লাবণ্য, তুমি চলে গেছো; তো কি হয়েছে?
আমার আছে দুরন্ত চর্যাপদ;
বৌদ্ধ সহজিয়াদের সাধন-ভজন।
শ্রীকৃষ্ণকীর্তনের মতন দুর্দান্ত প্রেমলীলা!
নজরুলের অবাক করা কবিতা
‘বিদ্রোহী’ কবিতা।
আর আছে ,রবী ঠাকুরের নির্ঝরের স্বপ্নভঙ্গ।’
ব্যর্থ প্রেমের কবিতা আর লিখবো না, লাবণ্য।
আমিও ব্যর্থ প্রেমিক হতেই চেয়েছিলাম;
কী নেই আমার?
ফরাসি বিপ্লবের মতন পুঁজিবাদী একটা মন;
রুশ বিপ্লবের মতন সমাজতান্ত্রিক মতবাদ;
আর মিশ্র অর্থনীতির দাপট;
সবই আছে আমার; সব...!
লাবণ্য, তুমি চলে গেছো; তো কি হয়েছে?
আছে বিগ ব্যাং-এর মত দুর্বার শক্তি!
কতবার বলবো- কবির শক্তি যে অনেক!
ডকট্রিন অব প্লেজার, ইফিকেইসি,
কম্প্লিট জাস্টিস,
বেইসিক স্ট্রাকচার, সব; সবকিছু...
এই যে দেখো- আল কুরআন,
হাদিস, ইজমা, কিয়াস,
ভগবতগীতা, ত্রিপিটক,বাইবেল, শ্রুতি, স্মৃতি, ওল্ড টেস্টামেন,
যাজ্ঞবল্ক, জীমূতবাহনের দুর্দান্ত সব ভাবনা।
‘ধর্ম যার যার উৎসব সবার।’
আইনের বহুত্ববাদ তুমি দেখনি , লাবণ্য।
তুমি শুধু অর্থ-প্রতিপত্তি,বাড়ি,
গাড়িই দেখলে , লাবণ্য;
মানুষ চিনলে না!
আর আমি শুধু চিৎকার করে সন্ন্যাসী হলাম; বিগ ব্যাং নামের সন্ন্যাসী!
জাতি মানুষ চিনলো না!
ধ্বনির পরিবর্তন নিয়ে আজ আর কবিতা লিখবো না , লাবণ্য।
ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোডতো দূরের কথা!
বিষমীভবন, বিপ্রকর্ষ নাকি সেটা সম্প্রকর্ষ?
ইৎ, টি, উপধা- তুমি কী করে বুঝবে বলো?
স্পর্শ বলে, ইসেম, ফেল, হরফ শেখাও আমায়, তাই না?
পৃথিবীর গতি ফ্যাদোমিটার দিয়ে মাপতে শেখাও আমায়।
মহাকর্ষ-অভিকর্ষ আমিও বুঝি, লাবণ্য!
ভেক্টর- স্কেলারের ইলেট্রন বিন্যাস;
নিজেই নিজের সমীকরণ সাজাই,
পড়ন্ত বস্তুর সূত্র ভেবে;
দস্যুতা - ডাকাতির সমীকরণ!
আমার আছে- বুনসেন বার্নার, পাউলির বর্জননীতি,
আর লুকা প্যাসিওলির দুর্দান্ত সমীকরণ-
এ ইখুয়াল ঠু এল প্লাস ঔই।
কী চমৎকার না!
জারক-বিজারকের মত আমি ছুটে চলি...
ল্যাটিস শক্তির মতন!
জানো ,আমার এখন আর হাসি পায় না,
লাফিং গ্যাসেও কাজ হয় না!
কত ধ্রুবকের সাথে যে আমার সখ্যতা ,তা কী করে বুঝাবো, লাবণ্য।
জানি,তোমার সাথে রসায়নটা -
জমে নি ভালো; জীবন-যৌবনের রসায়ন!
রোমান সাম্রাজ্য,অটোমান সাম্রাজ্যের মতন।
তাই বলে এটা ভেবো না,
কাপলিং বিক্রিয়া ভুলে গেছি,হাইড্রো-কার্বনের কাপলিং বিক্রিয়া!
ডলোমাইট, পিরিডিন, ভারী পানির সংকেত;
উর্ডজ বিক্রিয়ার মতন রক্তে টান লাগা রসায়ন!
তুমি কী করে বুঝবে বলো,
আমার আছে অ্যাসিটোনের মতন রাসায়নিক জটিল সংকেত!
তুমি আজও বিবর্তনবাদে বিশ্বাসী;
কখনও জেনেটিক্স, প্রোট্রোপ্লাজম, রাইবোসোম নিয়ে ভাব না।
আমার আছে কোডনের মতন শক্তি;
কতবার বলবো - কবির শক্তি যে অনেক!
নিউক্লিয়াসের বাহিরে থেকেও আমি কবিতা লিখতে পারি।
কাইটিন, প্যারেনকাইমা, লিম্ফোসাইট নিয়ে ভাবতে পারি।
আমার আছে অদম্য দাপট, ইনসুলিনের শক্তিমান দাপট!
স্টার্চ, সেলুলোজ, টায়ালিন, পেপসিন;
আর এনজাইমের মতন শক্তি!
সব; সবকিছু...!
লাবণ্য, তুমি চলে গেছ; তো কী হয়েছে?
পিটুইটারি, অ্যান্টিবডি নিজেই
তৈরি করতে পারি!
সাইনুসাইটিস নিয়ে কাব্য লিখতে জানি!
আমার আছে ট্রুম্যান ডকট্রিন, স্ট্রিং থিউরির মতন অবাক করা শক্তি!
অতীত, বর্তমান, আর ভবিষ্যতের খেলায়...
সব; সব কিছু...
আমিও আসবো, লাবণ্য।
তোমার বুকের পাহাড়ে,
সাঁতরে বেড়াবো দুরন্তবেগে,
গভীর সমুদ্রের লোনা জলে
কবিতা লিখবো বলে,
নতুন একটা কবিতা, বৈচিত্র্যময় কবিতা।
তৈরি থেকো, লাবণ্য...!