এপিসোডের কথা...
এইতো সেদিন শুরু করেছিলাম,
আর বলবো কাঁচাঘুম ভেঙ্গে সপ্তমে চড়ার কথা,
জানি হস্তীমূর্খ, বুদ্ধির ঢেঁকি আমি!
এমনটায়তো হবার কথা ছিল বহুকালপূর্বে,
ব্রাকেটবন্দী জীবন!
একটা কবিতা লেখার কথা ছিল;
কবি অধীর আগ্রহে বসে আছে...
রচিত হবে না বুঝি অমর কবিতাখানি?
হয়তো চাঁপা পড়ে থাকবে-
রজনীর কালো আঁধারে লুকিয়ে থাকা কাঁন্নার শব্দের মতন;
হৃদয়ের গহীনে আঁকা স্বপ্ন!
এমনটায়তো হবার কথা ছিল বহুকালপূর্বে,
ব্রাকেটবন্দী জীবন!